ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ক্লাউড কম্পিউটিং খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ লক্ষ্যে ১২০ কোটি ইউরো (১৩০ কোটি ডলার) বিনিয়োগ করা হবে। খাতটিতে যুক্তরাষ্ট্রের একক আধিপত্য রোধ ও ইউরোপীয় উদ্ভাবনকে সামনে তুলে ধরতেই এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। খবর গিজচায়না।
ইউরোপীয় কমিশনের এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সদস্যভুক্ত দেশগুলোকে ক্লাউড কম্পিউটিং প্রকল্পে সরকারি পর্যায়ে আর্থিক সহায়তার বিষয়ে সবুজ সংকেত দেয়া হলো। প্রকল্পটি ইমপরট্যান্ট প্রজেক্ট অব কমন ইউরোপিয়ান ইন্টারেস্ট (আইপিসিইআই) নামে পরিচিত।
পরবর্তী প্রজন্মের ক্লাউড কম্পিউটিং অবকাঠামো ও পরিষেবার জন্য এ তহবিল বরাদ্দ করা হয়েছে। এ খাতে ইইউর এন্টারপ্রাইজ বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতেই এ অর্থ বিনিয়োগ করা হবে। বিনিয়োগ পরিকল্পনায় থাকা সাতটি দেশ হলো ফ্রান্স, জার্মানি, হাঙ্গেরি, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, পোল্যান্ড ও স্পেন।
ইইউর তালিকাভুক্ত অন্য দেশগুলোও এ তহবিল গঠনে সহায়তা করেছে। আইপিসিইআইতে ১৯টি ব্র্যান্ডের ১৯টি প্রকল্প রয়েছে। এসব কোম্পানি ইউরোপের প্রথম ও বিস্তৃত পরিসরে ইন্টারঅপারেবল মাল্টি-প্রোভাইডার ক্লাউড এজ কন্টিনিউমের উন্নয়নে সহায়তা করবে। ইউরোপীয় কমিশন বিবৃতিতে জানায়, দেশগুলো সম্মিলিতভাবে পাবলিক তহবিলে ১২০ কোটি ইউরো সহায়তা দেবে। এর মাধ্যমে খাতটিতে বেসরকারি বিনিয়োগ ১৪০ কোটি ইউরো ছাড়িয়ে যাবে।
ইইউর আইপিসিইআইর আরেকটি লক্ষ্য হলো গবেষণা, অর্থনৈতিক ও করপোরেট রিসোর্সকে এক করা। মূলত ইইউর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, প্রতিযোগিতার মনোভাব ও ডিজিটাল রূপান্তরকে তুলে ধরাই এর লক্ষ্য। ইইউ এর আগে আরো ছয়টি আইপিসিইআই প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে। এর মধ্যে ব্যাটারি, হাইড্রোজেন এনার্জি, মাইক্রোইলেকট্রনিকস ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মতো বিষয় রয়েছে। ইউরোপীয় ক্লাউড কম্পিউটিং প্রকল্পে বর্তমানে ১৯টি কোম্পানি অংশগ্রহণ করছে। কোম্পানিগুলো মধ্যে ফ্রান্সের অ্যাটোস অ্যান্ড অরেঞ্জ, ডয়েচে টেলিকম, টেলিকম ইতালিয়া ও টেলিফোনিকা রয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন দীর্ঘদিন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি সরবরাহকারীদের ওপর নির্ভরতা কমাতে এবং বিভিন্ন খাতে নিজস্ব উদ্ভাবনের প্রচারে কাজ করে যাচ্ছে। এসব খাতের মধ্যে ক্লাউড কম্পিউটিংও রয়েছে। ইউরোপীয় কমিশন এর আগেও বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য সরকারি সহায়তার অনুমোদন দিয়েছে। এর মধ্যে ক্লাউড ও এজ কম্পিউটিংয়ের জন্য ১২০ কোটি ডলার ভর্তুকির বিষয় রয়েছে। ফ্রান্স, জার্মানিসহ ইইউর অন্য সদস্যদেশগুলোকে এ সহায়তা দেয়া হবে।
ইইউর ক্লাউড কম্পিউটিং প্রকল্পে কয়েকটি বিষয় প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। প্রথমেই রয়েছে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি। প্রকল্পের মাধ্যমে ইইউর সদস্য দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করাই লক্ষ্য। দ্বিতীয় পর্যায়ে রয়েছে উদ্ভাবনে বিনিয়োগ। ক্লাউড কম্পিউটিং নিয়ে গবেষণা ও উন্নয়নে সরকারি এ তহবিল ব্যয় করা হবে। এর মাধ্যম নতুন ও উন্নত প্রযুক্তি গ্রহণ করা হবে।
তৃতীয় ধাপে, ক্লাউড কম্পিউটিং খাতের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নির্ভরশীলতা কমানো হবে। এর মাধ্যমে, নিজস্ব ক্লাউড কম্পিউটিং উদ্ভাবনগুলি বিশ্ববাজারে তুলে ধরা হবে। শেষ ধাপে, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সংস্থাগুলিকে সহায়তা করা হবে। প্রকল্পটির মাধ্যমে, এসব সংস্থাকে ক্লাউড কম্পিউটিং সম্পর্কে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ প্রদান করা হবে। বিশেষ করে, তহবিল প্রাপ্তি ও নতুন সমাধান তৈরিতে এটি ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post