বিদেশ ফেরত প্রবাসীদের টার্গেট করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকায় অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা বেড়েছে। এই চক্রের সদস্যরা সকাল-সন্ধ্যা বিমানবন্দর এলাকায় প্রবাসীদের কাছাকাছি গিয়ে তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে। এরপর তারা বিভিন্ন অজুহাতে তাদেরকে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাওয়ায়। দ্রব্যের প্রভাবে প্রবাসীরা অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাদের কাছ থেকে মূল্যবান মালামাল লুটে নেয়।
যাদের কাছে কম জিনিসপত্র থাকে তাদের টার্গেট করে এ চক্রটি। আমীর প্রবাসী সেজে এক যুগে অনেক প্রবাসীকে সর্বস্বান্ত করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে এ পর্যন্ত সে সাতবার গ্রেপ্তারও হয়েছে।
তদন্ত সূত্রে জানা যায়, আমীর বিমানবন্দরের দুই নম্বর গেটের পাশে একটি ফাস্টফুডের দোকান দিয়ে ব্যবসা করত। একপর্যায়ে কয়েকটি চক্রের সঙ্গে তার বন্ধুত্ত গড়ে ওঠে। সে প্রাথমিক পর্যায়ে একটি চক্রের সঙ্গে এক মাসেই পাঁচটি কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করে। এতে ১৫ হাজার টাকা পায় আমীর। এর পর থেকে কখনও একা আবার কখনও একজন সঙ্গী নিয়ে সে প্রতারণা করে আসছে।
সর্বশেষ গতকাল বুধবার ধরা পড়ার আগে ১৫ জুলাই বিমানবন্দরেই এক প্রবাসীকে অজ্ঞান করতে গিয়ে ধরা খায়। চার মাস পর কারাগার থেকে বেরিয়ে একই কাজে ফেরে সে। গত মঙ্গলবার এক সৌদি প্রবাসী চাঁদপুর যাবার পথে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব খোয়ান। এ ঘটনায় আমীরকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের মতিঝিল বিভাগের একটি টিম।
জানা যায়, মঙ্গলবার বিমান বন্দরের দুই নম্বর গেটের সামনে শিকারের অপেক্ষায় ছিল আমীর। এক প্রবাসীর কাছে কম জিনিসপত্র দেখে এগিয়ে যায় সে। ‘আমিও সৌদি থেকে আসছি, বাড়ি চাঁদপুর পরিবারের কেউ আসেনি, চলেন এক সঙ্গে যাই’ তাঁর সঙ্গে এমন অভিনয় করে আমীর। সেখান থেকে তারা দু’জন সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে আসেন।
বাস কাউন্টারে আমীর কৌশলে প্রবাসীকে ঘুমের বিস্কুট খাওয়ায়। এরপর বাসেই ঘুমিয়ে পড়েন প্রবাসী। তাঁর জিনিসপত্র নিয়ে বাস থেকে দাউদকান্দিতে নেমে যায় আমীর। মালপত্র নিয়ে সে ঢাকায় আসার পথে পুলিশের হাতে ধরা খায়।
জানা যায়, বরিশাল গৌরনদীর ডিমেরপাড় এলাকায় বাড়ি আমীর হোসেনের। তার বড় ছেলে সৌদি আরব থাকে। ছোট ছেলে এবার এইচএসসি পাস করেছে। একমাত্র মেয়ে ঢাকায় একটি কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তার প্রতারণার নেশায় সুখের পরিবারে অশান্তির ছায়া সরে না। তার পুত্রবধূও একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। আমীর পুরো পরিবার নিয়ে থাকে বাসাবো কালিবাড়ি এলাকায়।
ডিবি মতিঝিল বিভাগের সহকারী কমিশনার এরশাদ রহমান বলেন, এই চক্রের সদস্যদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশ প্রতিনিয়ত সতর্ক রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post