ইউরোপ যাওয়া কম বেশি সবারই স্বপ্ন থাকে। মধ্যপ্রাচ্যের প্রবাসীদের অধিকাংশ কাজ অনুযায়ী বেতন তেমন একটা সুবিধাজনক হয়না এবং অনেকে আটকে পড়েন ভিসা জটিলতায় ফলে তারা খুঁজতে থাকে নতুন কোন উন্নত দেশে যাওয়ার সুযোগ।
ইদানীং দেশের জাতীয় গণমাধ্যম গুলো ‘ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি দক্ষ শ্রমিকদের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা দিচ্ছেন’ এমন সংবাদ প্রচার করেন। আর এই সুযোগেই মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে নামি বেনামি ট্রাভেল এজেন্সি চক্র। বিশেষ করে কাতার, কুয়েত, আরব আমিরাত, সৌদি আরব ও ওমানে সব থেকে বেশি এসব ট্রাভেল এজেন্সির উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে সামজিক যেগাযোগ মাধ্যমে প্রবেশ করলেই নামি বেনামি ট্রাভেল এজেন্সির নানা রকম চটকদার বিজ্ঞাপন। মধ্যপ্রাচ্য থেকে বৈধ পথে ইউরোপ যাওয়ার সুযোগ রয়েছে আর এই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে কিছু অসাধু ট্রাভেল এজেন্সি। এছাড়াও দেখা যাচ্ছে বৈধ-অবৈধ পথে ইউরোপ পাড়ি দিয়েছেন এমন প্রবাসীও সেখানে গিয়ে বনে যাচ্ছেন নিজেই একটা এজেন্সি এবং নিজেই দিচ্ছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিজ্ঞাপন। এদের টার্গেট মূলত স্বল্প শিক্ষিত তরুণ। এসব প্রতারকদের প্রবাসীরা সরল মনে বিশ্বাস করে টাকা ও দিয়ে দিচ্ছেন অনেকে।
ফেইসবুক, টিকটক, ইউটিউবসহ নানা রকম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া বিজ্ঞাপনে বলা হয়ে থাকে তিন মাসের মধ্যে রোমানিয়া, মালটা, ক্রোসিয়া, ইতালিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার নিশ্চয়তা। অথচ বাস্তবতা অন্য কথা বলছে, অনেক প্রবাসী বছরের পর অপেক্ষা করেও মিলছে না স্বপ্নের ইউরোপ যাওয়ার কাঙ্ক্ষিত ভিসা। প্রলোভন দেখিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে প্রবাসীর লাখ লাখ টাকা। অনেকের আয়ের সর্বস্ব দিয়ে দিয়েছেন ইউরোপের ভিসার আসায়।
ট্রাভেল এজেন্সি গুলোতে ফাইল জমা দিলেই ফাঁদে পড়ে যাচ্ছেন প্রবাসীরা। ফাইল জমা দিতে দেড় লাখ থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত দিতে হয় এরপর কিছুদিন যেতে না যেতেই বলা হয় ওয়ার্ক পারমিট বের হবে প্রয়োজন আরো মোটা অঙ্কের টাকা আর এতেই আসল ফাঁদে আটকে পড়েন ইউরোপ যাওয়ার স্বপ্ন দেখা তরুণরা।
কয়েকজন ভুক্তভোগীর সাথে কথা বলে জানা যায়, অনেককে ওয়ার্ক পারমিট দিলেও এম্বাসিতে গিয়ে দেখা যায় ভূয়া কাগজ ধরিয়ে দিয়েছে প্রতারকরা। কাতার প্রবাসী আশরাফ উদ্দীন আকাশ (২৮) নামের এক যুবক জানায়, ছয় বছর প্রবাসে (কাতার) আছেন তিনি মোটা মুটি একটা ভালো মানের কাজ করছিলেন, ২বছর আগে ফেইসবুকে বিজ্ঞাপন দেখে ইচ্ছে হয় ইউরোপ যাওয়ার এবং তিনি একটি এজেন্সিতে ফাইল জমা দেন।
এম্বাসি ডেট নেওয়া এবং ওয়ার্ড পারমিটসহ বিভিন্ন অযুহাতে তার কাছ থেকে প্রায় ৬ লক্ষ টাকা হাতিয়েছে এজেন্সি। তিনি আরো বলেন, এরকম হাজার হাজার প্রবাসী ইউরোপ যাওয়ার স্বপ্নে নিজের সব আয়ের টাকা হারিয়ে এখন নিঃস্ব।
এসব প্রতারক চক্রের কাছ থেকে বাচার একমাত্র উপায় সচেতনতা। এদের সাথে টাকা লেনদেন করার আগে অবশ্য যাচাই বাচাই করতে হবে। যারা ইতোমধ্যে প্রতারণার শিকার হয়েছেন তারা অবশ্যই দুতাবাসে লিখিত অভিযোগ জানাতে পারেন।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post