সৌদি আরবে কর্মরত অবস্থায় নিহত নোয়াখালীর হানিফের মৃতদেহ ৫ মাস পর দেশে ফিরেছে। ব্র্যাক ও এপিবিএন-এর যৌথ উদ্যোগে রোববার (৩ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টায় বাংলাদেশ বিমানের (বিজি৩৪০) একটি ফ্লাইটে ঢাকায় অবতরণ করে হানিফের নিথর দেহ। সোমবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে বিমানবন্দর থেকে মরদেহ গ্রহণ করবে তার পরিবার।
৩৩ বছর বয়সী হানিফ নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার আব্দুল মোতালেবের ছেলে। রিক্রুটিং এজেন্সি অপশন ম্যানপাওয়ার ওভারাসিজ (আরএল ১৩৮৪) এর মাধ্যমে সৌদি আরবের আভা শহরে যান হানিফ। গত ১৬ জুন প্রতারণা ও নির্যাতনের শিকার হয়ে রিয়াদের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। তার মৃত্যুর পর সেখানে বসবাসকারী নিকটাত্মীয়রা মৃতদেহ দেশে আনার বিষয়ে দায়িত্ব নিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। ফলে লাশ দেশে ফিরিয়ে আনা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।
এরপর, ৩ জুলাই ‘রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে সৌদি গিয়ে নির্যাতনে যুবকের মৃত্যু, লাশ দেশে আনার আকুতি’ শিরোনামে খবর প্রচার হলে বিষয়টি বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ানের (এপিবিএন) নজরে আসে। নিউজের সূত্র ধরে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে ব্র্যাক। হানিফের পরিবার জানান, লাশ বিকেলে দেশে এলেও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ আজ সন্ধ্যায় তা সে খবর নিশ্চিত করেছে।
হানিফের স্ত্রী বলেন,
“পূর্বপ্রস্তুতি না থাকায় আগামীকাল সকালে বিমানবন্দর থেকে মরদেহ গ্রহণ করবেন তারা।”
হানিফের পরিবারের সদস্যরা আরও জানিয়েছে, পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করা হানিফ অভাবের তাড়নায় ছোটবেলা থেকে নির্মাণশ্রমিকের (রাজমিস্ত্রি) কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। চলতি বছরের ১২ মার্চ সৌদি আরবে যান তিনি।
তারা আরও বলেন, সৌদিতে যাওয়ার পর তাকে রাজমিস্ত্রির কাজ না দিয়ে আভা শহরে ভেড়া চরানোর চাকরি দেয়া হয়। যে মালিকের অধীন তাকে চাকরি দেয়া হয়েছিল ওই ব্যক্তি তাকে নানা ধরনের শারীরিক নির্যাতন করতো।
হানিফের রিক্রুটিং এজেন্সি তাকে রাজমিস্ত্রির কাজ দেওয়ার কথা বলেছিল। কিন্তু দেশটিতে যাওয়ার পর তাকে ভেড়া চরানোর কাজ দেওয়া হয়। সেখানে তার মালিক তাকে নানা ধরনের শারীরিক নির্যাতন করতো। হানিফ তার রিক্রুটিং এজেন্সিকে বিষয়টি জানানোর পর তারা যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post