আজ, শনিবার (২ ডিসেম্বর) সংযুক্ত আরব আমিরাতের স্বাধীনতার ৫২তম বার্ষিকী। এই দিনে, ১৯৭১ সালে, সাতটি আমিরাত একত্রিত হয়ে ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে, আমিরাতের সাতটি শহরকে অপরূপ সাজে সাজানো হয়েছে। রাজধানী আবুধাবিতে, বুর্জ খলিফার মতো বিখ্যাত ভবনগুলিকে আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে। দুবাইতে, বুর্জ আল আরব হোটেল এবং অন্যান্য দর্শনীয় স্থানগুলিকেও উৎসবের সাজে সাজানো হয়েছে।
এ উপলক্ষ্যে আমিরাতের সব জায়গায় গাড়ি পার্কিং ফ্রি, মোবাইল ডাটা ফ্রি, আবুধাবি ১০১৮, দুবাই ১২৪৯, শারজাহ ৪৭৫, আজমান ১৪৩, ফুজাইরাহ ১১৩, রাস আল খাইমাহ ৪৪২ জনসহ মোট ৩৪৪০ জন কয়েদিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
ওদিকে বাংলাদেশি আবুধাবি দূতাবাস ও দুবাই কনস্যুলেট বন্ধ, অনেক বিভাগে ট্রাফিক জরিমানা ছাড় দেওয়া হয়েছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাত মরুময় দেশ। স্বাধীনতা পরবর্তীতে মরহুম প্রেসিডেন্ট শেখ জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ানের নেতৃত্বে সড়ক যোগাযোগ অবকাঠামো ও মানব সম্পদ উন্নয়নে দেশটির অবস্থান অনেক উপরে চলে আসে।
১৯৫০-এর দশকে পেট্রোলিয়াম আবিষ্কারের আগ পর্যন্ত সংযুক্ত আরব আমিরাত মূলত ব্রিটিশ সরকারের অধীন কতগুলো অনুন্নত এলাকার সমষ্টি ছিল। খনিজ তেল শিল্পের বিকাশের সাথে সাথে এগুলির দ্রুত উন্নতি ও আধুনিকায়ন ঘটে, ফলে ১৯৭০-এর দশকের শুরুতে আমিরাতগুলো ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে আসতে সক্ষম হয়। দেশের খনিজ তেলের বেশির ভাগ আবুধাবিতে পাওয়া যায়, ফলে এটি সাতটি আমিরাতের মধ্যে সবচেয়ে ধনী ও শক্তিশালী। তেল শিল্পের কারণে এখানকার অর্থনীতি স্থিতিশীল এবং জীবনযাত্রার মান বিশ্বের সর্বোচ্চগুলোর একটি।
আমিরাতে রয়েছে অসংখ্য দৃষ্টিনন্দন ও আকাশচুম্বী ভবন। স্বাধীনতার পর খুব কম সময়ে আমিরাত বিশ্বের অন্যতম সুন্দর রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। মাত্র কয়েক দশকের মধ্যেই মরুভূমির বুকে বড় বড় দালান আর অট্টালিকায় স্বপ্নের রাজ্য হিসেবে গড়ে উঠে আমিরাত। বর্তমানে বিশ্বের প্রথম দশটি ধনী দেশের একটি সংযুক্ত আরব আমিরাত। আবুধাবি, দুবাই, শারজাহ, আজমান, ফুজাইরাহ, রাস আল খাইমাহ, উম্ম আল কোয়াইন-সহ আমিরাতের প্রধান প্রধান সড়কসহ শহরের সড়কগুলো জাতীয় পতাকার পাশাপাশি আলোকিত ফিফটি-টু লিখা শোভা বাড়াচ্ছে আজ।
মোটর র্যালি, বিমান মহড়া, ড্যান্সিং ঝরনা, আলোকসজ্জা, আতশবাজি, উঁচু ভবনে রং বেরঙের সাজ আর আলোর ঝলকানি। আমিরাত জুড়ে সাজানো হয়েছে নানা রঙের ব্যানার ফেস্টুন আর আলোর ঝলকানিতে দালানগুলি অপূর্ব লাগছে। স্কুল কলেজ, অফিস আদালত, সুপার ও হাইপার মার্কেট সেজেছে নানা সাজে।
দিবসটি উদযাপনের লক্ষ্যে আরবের অভিবাসীরা আমিরাতের শেখদের ছবি ও পতাকা দ্বারা নিজেদের গাড়ি সাজানো হয়েছে। আমিরাতের বিভাগীয় শহরের কর্ণেস পাড়ে গাড়ির প্রদর্শনী দেখানো হয়। আনন্দ ভাগাভাগি করার লক্ষ্যে ও আরব অভিবাসীদের উৎসাহ প্রদানের জন্য শহরের বিভিন্ন মহাসড়কে আমিরাতে অবস্থিত বিভিন্ন দেশের প্রবাসী-সহ আরবে অভিবাসী পর্যটকের ভিড় লক্ষণীয়।
এছাড়াও বড় বড় শপিং মলগুলোতে দিবসটি উপলক্ষ্যে উৎসবের আমেজ লক্ষণীয়। ভিন্ন তালিকায় ন্যাশনাল ডে ফ্যাশন শো সহ আরব সংস্কৃতি ঐতিহ্যের নানা রকম আয়োজনসহ পণ্য বিশেষে ছাড় রেখেছে এসব শপিং মল। এদিকে আবুধাবি, দুবাই, শারজাহ, আজমান, ফুজাইরাহ, রাস আল খাইমাহ ও উম্ম আল কোয়াইন শেখরা ৫২তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে স্থানীয় ও আমিরাতে অবস্থানরত সকল অভিবাসীদের অভিনন্দন এ উষ্ণ শুভেচ্ছা জানিয়েছে।
এবছর সরকারি ও বেসরকারি সকল কর্মচারীকে তিনদিনের ছুটি দেওয়া হয়েছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post