গাজায় এখন যুদ্ধবিরতি চললেও সাময়িক এই বিরতি শেষ হওয়ার পরপরই লড়াই নতুন করে শুরু হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যে আরও একটি যুদ্ধজাহাজ পাঠাচ্ছে যুক্তরাজ্য। এই যুদ্ধজাহাজটি উপসাগরে আগে থেকে মোতায়েন থাকা অন্য একটি যুদ্ধজাহাজের সঙ্গে যোগ দেবে। বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের সংঘাতে উত্তপ্ত গোটা মধ্যপ্রাচ্য। টানা দেড় মাসের সংঘাতে অবরুদ্ধ গাজায় প্রাণহানির সংখ্যা ১৫ হাজার ছাড়িয়েছে আগেই।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার প্রতিক্রিয়ায় উপসাগরে দ্বিতীয় যুদ্ধজাহাজ পাঠাতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য। এইচএমএস ডায়মন্ড নামের টাইপ ৪৫ ডেস্ট্রয়ার এই যুদ্ধজাহাজটি সেখানে আগে থেকে অবস্থান করা ফ্রিগেট এইচএমএস ল্যাঙ্কাস্টারের সঙ্গে যোগ দেবে।
ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্রান্ট শ্যাপস বলেছেন,
‘এই অঞ্চলে আমাদের উপস্থিতি জোরদার করার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ’।
এছাড়াও যুক্তরাজ্যের নেতৃত্বে একটি টাস্কফোর্স শিগগিরই ইংলিশ চ্যানেল থেকে বাল্টিক সাগরে টহল শুরু করবে। মূলত ইউরোপের সমুদ্রের তলদেশের থাকা গুরুত্বপূর্ণ তারগুলো রক্ষা করতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি।
বিবিসি বলছে, এইচএমএস ল্যাঙ্কাস্টার গত বছর থেকে উপসাগরে অবস্থান করছে। এটি সেখানে তিনটি রয়্যাল নেভি মাইনহান্টারের পাশাপাশি অবস্থান করছে। শ্যাপস বলেছেন, সেখানে একটি ডেস্ট্রয়ার যুক্ত করা হলে তা বিপজ্জনক সময়ে এই অঞ্চলে তাদের প্রতিরক্ষা আরও শক্তিশালী করবে।
শ্যাপস বলেন, ‘আরও অস্থিতিশীল এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ বিশ্ব থেকে ব্রিটেন এবং আমাদের স্বার্থকে নিরাপদ রাখতে এই অঞ্চলে যুক্তরাজ্য আমাদের উপস্থিতি জোরদার করছে এবং এটি গুরুত্বপূর্ণ।’ বিশেষ করে যুক্তরাজ্যের এই পদক্ষেপ ইরান এবং তার প্রক্সিদের কাছে স্পষ্ট বার্তা পাঠাবে বলেও দাবি করেন তিনি। গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনের পর ইতোমধ্যেই লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর পাশাপাশি ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের কাছ থেকে আক্রমণাত্মক প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে।
বিবিসি বলছে, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পরপরই যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চলে তার নৌবাহিনীর অবস্থান আরও বাড়িয়ে দেয়। সংঘাত শুরুর পর দেশটি সুয়েজের পূর্বে একটি মার্কিন রণতরী পাঠিয়েছে এবং সেইসাথে পূর্ব ভূমধ্যসাগরে দ্বিতীয় বিমানবাহী রণতরী মোতায়েন করেছে। এছাড়া লোহিত সাগরে অবস্থানরত একটি মার্কিন ডেস্ট্রয়ার ইতোমধ্যেই কয়েক দফায় ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের নিক্ষেপ করা ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন আটকে দিয়েছে। হুথিরা এই অঞ্চলে বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচলও নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে।
ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, এইচএমএস ডায়মন্ড সমুদ্রে জাহাজ চলাচলের স্বাধীনতা নিশ্চিত করবে। কারণ বাব-এল-মান্দেব প্রণালী দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৫০টি বড় বাণিজ্যিক জাহাজ যাতায়াত করে এবং এর দ্বিগুণ সংখ্যক জাহাজ হরমুজ প্রণালী দিয়ে যাতায়াত করে। এর আগে গাজায় সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার সপ্তাহখানেকের মধ্যে ইসরায়েলের কাছে পূর্ব ভূমধ্যসাগরে রাজকীয় নৌবাহিনীর জাহাজ মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছিল যুক্তরাজ্য। ‘নিরাপত্তা বাড়াতে’ এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে সেসময় জানিয়েছিল দেশটি।
গত অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহে, যুক্তরাজ্য পূর্ব ভূমধ্যসাগরে নিরাপত্তা জোরদার করার লক্ষ্যে রয়্যাল নেভির দুটি জাহাজ এবং একটি নজরদারি বিমান পাঠাবে বলে ঘোষণা করেছে। এটি মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে যুক্তরাজ্যের সামরিক উপস্থিতি বাড়ার অংশ।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post