ভারতের ইম্ফল বিমানবন্দরে একটি অজ্ঞাত উড়ন্ত বস্তু দেখা যাওয়ায় চলাচল ব্যাহত হয়। এ ঘটনায় তিনটি ফ্লাইট তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে রানওয়েতে বসে ছিল এবং দুটি আগত ফ্লাইট কলকাতা ও গুয়াহাটির দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলাররা রানওয়ে থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে একটি অজ্ঞাত উড়ন্ত বস্তু দেখার খবর দেন। এ খবর পেয়ে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে।
বিমান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়।। এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলাররা রানওয়ের কাছে একটি অজ্ঞাত উড়ন্ত বস্তু দেখা যাওয়ার খবর দেওয়ায় এ পরিস্থিতি তৈরি হয়। এনডিটিভি রবিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
একটি সূত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিমান বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে মণিপুরের রাজধানী ইম্ফলের ‘নিয়ন্ত্রিত আকাশসীমা’ এবং সব বিমান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিল।
এতে প্রায় এক হাজার যাত্রী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এনডিটিভিকে জানিয়েছেন, ভারতের বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ (এএআই) দেশটির বিমানবাহিনীকে (আইএএফ) আকাশসীমা নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তর করে। এরপর আইএএফ বাণিজ্যিক ফ্লাইট পরিচালনার জন্য আকাশসীমা পুনরুদ্ধারের সব নিশ্চয়তা দেয়।
বিমানবন্দরের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে বলেছেন, ‘মোটামুটি বড়’ বস্তুটিকে এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে উড়তে দেখা গেছে। সূত্র জানিয়েছে, এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) এবং মাটিতে থাকা লোকেরা স্থানীয় সময় দুপুর ২টার দিকে ড্রোনটি দেখেছিলেন। তারপর তিনটি ফ্লাইট—দুটি এয়ার ইন্ডিয়া এবং একটি ইন্ডিগো ফ্লাইটকে উড্ডয়ন না করতে বলা হয়। পাশাপাশি দুটি আগত ফ্লাইটকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়।
পার্বত্য সংখ্যাগরিষ্ঠ কুকি উপজাতি ও উপত্যকা সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেইদের মধ্যে কয়েক মাস ধরে জাতিগত সহিংসতার পর মণিপুরে উত্তেজনার মধ্যে ঘটনাটিকে বিরক্তিকর হিসেবে দেখা হয়েছে। সহিংসতার সময় বেশ কয়েকটি দল ড্রোন ব্যবহার করেছে। এ ছাড়া প্রতিবেশী মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী ভারতের সীমান্তে চীন রাজ্যের বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালাচ্ছে।
এদিকে যে ফ্লাইটগুলোকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছিল সেগুলো রবিবার রাতে ইম্ফল পৌঁছনোর সম্ভাবনা রয়েছে বলে সূত্রটি জানিয়েছে। পাহাড়ে ঘেরা বিমানবন্দরটিতে রাতে অবতরণের ব্যবস্থা রয়েছে। ইম্ফল বিমানবন্দরের পরিচালক চিপেম্মি কিশিং এক বিবৃতিতে ড্রোনটি দেখার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, ‘যোগ্য কর্তৃপক্ষ’ নিরাপত্তা ছাড়পত্র দেওয়ার পর তিনটি ফ্লাইটই উড্ডয়ন করেছে।
যাত্রীরা জানিয়েছেন, তাদের মধ্যে অনেকেই বিমানবন্দরের ভেতরে এবং কেউ কেউ বিকেল ৩টা থেকে তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বিমানের ভেতরে ছিলেন, যতক্ষণ না ফ্লাইটগুলো একের পর এক সোয়া ৬টার দিকে উড্ডয়ন করে।
এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ফ্লাইটে চড়েছিলেন এমন একজন নারী দিল্লি থেকে ফোনে এনডিটিভিকে বলেছেন, ‘বিকেল ৩টার মধ্যে বোর্ডিং সম্পন্ন হয়েছিল। কিন্তু আমরা অবশেষে ৬টা ১০ মিনিটে টেক অফের ছাড়পত্র পেয়েছি। যাত্রীরা চিন্তিত ছিল এবং কিছু বয়স্ক ব্যক্তি উদ্বিগ্ন ছিল। কিন্তু প্রত্যেকেই অত্যন্ত সহযোগিতামূলক এবং ধৈর্যশীল ছিল।’
দিল্লিগামী একটি ফ্লাইটে, উড্ডয়নের আগে দীর্ঘক্ষণ বিমানে বসে থাকার কারণে যাত্রীদের খাবার পরিবেশন করা হয়েছিল।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।

Discussion about this post