হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে লাগেজ কাটা চোর ধরতে বিমানের কর্মীদের শরীরে অত্যাধুনিক বডি ক্যামেরা বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটি একটি নতুন উদ্যোগ, যা বিমানবন্দরে লাগেজ চুরি রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এরই মধ্যে কোটি টাকা ব্যয়ে বিমানের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং কর্মীদের জন্য জাপানের তৈরি ১০০ বডি ক্যামেরা কেনা হয়েছে। চলতি মাসের মাঝামাঝি থেকে বডি ক্যামেরা লাগিয়ে কর্মীরা দায়িত্ব পালন করবেন। বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. শফিউল আজিম এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
গত ১৫ অক্টোবর রাতে সিঙ্গাপুর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে ঢাকায় আসা ফখর উদ্দিন ও শিশির সরকার নামে দুই প্রবাসীর লাগেজ থেকে প্রায় ৭ লাখ টাকার স্বর্ণ, গহনা ও মোবাইল চুরির ঘটনা ঘটে। মালপত্র চুরি যাওয়ায় বিমানবন্দরে ভুক্তভোগী ফখর উদ্দিনের গড়াগড়ি করে কান্নার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ঘটনার দু’দিন পর এ বিষয়ে তদন্ত কমিটিও গঠন করে বিমান কর্তৃপক্ষ।
তবে এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় জড়িত চক্রকে শনাক্ত করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। তারা বলছে, জড়িতদের ধরতে তদন্ত চলমান আছে। শুধু এ ঘটনাই নয়, আগেও অনেকবার বিমানবন্দরে লাগেজ থেকে যাত্রীদের মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে জড়িতদের ধরা সম্ভব হলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে চোররা থেকে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। ফলে বিভিন্ন সময় বিমানের সেবা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। বিমান কর্তৃপক্ষ মনে করে, কর্মীদের শরীরে ক্যামেরা বসানো হলে এ ধরনের অপরাধ কমে আসবে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সূত্র জানায়, এসব ক্যামেরা গোপনে নয়, বরং প্রকাশ্যেই বেল্ট দিয়ে কর্মীর শরীরের সামনের অংশে লাগানো থাকবে। উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কন্ট্রোল টাওয়ার থেকে এসব ক্যামেরা নিয়ন্ত্রণ করা হবে। ইচ্ছা করলেই কেউ ক্যামেরা বন্ধ করতে পারবেন না। দপ্তরে বসেই চোখে পড়বে লাগেজ কাটাসহ কর্মীদের কাজের চিত্র। এতে কর্মীরা যাতে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেন, সেটা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
সার্বিক বিষয় নিয়ে গ্ণমাধ্যমের সঙ্গে একান্তে কথা বলেছেন বিমানের এমডি শফিউল আজিম। তিনি বলেন, কর্মী যখন ডিউটিতে প্রবেশ করবেন, তখন সেই ক্যামেরা চালু হয়ে যাবে। দায়িত্ব পালনকালে এ ক্যামেরা বন্ধ করার সুযোগ থাকবে না। এ ক্যামেরার মান খুবই ভালো। ক্যামেরা চালুর পর থেকে কন্ট্রোল রুম থেকে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করা হবে। তাদের সব কর্মকাণ্ড রেকর্ড হতে থাকবে।
শফিউল আজিম বলেন, বডি ক্যামেরায় তাঁরও নজর থাকবে। কর্মী কোথায় যাচ্ছেন, কী করছেন– তা তিনিও দেখতে পারবেন। অনেক সময় কর্মী তাঁর কাজের এরিয়ার বাইরে চলে যান। এ ক্যামেরা থাকলে তিনি দায়িত্বের বাইরে যেতে পারবেন না। এতে বিমানের বদনামও ঘুচবে। কন্ট্রোল রুম ছাড়াও তাঁর নজরদারিতে থাকবেন কর্মীরা।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post