ভাগ্যবদলের আশায় দীর্ঘদিন প্রবাসে থেকেও প্রবাস জীবনে ব্যর্থ হয়ে অবশেষে দেশে এসে কৃত্রিমভাবে মৌমাছি চাষ করে সফল হয়েছেন কুষ্টিয়ার যুবক মোক্তার হোসেন (৩৫)। জেলার কুমারখালীর সদকী ইউনিয়নের মট মালিয়াট গ্রামের কয়েকশ বিঘা জমিতে ফুটেছে কচুরিপানা ও শাপলা ফুল। মাঠে পানি থাকায় ফুল হয়ে উঠেছে তরতাজা। সেই ফুলে মৌমাছি ছেড়ে দিয়ে মোক্তার হোসেন সংগ্রহ করছেন মধু।
মোক্তার হোসেন বলেন, ‘অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে বিদেশ গিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে তেমন একটা সুবিধা করতে পারিনি। বাড়ি ফিরে মধু আহরণের জন্য প্রশিক্ষণ নিয়ে ৩ লাখ টাকা নিয়ে ব্যবসা শুরু করি। আমার বর্তমানে ১৫০টি মৌ-বাক্স আছে। তা থেকে প্রতি সপ্তাহে ১৫০-১৭০ কেজি মধু সংগ্রহ করি। বছরে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকার মধু বিক্রি করি। মৌমাছির খাবার ও অন্যান্য খরচ বাদে ৪-৫ লাখ টাকা লাভ হয়।’
আরো পড়ুনঃ চারমাসে ওমান ছেড়েছে ২৩ হাজার বাংলাদেশি প্রবাসী
জানা যায়, প্রায় দশ বছর আগে মোক্তার হোসেন জীবিকার তাগিদে মালয়েশিয়া গিয়েছিলেন। সেখান ইলেকট্রিক কাজ করতেন। কয়েক বছর পর ফিরে এসে স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য মৌমাছি চাষের প্রশিক্ষণ নেন। এরপর গাইবান্ধা জেলার একটি ফার্মে কর্মচারী হিসেবে কাজ করেন। হাতেকলমে কাজ করার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে চাকরি ছেড়ে দিয়ে নিজ উদ্যোগে শুরু করেন ভ্রাম্যমাণ মধু আহরণ। বছরে পাঁচ থেকে সাত মাস মধু আহরণ করে তার আট থেকে দশ লাখ টাকা আয় হয়।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ দেবাশীষ কুমার দাস বলেন, ‘মৌ চাষে প্রান্তিক চাষি ও বেকার যুবকদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে। উপজেলায় এ বছর ৪ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। এ ছাড়া প্রায় ৩ হাজার হেক্টর জমিতে পানি থাকায় শাপলা ও কচুরিপানার ফুল ফুটেছে। সেখান থেকে মোক্তার মধু সংগ্রহ করছে। তার দেখাদেখি অনেক বেকার যুবক কৃত্রিমভাবে মৌমাছি চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছে।’
আরো পড়ুনঃ ওমান প্রবাসীদের সুখবর দিলো আল সাফার ট্রাভেল
খোকসা উপজেলার আমবাড়িয়া গ্রামের মোক্তার হোসেন কুমারখালী, রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, গাইবান্ধাসহ বিভিন্ন জেলায় বিভিন্ন মৌসুমে মৌ-বাক্সের মাধ্যমে মধু সংগ্রহ করেন। সেই মধু বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহের পাশাপাশি স্বাবলম্বী হতে সক্ষম হয়েছেন।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post