জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) শীর্ষ তিন ঋণগ্রহীতার মধ্যে বাংলাদেশ একটি। জাইকার সদরদপ্তরের সাউথ এশিয়া ডিভিশনের ডিরেক্টর জেনারেল ইতো তেরুয়ুকি এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, বাংলাদেশকে জাইকা সর্বমোট ৩ ট্রিলিয়ন জাপানি ইয়েনেরও বেশি সহযোগিতা দিয়েছে, যার অর্থমূল্য প্রায় ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি।
বুধবার (৮ নভেম্বর) রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে বাংলাদেশের সঙ্গে জাইকার অংশীদারিত্বের ৫০ বছর পূর্তির মাইলফলককে স্মরণীয় করে রাখতে এক উদযাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। সম্মানিত অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি। বিশেষ অতিথি ছিলেন জাইকা সদরদপ্তরের সাউথ এশিয়া ডিপার্টমেন্টের ডিরেক্টর জেনারেল ইতো তেরুয়ুকি ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সিনিয়র সচিব শরিফা খান।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এখন পর্যন্ত অফিসিয়াল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসিসটেন্স (ওডিএ) লোন হিসেবে ৩ হাজার ২৮৫ বিলিয়ন জাপানি ইয়েন (প্রায় ২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার), ২০২২ সাল পর্যন্ত অনুদান সহায়তা (গ্র্যান্ট এইড) হিসেবে ১৪৪ বিলিয়ন জাপানি ইয়েন (প্রায় ৯৬৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার)।
২০২২ সাল পর্যন্ত টেকনিক্যাল কো-অপারেশনের জন্য ১০৪ বিলিয়ন জাপানি ইয়েন (প্রায় ৬৯৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) এবং লোন ও ইক্যুইটি হিসেবে এখন পর্যন্ত প্রাইভেট সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট ফাইন্যান্সের জন্য ২৫ বিলিয়ন জাপানি ইয়েন (প্রায় ১৬৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি ১৪ হাজারেরও বেশি সরকারি কর্মীর প্রশিক্ষণ ও শিক্ষার ব্যবস্থা করেছে এবং ১ হাজার ২৮৬ জন জাপানিজ ওভারসিজ কো-অপারেশন ভলান্টিয়ার্সকে দেশে নিযুক্ত করেছে।
জাইকা সদরদপ্তরের সাউথ এশিয়া ডিভিশনের ডিরেক্টর জেনারেল ইতো তেরুয়ুকি বলেন, জাইকা সর্বমোট ৩ ট্রিলিয়ন জাপানি ইয়েনেরও বেশি সহযোগিতা দিয়েছে, যার অর্থমূল্য প্রায় ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি। বাংলাদেশ এখন সারা বিশ্বে আমাদের শীর্ষ তিন ঋণগ্রহীতা দেশের একটি।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আমাদের দেশসহ সারা বিশ্বের জন্য আদর্শ উদাহরণ জাপান। জাইকা ও জাপানের সহযোগিতায় আমাদের কমিউনিটির বিকাশ ও উন্নয়ন সাধিত হবে। জাপান আমাদের পরীক্ষিত বন্ধু। এই অংশীদারিত্ব আমাদের দেশের লক্ষ্যপূরণে সহায়তা করবে বলে আশাবাদী আমরা।
জাইকার চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইচিগুচি তোমোহিদে বলেন, ৫০ বছরের এই যাত্রার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু হিসেবে টেকনিক্যাল কো-অপারেশন, রেয়াতি ঋণ (কনসেশনাল লোন), অনুদান সহায়তা (গ্র্যান্ট এইড), স্বেচ্ছাসেবী ও বিভিন্ন পদ্ধতিতে বহু খাতে সহযোগিতা করেছে জাইকা। সবসময় সরকারি কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন, জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন, বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো এবং বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যকার শক্তিশালী বন্ধুত্ব গড়ে তোলাই ছিল জাইকার লক্ষ্য।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সিনিয়র সচিব শরিফা খান বলেন, গত ৫০ বছরের মধ্যে জাপানের সহযোগিতা বাংলাদেশের সর্বত্র পৌঁছে গেছে। দেশের ১৫টি খাতের সবগুলোতে জাপানের অংশগ্রহণ রয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের বৃহত্তম দ্বিপক্ষীয় উন্নয়ন সহযোগী জাপান।
জাইকা বাংলাদেশের উন্নয়নে নতুন উদ্যোগ গ্রহণের ক্ষেত্রে সবসময় এগিয়ে থাকে। এ কারণেই আমরা জাপান সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ, যারা গত ৫০ বছরে আমাদের সব ধরনের সহায়তা দিয়ে আসছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post