কয়েক মাসের বিরতির পর ভারত ও গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিল (জিসিসি) ভুক্ত ছয় দেশের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (এফটিএ) আলোচনা আবার শুরু হয়েছে। চুক্তির আলোচনায় দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগের বিষয় না–ও থাকতে পারে বলে জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।
এই চুক্তির মধ্য দিয়ে ভারত উপসাগরীয় ধনী দেশগুলোর বাজারে নিজের পণ্যের বিক্রি বাড়ানোর চেষ্টা করবে। সেই সঙ্গে ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে ছাড়ের সুবিধাও দেওয়া হতে পারে। এই অঞ্চলে এমনিতেই বিপুলসংখ্যক ভারতীয় পেশাজীবী ও কর্মী কাজ করেন। চুক্তির বদৌলতে সেই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চুক্তিতে দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগবিষয়ক অধ্যায়ের বিপরীতে ভিন্ন একটি অধ্যায় থাকতে পারে। উভয় পক্ষ সেই চুক্তির বিষয়ে উন্মুক্ত। তবে আলোচনাসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো টাইমস অব ইন্ডিয়াকে জানিয়েছে, চুক্তির বিষয়ে বিশদ আলোচনা এখনো শুরু হয়নি।
জিসিসিভুক্ত ছয়টি দেশ অর্থাৎ সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, কাতার, বাহরাইন ও ওমান এক বছরের বেশি সময় আগে প্রস্তাবিত এই মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে অগ্রসর হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। তবে দেশগুলোর কিছু কিছু গোষ্ঠীর মধ্যে এ নিয়ে কিছুটা অনাগ্রহ থাকায় বিলম্ব হয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য চুক্তি আছে। সে ক্ষেত্রে এটা হবে আরবের দেশগুলোর সঙ্গে ভারতের দ্বিতীয় বাণিজ্য চুক্তি। ওমানও ভারতের সঙ্গে পৃথক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সই করার আগ্রহ দেখিয়েছে।
জিসিসির সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির পরিকল্পনা ভারতের ইউপিএ সরকারের আমলে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দুই পক্ষের মধ্য অনেক ব্যবধান থাকায় তখন সে আলোচনায় অগ্রগতি হয়নি। এরপর ভারত আরসিইপি বা রিজিওনাল কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর জিসিসির সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা পুনরায় শুরু করে। এরপর দেশটি অনেক দিন ধরে ঝুলে থাকা তিনটি বাণিজ্য চুক্তি করে। সেই তিনটি দেশ হলো—মালদ্বীপ, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও অস্ট্রেলিয়া, যার সঙ্গে ভারত করেছে অন্তর্বর্তীকালীন একটি চুক্তি।
গত অর্থবছর অর্থাৎ ২০২২-২৩ সালে জিসিসিভুক্ত দেশগুলোতে ভারত ৫১ বিলিয়ন বা ৫ হাজার ১০০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে। চলতি অর্থবছরের এপ্রিল-আগস্ট সময়ে জিসিসিতে আরও ২১ বিলিয়ন বা ২ হাজার ১০০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে তারা। জিসিসিতে ভারত তেলজাত পণ্য, মূল্যবান রত্ন, অলংকার, রাসায়নিক ও শস্য রপ্তানি করে।
২০২২-২৩ অর্থবছরে, জিসিসি থেকে ভারতের আমদানি ছিল ১৩ হাজার ৩০০ কোটি ডলার। চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে, আমদানি হয়েছে ৩ হাজার ৯০০ কোটি ডলার।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post