পাকিস্থানের অবৈধ অভিবাসন-বিরোধী অভিযানের জেরে আফগানরা মানবেতর জীবনযাপনের শিকার হচ্ছেন। হাড় কাঁপানো শীতে জীর্ণ-শীর্ণ কাপড়ে দিন কাটাচ্ছেন তারা, নেই পর্যাপ্ত খাবার। এ অবস্থায় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন ভুক্তোভোগীরা।
সম্প্রতি নথিপত্রবিহীন আফগান শরণার্থীদের পাকিস্তান ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেন দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সরফরাজ বুগতি, বেধে দেয়া হয় সময়সীমাও। অন্যথায় তাদের আটক করে সীমান্তে ছেড়ে দেয়ার হুমকিও দেয় প্রশাসন। এরপর থেকে দেশে ফেরার তাগিদে সীমান্তে উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায় আফগান শরণার্থীদের। খবর আল জাজিরার।
এদিকে আফগানিস্তানে প্রবেশের আগে সীমান্তে মানবেতর জীবনযাপন করছেন অভিবাসীরা। তাদের জন্য অস্থায়ী তাবুর ব্যবস্থা করেছে তালেবান প্রশাসন। তবে খাবার, পানি, বাসস্থানের সংকটে অত্যন্ত কষ্টে দিন পার করছেন তারা। ভুক্তভোগীরা বলছেন, ‘তালেবানের কাছে আমরা কোনো সাহায্য চাইতে পারছি না কারণ তাদের নিজেদের অবস্থানই নড়বড়ে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর উচিত আমাদের খাদ্য ও বাসস্থান দিয়ে সাহায্যে করা। এখানে এমন অনেক পরিবার রয়েছে যাদের ঘর-বাড়ি, জমি-জমা কিছুই নেই। তাদের বসবাস খোলা আকাশের নিচে। আমাদের সাহায্য প্রয়োজন।’
এর আগে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, সেদেশে অভিবাসী ও শরণার্থী মিলিয়ে ৪০ লাখেরও বেশি আফগান বসবাস করেন। এদের মধ্যে পাকিস্তানে বসবাসের জন্য বৈধ কোনো নথি নেই অন্তত ১৭ লাখের। এই আফগানদের অনেকের জন্ম পাকিস্তানে এবং পাকিস্তানের বাইরে তারা কখনও যাননি।
তবে সম্প্রতি দেশটিতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বেড়ে যাওয়া এবং সেসব অপরাধে আফগানদের সংশ্লিষ্টতা বাড়তে থাকায় অবৈধ অভিবাসী-বিরোধী অভিযানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে জানা গেছে।
চলতি বছর জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত পাকিস্তানের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ২৭১টি আত্মঘাতী বোমা ও বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩৮৯ জন, আহত হয়েছেন আরও ৬৫৬ জন। এসবের মধ্যে ১৪টি হামলার জন্য দায়ী করা হয়েছে পাকিস্তানে বসবাসরত আফগান শরণার্থীদের।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post