প্রতি মাসে শুধু জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা ঘুস দিতে হয়। এছাড়া অন্যান্য সব জায়গাতেও ঘুস দিয়ে কাজ করতে হয়। ঘুস না দিলে কোনো অফিসের ফাইল নড়ে না। আজকে থেকে ঘুস নেওয়া বন্ধ হলে কাল থেকেই শ্রমিকদের বেতন বাড়িয়ে দেওয়া হবে।
ঘুস নিয়ে তার নিজের তিক্ত অভিজ্ঞতা তুলে ধরে এভাবেই ক্ষোভ ঝাড়লেন গার্মেন্টস মালিক আব্দুল্লাহ আল-জহির স্বপন। বুধবার গার্মেন্টস মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ আয়োজিত ‘পোশাক শিল্পের উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা সভায়’ কথা বলছিলেন এই শিল্পপতি।
এক্সিম ব্যাংকের উদ্যোক্তা পরিচালক জহির স্বপন বলেন, ‘আমাদের প্রত্যেকটা খাতে, প্রতিটি জায়গায় ঘুস দিতে হয়। এনবিআর, কাস্টমস, পুলিশ, ভ্যাট, শ্রম মন্ত্রণালয় সব জায়গায় ঘুস দিয়ে কাজ করতে হয়। খাত ভেদে ৫ থেকে ৭ শতাংশ ঘুস দিয়ে কাজ করতে হয়।’
‘কেন ঘুস দিতে হবে? সরকারি কর্মকর্তাদের, প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঘুস নিতে নিষেধ করেন তাহলেই আমরা শ্রমিকদের চাহিদা পূরণ করতে পারবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিজিএমইএ হলো প্যারালাল গভর্নমেন্ট। আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, এনবিআর, কাস্টমস এসব জায়গায় আমরা ঘুরে ঘুরে পায়ের চামড়া ক্ষয় করে ফেলি। নাকে খত দিতে হয় সেখানে গিয়ে। কেন? অথচ আমাদের মাধ্যমে কত মানুষ চাকরি পেয়েছে। সরকার কয়জনকে চাকরি দিয়েছে? আমাদের বিজিএমইএ অফিসে সবকটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের অফিসের সাব-অফিস স্থাপন করতে হবে। এয়ারপোর্টে আমাদের জন্য দুই-তিনটা কামরা ছেড়ে দিয়ে অফিসের সুযোগ করতে হবে। এনবিআরে আমাদের জন্য আলাদা অফিস রাখতে হবে। আমাদেরকে অগ্রাধিকার দিতে হবে সেবা দেওয়ায়।’
শিল্পপতি জহির স্বপন আরও বলেন, ‘শ্রমিকদের বিরুদ্ধে শ্রম আইনের ১৩/১ ধারা কার্যকর করতে হবে। আমরা এখন পর্যন্ত অনেক নমনীয় ছিলাম। এ আইন কার্যকর করতে পারি না। আমরা মাফ করে দেই। এই মাফ করে দেওয়ার সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসতে হবে।’
‘‘নো ওয়ার্ক, নো পে’ এই ফর্মুলায় যেতে হবে। এখানে আর কোনো কম্প্রোমাইজ করা যাবে না। কাল থেকেই আন্দোলন বন্ধ না করলে ১৩/১ ধারায় কারখানা বন্ধ করে দেবো। নইলে আমাদের সম্পদ বাঁচানো যাবে না’’—যোগ করেন গার্মেন্টস মালিক স্বপন।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post