দীর্ঘ আট বছর ছিলেন মালয়েশিয়ায়। চলতি মাসের ২ তারিখে আসেন দেশে। পরে রোমানিয়া যাওয়ার জন্য টিকেট নিশ্চিত করতে এসে দুর্ঘটনার প্রাণ হারান প্রবাসী যুবক মো. স্বপন (২৬)। ছেলের মৃত্যুর সংবাদ শুনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে কান্নায় ভেঙে পড়েন ভ্যানচালক বাবা হোসেন মিয়া।
রাজধানীর তেজগাঁও রেলগেট এলাকায় বুধবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে ট্রেনের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন এক প্রবাসী যুবক। পরে ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনার পর সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৭ টায় দিকে মারা যান তিনি।
স্বপন নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানার সভারামপুর গ্রামের মো. হোসেন মিয়ার ছেলে। দীর্ঘ আট বছর মালয়েশিয়া থাকার পর গত ২ সেপ্টেম্বর ঢাকায় এসেছিলেন তিনি।
ওই যুবককে হাসপাতালে নিয়ে আসা পথচারী শাহীন জানান, আসরের নামাজের পর ঘটনাস্থলের দিক দিয়ে যাওয়ার সময় তাঁরা স্বপনকে রেললাইনের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। আশপাশের লোকের কাছে জানতে পারেন ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা একটি ট্রেনের ধাক্কায় ওই যুবক গুরুতর আহত হন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে ঢামেকে নিয়ে এলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় তিনি।
শাহীন আরও জানান, ওই যুবকের কাছে থাকা একটি মোবাইল ও একটি ঘড়ি পাওয়া যায়। পরে তাঁর পরিবারের লোকজনদের খবর দেওয়া হয়।
এদিকে খবর শুনে ঢামেকে ছুটে আসেন স্বপনের বাবা হোসেন মিয়া। তিনি বলেন, ‘বাবারে! কি আর কমু! আট বছর মালয়েশিয়া থাইক্কা এই মাসের ২ তারিখে ঢাকায় আসে আমার স্বপন। পরে রোমানিয়া যাওয়ার জন্য আজ ঢাকায় টিকেট কনফার্ম করতে এসেছিল স্বপন। তার আর বিদেশ যাওয়া হলো না রে বাবা। আমি গরিব মানুষ ভ্যান গাড়ি চালায়ে সংসার চালাই। এই ছেলেটাই ছিল আমার শেষ ভরসা। জানিনা কীভাবে আর বাকি দিনগুলো চলবো।’
এই বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘তেজগাঁও রেল গেট থেকে আহত অবস্থায় এক যুবককে ঢামেকে নিয়ে আসা হয়েছিল। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। মরদেহ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। আমরা বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে জানিয়েছি।’
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post