ময়মনসিংহের ভালুকায় স্কুলে যাওয়ার পথে রাখিয়া সুলতানা রিয়া নামে এক স্কুলছাত্রীকে উপজেলার বাটাজোড় এলাকায় ধানক্ষেতে ফেলে কুপিয়ে হত্যা করেন মুখোশধারী এক প্রবাসী যুবক। এ ঘটনার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ওই যুবকের মুখোশ উন্মোচন করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, মুখোশধারী সেই ঘাতক নিহত রিয়ার স্বামী রিপন মিয়া। স্ত্রীর প্রতি সন্দেহের বশে এবং বাড়ি থেকে চলে আসায় সৌদি আরব থেকে ফিরেই রিয়াকে হত্যা করেন রিপন।
পুলিশ জানায়, এক বছর আগে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার প্রবাসী রিপন মিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয় রাখিয়া সুলতানা রিয়ার। সে নবম শ্রেণির ছাত্রী। বিয়ের ১৫ দিন পর রিপন বিদেশ চলে যায়, কিছু দিন পর স্ত্রী রিয়া তার বাবার বাড়ি চলে আসে। এরপর থেকেই তাদের মাঝে বনিবনা হচ্ছিল না। বিদেশে থেকে অনেক চেষ্টা করেও তাকে বাবার বাড়ি থেকে নিজের বাড়িতে আনতে পারেননি প্রবাসী রিপন।
কিছু দিন পর রিয়া তার স্বামী রিপনকে জানায়, সে আর তাদের বাড়িতে যাবে না। পরে রিপনের স্ত্রী রিয়া তার সঙ্গে সকল যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। একপর্যায়ে প্রবাসী রিপন রিয়ার স্কুলের সহপাঠীদের মাধ্যমে জানতে পারে যে, রিয়া অন্য একজনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। এরপর গত ২ অক্টোবর পরিবারের কাউকে না জানিয়ে সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে আসেন রিপন।
ঘটনার আগের দিন ৮ অক্টোবর সকালে প্রবাসী রিপন মিয়া বাটাজোর বিএম উচ্চ বিদ্যালয়ের গেটে তার স্ত্রী রিয়াকে অন্য একটি ছেলের সঙ্গে দেখতে পান। এতে রিপন মিয়া ক্ষিপ্ত হয়ে পর দিন সখীপুর বাজার থেকে একটি ধারালো দা কিনে রিয়ার স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে অপেক্ষা করতে থাকেন।
ওই দিন দুপুরে পরীক্ষা দিতে স্কুলে যাওয়ার পথে রিয়াকে ধানক্ষেতে ফেলে ধারালো দা দিয়ে মাথা ও ঘাড়সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে পালিয়ে যান রিপন। পরে তাকে উদ্ধার করে ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন।
রিয়ার বাবা আব্দুর রশিদ বলেন, বিয়ের ১৫ দিন পর রিয়ার স্বামী রিপন সৌদি আরব চলে যায়। এরপর রিয়ার ওপর শ্বশুরবাড়ির লোকজন শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায়। অল্প বয়সে না বুঝে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু আমার মেয়েটিকে ওরা বাঁচতে দিল না। আমি আমার মেয়ের হত্যাকারীর ফাঁসি চাই।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post