চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে স্ত্রীর পরকীয়ার বলি হলেন সম্প্রতি দেশে ফেরা প্রবাসী স্বামী। প্রেমিকের সহযোগিতায় গলা কেটে হত্যা করা হয় ইমরান হোসেন নামে এই প্রবাসীকে।
রবিবার (৮ অক্টোবর) রাত ৮টায় হাজীগঞ্জ পৌরসভার মকিমাবাদ এলাকার ট্রাক রোডের আমেনা মঞ্জিলের দ্বিতীয় তলায় মর্মান্তিক এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। এই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী ফারজানা আক্তারকে আটক করেছে পুলিশ।
মূলত স্ত্রী ফারজানা আক্তার ও প্রেমিকের আশিক হোসেনের হাতে নির্মমভাবে প্রাণ হারান প্রবাসী ইমরান হোসেন (৩৫)। এমন তথ্য জানিয়েছে পুলিশ।
হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ জানান, রাতে ওই বাসায় কান্নাকাটির আওয়াজ শুনে পাশের একটি অফিসে থাকা পুলিশের এক সদস্য ঘটনাস্থলে ছুটে যান। এসময় সেখানে রক্তাক্ত এক ব্যক্তির মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন।
এক পর্যায়ে বাসায় ৫ বছরের এক শিশু তার বাবাকে হত্যার জন্য নিজের মা এবং আশিক নামে ওই যুবককে দেখিয়ে দেয়। এমন পরিস্থিতি ওই নারীর প্রেমিক আশিক দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করলেও পুলিশ হাতেনাতে নারীকে আটক করে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২ মাস আগে বিদেশ থেকে দেশে ফেরেন ইমরান হোসেন। তার গ্রামের বাড়ি পাশের ফরিদগঞ্জ উপজেলার সুবিদপুর পূর্ব ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামে।
তবে স্ত্রী ও শিশু সন্তান নিয়ে হাজীগঞ্জ বাজারের ট্রাক রোডের আমেনা মঞ্জিলের দ্বিতীয় তলার ওই বাসায় ভাড়া থাকতেন।
আজ রবিবার সন্ধ্যায় ইমরান হোসেন তার ৫ বছরের শিশু সন্তানের জন্য রুটি ক্রয় করতে বাসার সামনে যান। এসময় আশিককে সেখানো ঘোরাফেরা করতে দেখেন। একপর্যায়ে তাকে বাসায় ডেকে নিয়ে যান ইমরান। কিন্তু বাসায় কথা কাটাকাটির জের ধরে ফারজানার সহায়তায় আশিক ইমরানকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে।
এই ঘটনার ৫ বছরের ওই শিশুর সামনেই ঘটে।
চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) সুদীপ্ত রায় রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানান, স্বামীর অনুপস্থিতিতে গৃহবধূ ফারজানা আক্তার আশিক নামে ওই যুবকের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। তাছাড়া ইমরান হোসেনের সঙ্গে বিয়ের পরও এই নারী দুই দফায় পালিয়ে যায়। পরে আত্মীয়-স্বজনের হস্তক্ষেপে আবার স্বামীর সংসারে ফিরে আসে।
এদিকে, পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহত ইমরানের মরদেহ উদ্ধার করেছে। এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকায় তার স্ত্রী ফারজানাকে আটক করা হয়েছে। তবে তার প্রেমিক আশিক পালিয়ে গেলেও তাকে আটকের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান, চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। তিনি আরো জানান, এই যুবকের বাড়ি শাহরাস্তি উপজেলার উয়ারুক এলাকায়।
অন্যদিকে, রাতে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত হত্যাকাণ্ড নিয়ে হাজীগঞ্জ থানায় কোনো মামলা হয়নি।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।

Discussion about this post