অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে লক্ষ্মীপুর রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির কর্মকর্তা নাসরিন আক্তারের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন রেড ক্রিসেন্টের যুব প্রধান নিজাম উদ্দিন মোহন।
শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শহরের একটি মিনি চাইনিজ রেস্তোরাঁয় এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
করোনাকালীন যুব সদস্যদের পারিশ্রমিক হিসেবে ভাতার এক লাখ ৯৪ হাজার টাকা নাসরিন আক্তার আত্মসাৎ করেছেন। সদস্যদের জন্য বরাদ্দকৃত গেঞ্জি চা দোকানি, রিকশা শ্রমিক ও খাবার হোটেল শ্রমিকদের দিয়ে দেওয়ার অভিযোগও করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত নাসরিন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির লক্ষ্মীপুর জেলা শাখার কর্মকর্তা (ইউনিট অফিসার)। তিনি ৮ বছর ধরে এ জেলায় কর্মরত রয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে নিজাম উদ্দিন মোহন জানান, রেড ক্রিসেন্ট একটি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান। করোনাকালীন যুব সদস্যরা ভ্যাকসিন কার্যক্রমে সদর হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করেন।
এসময় একেকজন স্বেচ্ছাসেবকের জন্য ৩০০ টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু সদস্যদের কাছ থেকে সেই বরাদ্দের এক লাখ ৯৪ হাজার টাকা নিয়ে যান ইউনিট অফিসার নাসরিন। করোনাকালীন সদর উপজেলার মজুচৌধুরীর হাট ও টুমচর গ্রামের ২০০ পরিবারের জন্য ৪ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেয় রেড ক্রিসেন্ট। সেখান থেকেও কমিশনের কথা বলে ৬০০ টাকা করে নাসরিন এক লাখ ২০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন। শ্রেষ্ঠ যুব সদস্যদের জন্য বরাদ্দকৃত ১০ হাজার টাকা কাউকে না দিয়ে তিনি আত্মসাৎ করেছেন।
মোহন আরও জানান, করোনাকালীন যুব সদস্যদের জন্য ৫০টি গেঞ্জি বরাদ্দ দেয় রেড ক্রিসেন্ট সদর দপ্তর। কিন্তু ওই গেঞ্জি নাসরিন কাউকে দেয়নি। সেগুলো চা দোকানি, রিকশা শ্রমিক ও খাবার হোটেল শ্রমিকদের পরনে দেখা যায়। গত ১ এপ্রিল মোহনকে যুব প্রধান করে যুব কমিটি গঠন করা হয়। ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ কমিটির মেয়াদকাল রয়েছে। কিন্তু নাসরিনের প্ররোচনায় ৩০ আগস্ট লক্ষ্মীপুর রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন ফারুক স্বাক্ষরিত এক প্যাডে যুব কমিটি স্থগিত করেন। যা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির নীতিমালা বহির্ভূত।
একইভাবে ১৩ সেপ্টেম্বর যুব প্রধানের জন্য জীবন বৃত্তান্ত জমা দেওয়ার জন্য নোটিশ দেওয়া হয়। যুব কমিটি স্থগিত করা হলে নিয়ম অনুযায়ী বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসডিএসসি প্রকল্পের আওতাধীন প্রশিক্ষণ বন্ধ রাখতে হবে। কিন্তু অর্থ আত্মসাৎ করতে নাসরিন ওই প্রকল্প কর্মসূচি বন্ধ করেননি।তার একক ক্ষমতার বলে সে প্রজেক্ট এর কাজ চলমান রেখেছে যা ৩০-০৮-২০২৩এর নোটিশ অনুযায়ী বন্ধ থাকার কথা। এই প্রজেক্ট চলমান থাকলে ইউনিট অফিসার লাভবান হবেন বলেই তিনি সেটি বন্ধ রাখেন নি প্রতিদিন প্রশিক্ষণের জন্য প্রায় দুই হাজার টাকা ভাউচার করে আত্মসাৎ করে আসছেন তিনি। প্রজেক্ট এর বিল ভাউচার গুলো নিজের মতো করে রেডি করে জাতীয় সদর দপ্তরে পাঠানো হচ্ছে এতে যুব প্রধান এর কোন ভুমিকা রাখেন নাই বলে জানিয়েছেন মোহন।মোহন বলে ভুয়া বিল ভাউচার রেডি করে পাঠানো হচ্ছে বলে বারন করাতে তাকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য এই প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।এর এই সব অনিয়ম এর সহায়ক হিসেবে কাজ করছে এসোসিয়েট ভলেন্টিয়ার ইজাম আহম্মেদ আপন
ভুলা বিল ভাউচারের কিছু অংশ ইজাজ আহম্মেদ আপন ও পাচ্ছে বলে জানিয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ইউনিট অফিসার নাসরিন আক্তার বলেন, মোহনের অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা। কোনো কারণে মনক্ষুণ্ন হয়ে তিনি এসব অভিযোগগুলো করেছেন। আমাদের সঙ্গে সমন্বয় না করে তিনি নিজ ইচ্ছে মতো কাজ করতেন। যে কারণে তার কমিটির মধ্যেও সমস্যা সৃষ্টি হয়। সাধারণ সম্পাদক এজন্য ওই কমিটি স্থগিত করেছেন। আর আমি কর্মকর্তা হওয়ায় মোহন অভিযোগটি আমার ওপর দিচ্ছে।
রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন ফারুক বলেন, অভিযোগটি মিথ্যা। সব কিছুই নিয়ম-নীতি মেনেই করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহজাহান বলেন, অভিযোগের বিষয়টি আমি জেনেছি। কার্যকরী কমিটিকে নিয়ে বিষয়টি আলোচনা করা হবে। সদর দপ্তরেও বিষয়টি জানানো হবে। সদর দপ্তরের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post