বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে যুক্ত হচ্ছে ফ্রান্সের তৈরি এ৩৫০ মডেলের ১০টি অত্যাধুনিক এয়ারবাস উড়োজাহাজ। বর্তমানে বিমানের বহরে উড়োজাহাজের সংখ্যা ২১টি; এর মধ্যে বোয়িং ১৬টি এবং পাঁচটি ড্যাশ-৮। নতুন ১০টি উড়োজাহাজ যুক্ত হলে এ সংখ্যা দাঁড়াবে ৩১-এ। বোয়িংয়ের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠান এয়ারবাস।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বে বোয়িংয়ের তুলনায় এয়ারবাসের বাজার ছোট। বোয়িং এবং এয়ারবাসের মধ্যে প্রযুক্তিগত পার্থক্য রয়েছে। এ কারণে এই উড়োজাহাজ পরিচালনা, মেরামত এবং যাত্রীসেবা দিতে পাইলট, প্রকৌশলী এবং কেবিন ক্রুদের প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। কেননা, একটি প্রতিষ্ঠানের উজোহাজের সেটআপের সঙ্গে অন্য কোম্পানির উড়োজাহাজের সেটআপের পার্থক্য থাকে। ঢাকায় বিমানসহ দেশি-বিদেশি প্রায় ২৯টি এয়ারলাইন্স নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এর মধ্যে মাত্র সাতটি এয়ারলাইন্স কোম্পানির বহরে এয়ারবাস রয়েছে।
বিমানের এক পাইলট বলেন, ভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উড়োজাহাজ চালানোর ক্ষেত্রে নতুন করে প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। এতে খরচ বাড়বে। এটা বিশাল চ্যালেঞ্জ। কারণ সবকিছু নতুন করে সেটআট দিতে হবে। তাই বড় বড় এয়ারলাইন্স ছাড়া অন্যান্য সংস্থা নিজেদের বহরে একাধিক প্রতিষ্ঠানের বানানো উড়োজাহাজ রাখে না। বিমান পরিচালনা পর্ষদ সাবেক সদস্য এবং এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন, ‘এয়ারবাস আনা হলে এগুলো পরিচালনায় অনেক বিষয় চলে আসবে। বোয়িংয়ের চেয়ে এয়ারবাসের যন্ত্রপাতি সম্পূর্ণ আলাদা। ফলে খরচ বাড়বে।’
যাত্রীসেবার মানোন্নয়নে এয়ারবাসের কাছ থেকে ১০টি এয়ারক্রাফট কেনার প্রক্রিয়া বেশ আগেই শুরু করেছিল বিমান। সিদ্ধান্ত হয়েছে, ফরাসি প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে এয়ারক্রাফট কেনা হবে জি-টু-জি পদ্ধতিতে। বিমান সূত্র জানায়, এয়ারবাসের উড়োজাহাজ কেনার প্রস্তাব বিমানের পরিচালনা পর্ষদের সভায় গত ৩ মে অনুমোদন পেয়েছে। এর পর ৬ মে লন্ডনে বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যে এ সংক্রান্ত যৌথ ঘোষণা সই হয়। পরে জানানো হয়, ২০৩০ সালের মধ্যে এয়ারবাস থেকে ৮টি উড়োজাহাজ কিনবে বিমান। পরবর্তী সময়ে আলোচনা সাপেক্ষে আরও দুটি মালবাহী উড়োজাহাজ কেনার সিদ্ধান্ত হয়। এ ছাড়া গত ১১ সেপ্টেম্বর ঢাকা সফরকালে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকের পর জানান, এয়ারবাস থেকে ১০টি উড়োজাহাজ কেনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বাংলাদেশ।
বৈঠক সূত্র জানায়, ২০২৬ সালে দুটি এয়ারবাস উড়োজাহাজ বিমানের বহরে যুক্ত হবে। বাকিগুলো আসবে পর্যায়ক্রমে। এখন ক্রয় পদ্ধতি, দাম, অর্থের উৎসসহ নানা কারিগরি বিষয় যুক্ত করে একটি প্রোফাইল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হচ্ছে।
বিমানের সিইও শফিউল আজিম বলেন, ‘সরকারের সিদ্ধান্তেই এয়ারবাস কেনার প্রক্রিয়া চলছে। যাত্রীদের সুবিধার্থে বোয়িংয়ের পাশাপাশি বিমানে থাকবে এয়ারবাস। আমাদের পাইলট ও ক্রুদের এয়ারবাস উড়োজাহাজ পরিচালনার অভিজ্ঞতা যে একেবারেই নেই, তা নয়। নব্বইয়ের দশকেও আমাদের দুটি এয়ারবাস ছিল। তবে নতুন উড়োজাহাজ এলে পরিচালনার ক্ষেত্রে খরচ কিছুটা বাড়া স্বাভাবিক।’
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post