প্রযুক্তি খাতে শক্তিশালী অবস্থান তৈরিতে যুক্তরাষ্ট্র অঙ্গীকারবদ্ধ। হারানো গৌরব ফিরে পেতে ও বিদেশনির্ভরতা কমাতে বিনিয়োগ, গবেষণাও চলমান। চীনের সঙ্গে বিরোধ ও নিরাপত্তা ইস্যুতে প্রযুক্তি, উৎপাদন যন্ত্রাংশ ও উপাদান রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। সম্প্রতি এ নিষেধাজ্ঞার পরিধি আরো বাড়ানো হয়েছে। চীন ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের বেশকিছু দেশে এনভিডিয়া ও অ্যাডভান্সড মাইক্রো ডিভাইসেসের (এএমডি) এআই চিপ রফতানি বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। খবর রয়টার্স।
চলতি সপ্তাহে এক রেগুলেটরি ফাইলিংয়ে এনভিডিয়া জানায়, মেশিন লার্নিং কার্যক্রমের গতি বাড়াতে এ১০০ ও এইচ১০০ চিপ তৈরি করা হয়েছে। বাইডেন সরকার যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে তাতে তাৎক্ষণিকভাবে এটি তৈরিতে ব্যবহৃত উপাদানে প্রভাব পড়বে না। এনভিডিয়ার প্রতিযোগী এএমডিও একই ধরনের নিষেধাজ্ঞাসংবলিত চিঠি পেয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। কোম্পানিটি জানায়, এ নিষেধাজ্ঞায় মুনাফায় কোনো প্রভাব পড়বে না।
জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থেই মূলত যুক্তরাষ্ট্র সরকার রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বলে জানা গেছে। গত বছর একই ধরনের উদ্যোগ প্রযুক্তি খাতে চীনের উৎকর্ষ দমনে নেয়া হয়। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্য থেকে কী ধরনের হুমকি বা ঝুঁকি রয়েছে সে বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। আলাদা এক বিবৃতিতে এনভিডিয়া জানায়, রফতানির জন্য লাইসেন্স বা অনুমতি গ্রহণের যে নীতিমালা করা হয়েছে তা কোম্পানিটির মুনাফায় কোনো প্রভাবই ফেলেনি। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে কাজ করার কথাও কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মূলত রফতানির জন্য নতুন লাইসেন্স বা অনুমতি দেয়ার বিষয়টি দেখভাল করে থাকে। মধ্যপ্রাচ্যের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলেও কিছু জানানো হয়নি। গত সেপ্টেম্বরে এএমডি জানায়, চীনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর (এআই) এম১২৫০ চিপ রফতানিতে নতুন লাইসেন্স গ্রহণের কথা বলা হয়। এরপর থেকে এনভিডিয়া, এএমডি ও ইন্টেল চীনের বাজারে রফতানি অব্যাহত রাখার জন্য কম শক্তিশালী চিপ তৈরিতে কাজ করছে।
মধ্যপ্রাচ্যের কোন দেশগুলো নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে সে বিষয়ে চলতি সপ্তাহে এনভিডিয়া কিছু জানাতে পারেনি। কোম্পানির তথ্যানুযায়ী, অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও তাইওয়ান থেকে বিক্রির মাধ্যমে ১ হাজার ৩৫০ কোটি ডলার আয় করেছে। সামগ্রিকভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এনভিডিয়া ১৩ দশমিক ৯ শতাংশ পণ্য বিক্রি করেছে। তবে কোম্পানিটি মধ্যপ্রাচ্য সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে পারেনি।
গত বছর যুক্তরাষ্ট্র যে ঘোষণা দিয়েছে তা তাইওয়ানকে চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। এখানে এনভিডিয়াসহ বিভিন্ন কোম্পানির চিপ তৈরি হয়ে থাকে। ২০২২ সালের অক্টোবরে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সময় যুক্তরাষ্ট্র আরো একধাপ এগিয়ে যায়। এর অধীনে বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি ব্যবহার করে নির্মিত চিপ চীনে রফতানি নিষিদ্ধ করা হয়। চলতি বছরের শুরুতে জাপান ও নেদারল্যান্ডস এ নিষেধাজ্ঞায় সম্মতি প্রকাশ এবং একই নিয়ম আরোপ করে।
প্রযুক্তিবিশারদদের মতে, এনভিডিয়া ও এএমডির এআই চিপ ব্যবহার করতে না পারলে ইমেজ ও স্পিচ রিকগনিশনের জন্য চীনের প্রতিষ্ঠানগুলো অ্যাডভান্সড কম্পিউটিং করতে পারবে না। এক্ষেত্রে ব্যয় আরো বাড়বে। স্মার্টফোনের মতো কনজিউমার অ্যাপ্লিকেশনে ইমেজ রিকগনিশন ও ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রক্রিয়াজাত গুরুত্বপূর্ণ। আর এসব কাজ সম্পাদনে শক্তিশালী ও উন্নত চিপ প্রয়োজন।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post