দুবাইয়ের একটি হাসপাতালের মর্গে গত আট দিন ধরে পড়ে আছে প্রবাসী শ্রমিক মিজানুর রহমানের মরদেহ। লাশ দেশে নিয়ে যেতে তদবির-তদারকি করার মতো পরিবারের কোনো সদস্য নেই দেশটিতে। এমনকি আর্থিক অবস্থাও ভালো নয় পরিবারের। তাই মিজানুরের মরদেহ দেশে ফেরানো নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তার স্বজনরা। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশ মিশন এবং সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।
জানা গেছে, ৫০ বছর বয়সী মিজানুর ছিলেন তার পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। ভাগ্য ফেরাতে দুবাই আসার এগার মাসের মাথায় গত ১৪ আগস্ট হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান। ফলে তার মৃত্যুতে এখন দিশেহারা পরিবার। মিজানের বাড়ি চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার ধামালুয়া গ্রামে। বাবা ডেঙ্গু মিয়া ও মা ফয়জুনের নেছা দুজনই মৃত। স্ত্রী রিনা আক্তার ও তিন কন্যা সন্তান আমেনা আক্তার, মীম আক্তার ও উম্মে হাবিবা।
স্বামীর মরদেহ শেষবার দেখার আকুতি জানিয়ে মঙ্গলবার রিনা আক্তার জানান, পারিবারিক আর্থিক অনটনে দিন যাচ্ছে তাদের। তার ওপর স্বামী হারানোর শোক। মরদেহ ফেরাতে তাই সবার সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। মিজানের ভাতিজা মোশারফ হোসেন জানান, মিজানুরের লাশ দেশে নিয়ে যেতে চেষ্টা তদবির করার মতো দুবাইতে তাদের আপনজন কেউ নেই। আবার আর্থিক দুরবস্থার কারণে দেশ থেকেও টাকা পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। তারপরও দুবাইয়ে থাকা তাদের দূরসম্পর্কে এক আত্মীয় ও তার চাচার রুমমেট আমিন আহমেদ এ ব্যাপারে কাজ করছেন।
মিজানের রুমমেট আমিন আহমেদ বলেন, মিজানুরের লাশ দেশে পাঠাতে ইতোমধ্যে মৃত্যুসনদ, মিশনের এনওসি সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে খরচের বিষয়ে এখনও সংশয় কাটেনি। এদিকে আরব আমিরাতে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে হৃদরোগে মারা গেছেন অন্তত ৪ জন বাংলাদেশি। গত ২১ আগস্ট শারজাহ আল-কাসমি হাসপাতালে মারা যান চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার লোকমান হোসেন মিয়াজী (৫০)। এর আগে ১৮ আগস্ট দুবাইয়ের দেরা বাংলা বাজারে মারা যান চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির কাজী আবু তাহের (৫৩)। ১৬ আগস্ট মারা যান চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার মুহাম্মদ মোহসিন (৪১)। তাদের সবার মরদেহ দুবাইয়ে মর্গে রাখা হয়েছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post