ভারতে আরও একবার সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার বিষ ছড়ানো হয়েছে। একটি ধর্মীয় শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে দেশটির হরিয়ানার একটি ঘটনায় কমপক্ষে ৪ জন নিহত হয়েছেন। অভিযোগ, উগ্রবাদীরা পুড়িয়েছেন মসজিদ। রেহাই দেননি ইমাম সাহেবকেও। জলজ্যান্ত পুড়িয়ে মেরেছেন তাকে।
ভারতের হরিয়ানায় হিন্দু মুসলিম সংঘর্ষে ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার বিশ্ব হিন্দু পরিষদের একটি ধর্মীয় শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে দেশটির হরিয়ানার এই ঘটনায় ৪ জন নিহত হয়েছেন। সাম্প্রদায়িক এই সংঘর্ষে আরও বহু লোক আহত হয়েছেন। এমনকি সহিংসতার পর গুরগাঁওতে একটি মসজিদ জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে, হামলায় ওই মসজিদের ইমাম সাহেবও নিহত হয়েছেন।
সুত্র বলছে, গোটা এলাকা জুড়ে এখন থমথমে পরিস্থিতি এবং ব্যাপক আতঙ্ক বিরাজ করছে। হরিয়ানা সরকার অবশ্য দাবি করছে, অবস্থা এখন নিয়ন্ত্রণে, প্রচুর সংখ্যায় পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছে। মাসকয়েক আগে নূহ-তে জুনায়েদ ও নাসির নামে দুই মুসলিম যুবককে তাদের গাড়িতে জীবন্ত জ্বালিয়ে মারার ঘটনা ঘটে। এর প্রধান অভিযুক্ত মোনু মানেসর নামে এক ব্যক্তি ওই শোভাযাত্রায় অংশ নেবেন – এমন খবর জানাজানি হলে এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ছড়ায়।
এ বিষয়ে মোনু মানেসরের দাবী, তিনি বিশ্ব হিন্দু পরিষদের পরামর্শে ওই শোভাযাত্রায় যোগ দেননি। কিন্তু মিছিলে তার যোগদানের খবরকে ঘিরে আগে থেকেই স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ ছিলেন। এরপর মিছিলটি যখন বিকেলে খেডলা মোড় দিয়ে যাচ্ছিল, তখন এক বিরাট জনতা তাতে বাধা দেয়। এরপরই দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। রাস্তায় বহু গাড়ি ও মোটরবাইকও জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। দিল্লির বেশ কাছেই জাতীয় মহাসড়কের একটা অংশ তখন কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। ওই সংঘর্ষে দুজন ‘হোমগার্ড’ বা সরকারি রক্ষীও নিহত হয়েছেন।
এদিকে ক্রমশ ওই সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে নূহ-র লাগোয়া গুরগাঁও এলাকাতেও। মাঝরাতের পর গুরগাঁওয়ের সেক্টর ৫৭ এলাকায় উগ্রবাদীরা একটি মসজিদে আগুন ধরিয়ে দেয়। ওই মসজিদের ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, মসজিদে তখন ইমাম সাহেব ছিলেন, ওই হামলায় তিনি নিহত হয়েছেন। পরে গুরগাঁও পুলিশের পক্ষ থেকেও সে খবরের সত্যতা নিশ্চিত করা হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, এই এলাকায় হিন্দু ও মুসলিম বহু বছর ধরে একসাথে শান্তিতে বসবাস করছেন। এখন মনে হচ্ছে কেউ বা কারা সেই সম্পর্কের মধ্যে ইচ্ছে করে বিষ ঢেলে দিয়েছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post