বিশ্বের কাছে সৌদি রাজপুত্র আল ওয়ালিদ বিন খালিদের পরিচিতি ‘ঘুমন্ত রাজপুত্র’ হিসেবে। অবিশ্বাস্য হলেও তিনি প্রায় ১৮ বছর ধরে ঘুমিয়ে রয়েছেন। ওয়ালিদ যেন অপেক্ষায় রয়েছেন কবে কেউ এসে ‘সোনার কাঠি’ ছুঁইয়ে তাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলবেন। অবশ্য তাকে ঘুম থেকে তোলার চেষ্টায় শত শত সোনার কাঠি ছোঁয়ানো হয়েছে। খরচ হয়েছে কোটি কোটি টাকা। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। ওয়ালিদ সৌদি রাজপরিবারের সদস্য খালিদ বিন তালাল আল সৌদের ছেলে। তার চাচা আল ওয়ালিদ বিন তালাল একজন ধনকুবের।
২০০৫ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে একটি সড়ক দুর্ঘটনার মুখোমুখি হন ওয়ালিদ। গুরুতর আহতাবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। চিকিৎসকরা বলেন, মস্তিষ্কে চোট লাগায় ওয়ালিদ কোমায় চলে গেছেন। সেই এখনো কোমা থেকে ফেরেননি তিনি। পরিবারের লোকেরা ওয়ালিদের জন্য কম চেষ্টা করেননি। তার পরও অবস্থার কোনো উন্নতি নেই। চিকিৎসকরা ওয়ালিদকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার সব আশা ত্যাগ করেছেন। কিন্তু বাবা খালিদের আশা, ছেলে একদিন সুস্থ হয়ে উঠবে।
খালিদ একবার বলেছিলেন, চিকিৎসকরা আমার ছেলের লাইফসাপোর্ট বন্ধ করে দিতে বলেছিল। আমি বলেছি, দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলে ছেলেকে কবর দিতাম। কিন্তু আমার ছেলে যতক্ষণ নিঃশ্বাস নেবে, ততক্ষণ আমি চিকিৎসা চালিয়ে যাব। বাবার আশা, একদিন অলৌকিক কোনো ঘটনা ঘটবে এবং তার ছেলে কোমা থেকে ফিরে আসবে। অবশ্য টানা ১৫ বছর কোমায় থাকার পর ২০২০ সালের অক্টোবরে ওয়ালিদ তার আঙুল নাড়াতে পেরেছিলেন। এরপর থেকে তার অবস্থার আর কোনো উন্নতি হয়নি। রিয়াদের একটি হাসপাতালে ১১ বছরের চিকিৎসার পর ২০১৬ সালে ওয়ালিদকে বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়। এখন তিনি নিজের বাড়িতেই লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন।
ওয়ালিদকে দেখভাল করার জন্য ১০ জনের মতো কর্মচারী রাখা হয়েছে। এজন্য কোটি কোটি টাকা গুনতে হয় রাজপরিবারকে। সোশ্যালে একবার গুজব রটেছিল ওয়ালিদ আর জীবিত নেই। বেশ কয়েক বছর আগেই নাকি তার মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু তার পরিবারের পক্ষ থেকে এই দাবি গুজব বলে দাবী করা হয়।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post