পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে অতিবর্ষণজনিত কারণে বন্যার প্রকোপ বাড়ছে। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গুর বিস্তারও। আক্রান্ত রোগীর হিসেবে চলতি বছর বিশ্বজুড়ে এই রোগটি রেকর্ড করতে যাচ্ছে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
শুক্রবার সুইজারল্যান্ডের রাজধানী জেনেভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার কন্ট্রোল অব নেগলেক্টেড ট্রপিক্যাল ডিজিজ বিভাগের বিশেষজ্ঞ ড. রমন ভেলাইউধান বলেন, গত ২২ বছরে বিশ্বজুড়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর হার বেড়েছে আটগুণ এবং চলতি বছর তা আরও বাড়তে পারে।
তিনি বলছিলেন, ‘বিশ্বজুড়ে বাড়ছে ডেঙ্গুতে আক্রান্তদের সংখ্যা। এই মুহূর্তে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন। বৃষ্টিবহুল ও উষ্ণ অঞ্চলগুলোতে দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে এই রোগটি।’
‘বর্তমানে বিশ্বে যে পরিমাণ ডেঙ্গু রোগী আছেন, এই রোগটির বিস্তার রোধ করা না গেলে চলতি বছরই রেকর্ড সংখ্যক মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হবেন। সামনের দিন গুলোতে হয়তো ডেঙ্গুকে মহামারিও ঘোষণা করতে পারি আমরা।’
সংবাদ সম্মেলনে ডব্লিউএইচওর এই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘আমাদের হাতে থাকা তথ্য অনুসারে বর্তমানের বিশ্বের ১২৯টি দেশে ৫২ লাখ মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত এবং তাদের মধ্যে প্রায় ৩০ লাখ মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন দেশের। আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে বলিভিয়া, প্যারাগুয়ে এবং পেরুতে এই রোগে আক্রান্তদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।’
সংক্রমণের বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে বর্তমানের এই আক্রান্তদের সংখ্যায় অল্প কিছুদিনের মধ্যে আরও ৪০ লাখ মানুষের যুক্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন ড. রমন ভেলাইউধান।
‘এশিয়ার দেশগুলো হয়ত এই রোগের বিস্তার নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে, কিন্তু মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর জন্য ডেঙ্গুর বিস্তার নিয়ন্ত্রণ বড় একটি চ্যালেঞ্জ।’
ডব্লিউএইচওর কাছে আক্রন্ত রোগীদের যে পরিসংখ্যান রয়েছে, তাতে অধিকাংশ রোগীই আক্রান্ত হওয়ার পর জ্বর, মাংসপেশিতে ব্যথা প্রভৃতি উপসর্গে ভুগছেন। অনেকের আবার দেহে কোনো উপসর্গ নেই, কিন্তু প্লাটিলেট আশঙ্কাজনক পর্যায়ে নেমে গেছে। এই আক্রান্তদের মধ্যে অন্তত ১ শতাংশ মারা গেছেন।
ডেঙ্গুর বিস্তারের জন্য প্রয়োজন উষ্ণ আবহাওয়া। এডিস নামের যে জাতের মশা এই রোগের প্রধান বাহন হিসেবে কাজ করে, নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়ায় এই মশা বংশবৃদ্ধির জন্য সবচেয়ে উপযোগী।
‘ঘুমানোর সময়ে মশারির ব্যবহার ও বাসাবাড়ি, অফিস আদালতে পানি জমতে না দেওয়া— এগুলো হয়তো খানিকটা সুরক্ষা দিতে পারে, কিন্তু এই রোগটি ঠেকানোর সবচেয়ে কার্যকর পন্থা হলো এডিস মশা ও সেটির প্রজনন ক্ষেত্র সম্পূর্ণ ধ্বংস করা,’ বলেন ডা. রমন ভেলাইউধান।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post