কেবল নামের মিল থাকায় একজনের সাজা খাটছেন আরেকজন। সিনেম্যাটিক এই ঘটনাটি ঘটেছে ঝালকাঠিতে। চারমাস ধরে ফরিদপুর কারাগারে একটি ডাকাতি মামলায় ফিরোজ আলম হাওলাদার (৪৫) সাজা খাটছেন। অথচ ঘটনার প্রকৃত আসামি জুয়েল ওরফে ফিরোজাল পলাতক রয়েছেন।
দুজনেরই বাড়ি ঝালকাঠি জেলায়। নাম ও ঠিকানায় আংশিক মিল পাওয়ায় ফিরোজ আলমকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দাবি তার পরিবারের। শনিবার (৮ জুলাই) সকালে ঝালকাঠি প্রেসক্লাবে তার মুক্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেন ফিরোজের পরিবার।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ফিরোজের স্ত্রী সুরাইয়া বেগম বলেন, আমার স্বামী মো. ফিরোজ আলম হাওলাদার ঢাকার আহছান উল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিয়ন হিসেবে ১৯৯৭ সালে চাকরিতে যোগদান করে সুনামের সাথে নিয়মিত চাকরি করে আসছেন। গত ৬মার্চ শবে ই বরাতের ছুটিতে ফিরোজ আলম বাড়িতে আসলে ৮ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বরিশাল র্যাব-৮ এর একটি টিম তাকে আটক করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে নলছিটি থানায় হস্তান্তর করলে তাকে ঝালকাঠি জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
সুরাইয়া বলেন, আমার স্বামীকে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার একটি মামলায় (যার নম্বর ২৬)। ২০০৭ সালের ১৩ মার্চ তারিখে দায়ের করা এ ডাকাতি মামলায় ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি হিসেবে আটক করা হয়। আমি ও আমার আত্মীয় স্বজনরা ফরিদপুরে গিয়ে এই মামলা সংক্রান্ত কাগজপত্র উঠিয়ে দেখি, ওই মামলার ৫নং আসামি হিসেবে জুয়েল পিতা-অজ্ঞাত উল্লেখ আছে। সেখানে কোনো ঠিকানা নেই।
এ মামলায় ৫নং আসামি জুয়েল ওরফে ফিরোজাল ইতোপূর্বে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার মামলা নং-১১ তারিখ ১২/০৬/২০০৩ এ গ্রেফতার হওয়ার পর ২৮/০৩/২০০৪ তারিখ পর্যন্ত ফরিদপুর কারাগারে আটক ছিলেন। সেখানে আসামির নাম ফিরোজাল পিতা-মনু মিয়া সাং-বৈশাখিয়া থানা-নলছিটি জেলা-ঝালকাঠী উল্লেখ আছে। অথচ ২০০৭ সনের মামলায় আমার স্বামীর নাম ও ঠিকানা কিভাবে এখানে এসেছে আমাদের বোধগম্য নয়।
এছাড়াও আমার স্বামী ১৯৯৭ সন থেকে নিয়মিত চাকরি করে আসছেন। আমার স্বামী যদি ডাকাতি মামলার আসামি হতেন তাহলে ২০০৩ সনে সেই ডাকাতি মামলার আসামি ফিরোজাল ৯ মাস হাজত খাটার পর পলাতক হলেন কিভাবে। এখানে উল্লেখ্য আমার স্বামী যদি ডাকাতি মামলায় আটক হয়ে ৯ মাস কারাগারে থাকতেন তাহলে তার চাকরি থাকার কথা নয়। আমার স্বামী নিয়মিত চাকরি করে প্রতিষ্ঠানে হাজির ছিলেন।
তিনি আরও বলেন,২৬ বছর যাবত নিয়মিত প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে আসা আমার স্বামীর নাম ঠিকানা আংশিক মিল থাকায় সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই না করে ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি হিসেবে আটক করা হয়েছে। তিনি নিরাপরাধ। অথচ গত চারমাস ধরে কারাগারে সাজা ভোগ করছেন। বর্তমানে আমার চার মেয়ের মধ্যে তিনজনই লেখা পড়া করছে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি কারাগারে থাকায় আমরা মানবেতর জীবন যাপনে বাধ্য হচ্ছি। বাসাভাড়াসহ সংসারের খরচ মেটানো একেবারেই সম্ভব হচ্ছেনা। এঅবস্থায় আমাদের মানবেতর জীবন-যাপন করতে হচ্ছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post