মালয়েশিয়ার পুচংয়ের পুলাউ মেরান্তি দ্বীপে অবৈধ বসতি স্থাপনের অভিযোগে বাংলাদেশিসহ অননুমোদিত ২২ অভিবাসীকে আটক করেছে দেশটির অভিবাসন বিভাগ (জেআইএম)। মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক দাতো রুসলিন বিন জুসোহ বলেন, বিদেশি শ্রমিকরা ১.৬ হেক্টর জমিতে অবৈধ বসতি গড়ে তোলার পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে সেখানে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করে আসছিলেন।
এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ জুন) ভোরে অভিযান চালিয়ে ওই এলাকায় বসবাসরত বাংলাদেশি ও ইন্দোনেশীয় ২২ অভিবাসীকে আটক করা হয়।
তিনি আরও বলেন, বিদেশিরা কয়েক দশক ধরে বিদ্যুৎ সাবস্টেশন গ্রিডের অধীনে চাষাবাদ করে আসছেন এবং তারা স্থানীয়দের কাছ থেকে এ জমি ভাড়া নিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার ভোরে ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে বাংলাদেশি ও ইন্দোনেশীয় ২২ অভিবাসীকে আটক করা হয়। এদের মধ্যে ১৪ জন পুরুষ ও আটজন নারী, যাদের বয়স ২০ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে। আটক ২২ জনের মধ্যে ১৭ জন ইন্দোনেশীয় এবং পাঁচজন বাংলাদেশি। প্রাথমিক পরিদর্শন ও অনুসন্ধানে দেখা গেছে, চিহ্নিত অপরাধীদের কাছে বৈধ কোনো কাগজপত্র পাওয়া যায়নি। অভিযানে দেশটির অভিবাসন বিভাগের উপ-মহাপরিচালক (অপারেশনস) তুয়ান জাফরি বিন এমবক তাহা, এনফোর্সমেন্ট ডিভিশনের পরিচালক মোহাম্মদ জাসমি বিন মোহাম্মদ জাওয়াহির এবং সেলাঙ্গর স্টেট ইমিগ্রেশনের পরিচালক ড. মুহাম্মদ সিয়াহমি বিন জাফর অংশগ্রহণ করেন।
অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক দাতো রুসলিন বিন জুসোহ বলেন, তারা অস্থায়ী বসতি স্থাপন করেছেন এবং এলাকাটিকে সবজি সংগ্রহের জায়গা বানিয়েছেন এবং পাইকাররা তাদের কাছে এসে বিভিন্ন রকমের সবজি কিনছেন। অভিবাসন বিভাগের পরিদর্শনে আরও দেখা গেছে, সেখানে একটি মসজিদ (সুরাউ), একটি সম্পূর্ণ পানির পাইপলাইন ও বাগানের জন্য পাইপিং সিস্টেম, বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য একটি জেনারেটর সেট এবং একটি পানির জলাধারসহ বিভিন্ন স্থাপনা রয়েছে। রুসলিন বলেন, আটক ব্যক্তিদের ডকুমেন্টেশন প্রক্রিয়ার জন্য সেলাঙ্গর ইমিগ্রেশন অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং ইমিগ্রেশন অ্যাক্ট ১৯৫৯/৬৩-এর ধারা ৬(১)(সি) এবং ইমিগ্রেশন অ্যাক্ট ১৯৫৯/৬৩-এর ধারা ১৫(৪) অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হচ্ছে।
আরু পড়ুন- মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু
এছাড়া ইমিগ্রেশন আইন ১৯৫৯/৬৩, পাসপোর্ট আইন ১৯৬৬ ও ইমিগ্রেশন রেগুলেশন ১৯৬৩ এবং মানব পাচার ও চোরাচালান বিরোধী আইন ২০০৭-এর অধীনে জাতীয় আইন লঙ্ঘনকারী বিদেশিদের শনাক্তকরণ, গ্রেফতার, বিচার ও বহিষ্কারের জন্য ইমিগ্রেশন চলমান ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করবে। এদিকে, আমিনা (৪০) নামে এক বিদেশি নারী জানান, তিনি মাসে ৬শ রিঙ্গিতের বিনিময়ে অবৈধ স্থাপনাটি ভাড়া নিয়েছিলেন। স্বামীসহ সেখানে তিনি শাকসবজি চাষ করতেন এবং প্রতিদিনের খরচ মেটাতে তাদের পরিবারের কাছে অর্থ প্রেরণের জন্য আশেপাশের অঞ্চলে ফসল বিক্রি করে আসছেন। তিনি মালয়েশিয়ায় বসতি স্থাপনের পর থেকে এ প্রথম আটক হয়েছেন এবং তিনি গত ২০ বছর ধরে মালয়েশিয়ায় বসবাস করছেন বলেও জানান।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post