ওমানে মরুর তীব্র গরমে পুড়ে মাসে দুইশো রিয়াল আয় করতে অনেক প্রবাসীর মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হয়। আর এমন সময় যদি কোনো প্রবাসী তার মোবাইলে মেসেজ পান যে, দিনে দুইশো রিয়াল আয়ের সুযোগ। তা ও আবার ঘরে বসেই! এমন লোভনীয় সুযোগ কজন-ই বা হাতছাড়া করতে চান।
শুনতে অবাক হলেও সম্প্রতি ওমান প্রবাসীদের মোবাইলে মোবাইলে এমন মেসেজ আসছে, যেখানে দিনে দুইশো রিয়াল পর্যন্ত আয়ের অফার দেওয়া হচ্ছে। কারো মোবাইলে এর থেকেও বেশি আয়ের অফার দেওয়া হচ্ছে। মূলত দিনে দুইশো রিয়াল উপার্জনের মেসেজ দেওয়া এসবই প্রতারক চক্রের কাজ। এদের পাতা ফাঁদে পা দিলেই ঘটবে চরম বিপত্তি। হারাতে পারেন নিজের ব্যাংক ব্যালেন্স এমনকি মোবাইলে থাকা গোপন ছবি ভিডিও। সতর্ক না হলে নিজের সব হারিয়ে নিঃস্ব হতে একটুও সময় লাগবেনা।
ইতিমধ্যেই এদের ব্যাপারে সতর্কতা জারি করেছে রয়্যাল ওমান পুলিশ। এক বিবৃতিতে পুলিশ জানিয়েছে, প্রতারকরা একটি নির্দিষ্ট দৈনিক বেতন সহ কাজের অফার সম্বলিত খুদে বার্তার মাধ্যমে টার্গেট করা ব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগ করে। এরপর তাদের এমন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে যার মাধ্যমে বিভিন্ন জালিয়াতি কার্যক্রম থেকে অর্থ স্থানান্তর করা হবে। ওমান পুলিশ প্রত্যেককে এই ধরণের প্রতারণামূলক বার্তায় সাড়া না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। সেইসাথে এই ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন হলে অবিলম্বে পুলিশকে জানানোর জন্য বলা হয়েছে।
মূলত প্রযুক্তি দিনে দিনে যত উন্নতি করছে, ততই বাড়ছে ইন্টারনেট জগতে অপরাধের সংখ্যা। ঠিক এরকম এক অপরাধ মাথা চাড়া দিয়েছে এই যুগে, নাম সাইবার ক্রাইম। যে ক্রাইমগুলো সংগঠিত হয়ে থাকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে। কিছু অসাধু চক্র মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিয়ে ঘটাচ্ছে নানা ঘটনা। কেবল একটা ম্যাসেজের মধ্যে দিয়ে করছে বড় বড় অপরাধ। হাতিয়ে নিচ্ছে শতকোটি টাকা।
‘এবারের ঈদে বিকাশের পক্ষথেকে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে, আপনার উপহার পেতে লিংকে ক্লিক করুন এবং পরিচিত দশ জনের কাছে শেয়ার করুন’ এ ধরণের মেসেজ ও অনেকেই হয়ত পেয়েছেন। তবে সাবধান। ভুলেও এমন মেসেজের কোন লিংকে ক্লিক করবেন না। এটা আসলে হ্যাকারদের ফিশিং ফাঁদ। যেখানে এক ক্লিকেই আপনার সকল ব্যক্তিগত তথ্য-উপাত্ত চলে যেতে পারে হ্যাকারের কাছে। হতে পারে বিপদ।
একবার আপনার ফোনের কিংবা কম্পিউটারের সকল উপাত্ত তাদের হাতে চলে গেলে ঘটে ব্ল্যাকমেইলের মতো ঘটনা। শুরু হয় টাকা চাওয়ার শেষ না হওয়ার এক ম্যারাথনের। মোবাইলের ম্যাসেজ অপশন ছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে, কিংবা ইমেইলের মাধ্যমে পাঠানো হয় এই ধরনের স্প্যাম লিংক।
বিভিন্ন লটারির পুরষ্কার কিংবা নামীদামী কোম্পানির অফারের নামে ফিশিং লিংক পাঠানো হয়। তাদের এমন ফাঁদে না বুঝে মুহূর্তেই পা দেন অনেকেই। সাইবার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এইসব লিংকে ক্লিক করলেই আইডি-পাসওয়ার্ডসহ অন্যান্য সকল তথ্য মুহূর্তেই চলে যেতে পারে হ্যাকারদের কাছে। এতে ব্যক্তিগত তথ্য চুরি সহ খোয়াতে পারেন ব্যাংকে জমানো টাকা। এ অবস্থায় ইন্টারনেট ও মোবাইল ব্যবহারে আরও সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সাইবার বিশেষজ্ঞরা।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post