মহামারী করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবে সৃষ্ট সঙ্কটের মধ্যে মানবিক আবেদনে অসহায়দের পাশে দাঁড়িয়েছেন বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে ১১৫ দেশ ভ্রমণকারী কাজী আসমা আজমেরী। নিম্ন আয়ের অসহায় ৩০০ পরিবারকে খাদ্য সামগ্রী উপহার তুলে দিয়েছেন তিনি।
বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন থেকেই তিনি তার নিজের এলাকা খুলনার রায়পাড়া, ইসলামপুর রোড ও কাজীর মাঠে এ কার্যক্রম শুরু করেছেন। এর আগে তিনি এসব এলাকার গরিব-অসহায় মানুষের তালিকা করেছেন। এ তালিকায় রিকশাচালক, দোকানের কর্মচারী, ঠেলাচালক, ভ্যানচালক, বাসার কাজের লোক স্থান পেয়েছে। কাজি আসমা আজমেরী প্রবাস টাইমকে বলেন, ” এ বছর আমি আর কোনো নতুন পোশাক কিনবো না। সেই টাকা দিয়ে অসহায় দুস্থদের খাবার কিনেছি। আমি খুব সাধারণ এক মানুষ। আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াসে হয়তো আমার এলাকার আশপাশের অসহায় মানুষেরা কিছু দিনের জন্য উপকৃত হবে। আমি চাই, সমাজের বিত্তবান সবাই এগিয়ে আসুন, অসহায়দের পাশে দাঁড়ান।”
আরও পড়ুনঃ ওমানে করোনা মোকাবেলায় নতুন যন্ত্র আবিষ্কার
তিনি আরও বলেন, আমি আমার সামর্থ্য অনুযায়ী অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি। বর্তমান এই সংকটময় মুহূর্তে সকলের উচিত সকলের অবস্থান থেকে সহযোগিতার হাত বাড়ানো। এখন আতঙ্কিত হওয়ার সময় নয়; এখন নিজেকে সুরক্ষিত রেখে যতটা সম্ভব আশপাশের অসহায় মানুষকে সাহায্য করা দরকার।
আসমা বলেন, আমার আম্মু ছোটবেলায় সব বলত যে পয়লা বৈশাখের দিন যেটা করা হবে সারা বছরই সেটা করা হবে, পহেলা বৈশাখের দিন আমি সাধারণ মানুষকে উপহার দিচ্ছি সারা বছর দিব কি না জানি না। কাজী আসমা আজমেরীর খাদ্য সামগ্রীর মধ্যে ছিলো তিন কেজি চাল, দুই কেজি আলু, এক কেজি করে ডাল, আটা, পেঁয়াজ, তেল ও একটি সাবান। আর তিনি এ উপহার সামগ্রী যে ব্যাগে দিয়েছেন সেটিতে তার ছবি সম্বলিত জরুরি সুরক্ষা বার্তা লিখে দিয়েছেন।
প্রথমে তার ইচ্ছে ছিলো ১১৫টি পরিবারকে খাদ্য সামগ্রী দিয়ে সাহায্য করবেন। যেহেতু তিনি ১১৫টি দেশ ঘুরেছেন। কিন্তু পরে সিদ্ধান্ত পাল্টান; আজ পর্যন্ত ৩০০টি পরিবারকে খাদ্য সামগ্রী উপহার দিয়েছেন। আরো দেবেন বলেও জানান। আসমা বলেন, এবছর এই নববর্ষের দিনটা আমার কাছে সারাদিন অন্যরকম কেটেছে। অনেকটা কষ্টের, অনেকটা মজার আবার অনেকটা ক্লান্তির। অনেক আনন্দ লেগেছে যখন একটি অসহায় পরিবারের হাতে চারদিনের খাবার তুলে দিতে পেরেছি। আবার খারাপ লেগেছে যে কিছু লোক হঠাৎ লাইনে এসে দাঁড়িয়েছে।
তাকে এই বৈশাখী উপহার বিতরণ করতে যারা সাহায্য করেছেন তাদের মধ্যে ঋত্বিক দাস, উৎপল বসু, সৌরভ সাহা, সজীব দাস, রোজিনা খাতুন, অনিম কুমার দে, জিসান, আরিফ, নয়ন, রফিকুল, সুখ মনি অন্যতম। তাদের সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
আসমা জানান, তিনি সবাইকে ভালো মানের ব্যাগ দিয়েছেন। যেন পরবর্তীতে বাজার করার সময় কাজে লাগাতে পারেন। করোনাভাইরাস থেকে সতর্ক করে ব্যাগে তিনি সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার কথাও লিখেছেন।
https://www.youtube.com/watch?v=s_BPvllV0eo
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post