লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলায় রাতের আঁধারে দলবল নিয়ে এক প্রবাসীর জমি দখল করার চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার চর বাদাম ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) আবদুর রহিম নোয়াখালী থেকে লাঠিয়াল এনে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। ইউনিয়নের পূর্ব চরসীতা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত ইউপি সদস্য আবদুর রহিম একই ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি। দলীয় পদ এবং জনপ্রতিনিধির ক্ষমতার প্রভাবে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। মারামারিসহ বিভিন্ন অভিযোগে থানায় তার নামে একাধিক মামলা রয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, ইউপি সদস্য আবদুর রহিম তার শ্বশুর বদু মিয়া পঞ্চায়েতের জন্য বৃহস্পতিবার (৪ মে) দিণগত রাত ২টার দিকে পূর্ব চরসীতা গ্রামের সিঙ্গাপুর প্রবাসী সাজ্জাদুর রহমানের ক্রয়কৃত জমির ওপর দিয়ে প্রায় ৪ শতাংশ জমি দখল করে রাস্তা তৈরি করেতে যান। রাতের আঁধারে তার নেতৃত্বে অর্ধশতাধিক বহিরাগত লাঠিয়াল ওই জমিতে গিয়ে মাটি কারা শুরু করে।
এসব লাঠিয়ালকে নোয়াখালী থেলে ভাড়া করে আনা হয়। বিষয়টি টের পেয়ে প্রবাসী পরিবারের লোকজন জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯-এ কল দেন। পরে রামগতি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সেখান থেকে ৪ জনকে আটক করে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান মেম্বার আবদুর রহিমসহ তার লোকজন।
প্রবাসী সাজ্জাদুর রহমানের বাবা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন বলেন, আমার ছেলে ১৯৯৮ সালে স্থানীয় খোরশেদ আলম পঞ্চায়েতের কাছ থেকে ৪০ শতাংশ জমি ক্রয় করেছে। ওই জমির পেছনে মেম্বার আবদুর রহিমের শ্বশুর বদু মিয়া পঞ্চায়েতের জমি। পেছনের জমি থেকে চলাচল করতে রাস্তার জন্য তারা আমাদের কাছে কিছু জমি চেয়েছে।
আমি প্রথমে দিতে বলেছি, কিন্তু জমির মালিক আমার ছেলে দেশে না থাকায় আপাতত তা সম্ভব হচ্ছে না। আমার ছেলে দেশে আসলে বিষয়টি বিবেচনা করবে। কিন্তু এরই মাঝে বদু মিয়া ও তার জামাতা আবদুর রহিমসহ তাদের আত্মীয় কাশেমের নেতৃত্বে রাতের আঁধারে আমার ছেলের জমির ওপর রাস্তা তৈরির জন্য মাটি কাটা শুরু করে। এতে আমরা বাঁধা দিই। পূর্বেও তারা আমাদের জমি থেকে মাটি লুট করে নিয়ে গেছে। এ বিষয়ে প্রতিবাদ করায় আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেয় তারা।
সাজ্জাদের স্ত্রী জান্নাত বেগম ঝুমুর বলেন, আমার স্বামী এবং দেবররা কেউ বাড়িতে থাকে না। এ সুযোগে মেম্বারের ভাড়াটিয়া লোকজন নিয়ে জমি দখল করতে আসে। আমার শ্বশুর এখন মেম্বারের হুমকির মুখে আছে।
অভিযুক্ত আবদুর রহিম ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, ঘটনার রাতে আমি বাড়িতেই ছিলাম না। ব্যবসায় জড়িত কাজে কক্সবাজারে ছিলাম। আমাদের বাড়ির দুপক্ষের মধ্যে জমি নিয়ে ঝামেলা আছে। আমি তাদের ঝামেলাতে নেই।
যদিও আবদুর রহিমের বক্তব্যের বিষয়ে স্থানীয় লোকজন জানান, ঘটনার রাতে সে উপস্থিত ছিলো এবং সে এলাকাতেই আছে। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রাহিদ হোসেন বলেন, ঘটনাস্থল গিয়েছি। মেম্বার আবদুর রহিম চাইলেই অন্যের জমি দখল করতে পারবে না।
রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর হোসেন জানান, রাতের আঁধারে জমিতে মাটি কাটার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে চারজন শ্রমিককে আটক করা হয়েছে। আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। মেম্বার আবদুর রহিমের নেতৃত্বে জমি দখলের অভিযোগ এসেছে। তার বিরুদ্ধে থানায় আরো মামলা রয়েছে। তাকে সতর্ক করে দিয়েছি।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post