ওমানে ইদানীং আশংকাজনকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে বৈদ্যুতিক ক্যাবল চুরির ঘটনা। আর এর সাথে জড়িতদের মধ্যে অধিকাংশই বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি নাগরিক। গত সপ্তাহে রাজধানী মাস্কাটের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ক্যাবল চুরির একাধিক খবর পাওয়া গেছে।
ইতিমধ্যেই এর সাথে জড়িত বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে স্পেশাল টাস্ক পুলিশ কমান্ড এবং পুলিশ ডগ ইউনিট। এরমধ্যে মাবেলা থেকে একজন পাকিস্তানিকে হাতেনাতে আটক করেছে মাস্কাট গভর্নরেট পুলিশ কমান্ড।
ওমানে খোজ নিয়ে জানাগেছে পিডিও এরিয়াতে এই ক্যাবল চুরির ঘটনা বেশি ঘটে থাকে। বিশেষ করে তামরিদ, হাইমা ও মারমুল অঞ্চলে এই ঘটনা বেশি লক্ষ করা যায়। এ ছারাও দেশটির সানাইয়া অর্থাৎ শিল্পাঞ্চল গুলোতেও এধরনের অপরাধ বেশি লক্ষ করা গেছে। এসব কর্মকাণ্ডে জড়িত এমন ২ জন নাম না প্রকাশের শর্তে প্রবাস টাইমকে বলেন, একরাতের ক্যাবল চুরির আয় দিয়ে এক মাস চলা যায়।
বিশেষ করে মাটির নিচ দিয়ে যেসব মোটা ক্যাবলের মাধ্যমে বৈদ্যুতিক লাইন টানা হয়েছে, সেসব ক্যাবল বেশ মূল্যবান। আর তাই এইসব ক্যাবলই প্রধান টার্গেট থাকে তাদের। এই কাজের জন্য তাদের নিজস্ব পিকআপ রয়েছে, যেই পিকআপে রয়েছে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন জেনারেটর। ক্যাবল চুরির সময় তারা ড্রিল মেশিনের সাহায্যে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই মোটা ক্যাবল কেটে ফেলেন, এরপর তা টুকরো টুকরো করে পিকআপে করে নিয়ে আসেন।
তারা জানান, রাতের আধারেই সব কাজ সম্পন্ন হয়। এইসব ক্যাবল বিক্রির জন্য নির্ধারিত কিছু স্ক্রাপের দোকানও রয়েছে, যারা কম মূল্যে এইসব ক্যাবল কিনে নেয়। মাস্কাটের মিসফাহ নামক অঞ্চলে অনুসন্ধান করে জানাগেছে, সেখানে বেশকিছু স্ক্রাপের দোকান রয়েছে, যারা এইসব ক্যাবল কিনে রাতের মধ্যেই আগুনে পুড়িয়ে তামা বের করে ফেলেন।
গোপন অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এই ক্যাবল পুড়ানোর জন্য আলাদা চুলা রয়েছে, যেখানে একসাথে কয়েক টন ক্যাবল পুড়ানো হয়। ২ থেকে ৩ ঘন্টা পুড়ানোর পর ক্যাবল গলে প্ল্যাস্টিক এবং তামা আলাদা হয়ে যায়। পরবর্তীতে ওই তামাগুলো চড়া দামে বিক্রি করা হয়। এর সাথে জড়িত এক ভারতীয় ব্যবসায়ী বলেন, পূর্বে বেশ জমজমাট থাকলেও বর্তমানে এই ব্যবসা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে।
প্রতিটি স্ক্রাপের দোকানে সিসি ক্যামেরা বাধ্যতামূলক করেছে ওমান পুলিশ। প্রায়ই এসে এই ক্যামেরা চেক করা হয়, সেখানে কোন সন্দেহ জনক কিছু ধরা পরলেই কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। আর তাই, এখন অনেকেই এইসব ক্যাবল কিনতে চাচ্ছেনা।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post