বোয়িংয়ের পর এবার বিমানবহরে যুক্ত হচ্ছে আরও নতুন ১০টি অত্যাধুনিক এয়ারবাস। আজ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালনা পর্যদ সভায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বিমানের জন্য নতুন ১০টি অত্যাধুনিক উড়োজাহাজ ক্রয় করার ব্যাপারে আমরা নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যুক্তরাষ্ট্রের বোয়িংয়ের পর এবার আরেক জায়ান্ট ফ্রান্সের এয়ারবাস কোম্পানির কাছ থেকে এই ১০টি উড়োজাহাজ ক্রয় করা হবে।
বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো হবে। তিনি সম্মতি দিলে এয়ারবাস ও বিমানের সঙ্গে এমওইউ স্বাক্ষর করা হবে। তিনি আশা করছেন, খুব শিগগিরই এই স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে।
বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) অতিরিক্ত সচিব শফিউল আজীম বলেন, বিমানবহর ঢেলে সাজানোর বিষয়টি নীতিগতভাবে চূড়ান্ত করেছে সরকার। জাপান, যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি নতুন রুট চালু করা হবে দ্রততম সময়ের মধ্যে। এজন্য বহরে নতুন বিমান দরকার।
তিনি বলেন, এয়ারবাস কোম্পানির কাছ থেকে নতুন ১০টি উড়োজাহাজ ক্রয়ের বিষয়টি সরকার নীতিগতভাবে সম্মতি দিয়েছে। সব উড়োজাহাজ হবে যাত্রীবাহী।
এজন্য পরিচালনা পর্যদের সদস্যদের নিয়ে একটি সাব-কমিটিও গঠন করা হয়েছে। আজকের পর্ষদ সভায় এ নিয়ে আলোচনা হবে। পর্যদে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলে একটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করা হবে। ওই কমিটি এয়ারক্রাফটের দরদাম নিয়ে এয়ারবাসের সঙ্গে আলোচনা করবে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এর আগে মার্কিন উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং কোম্পানির কাছ থেকে ১০টি নতুন অত্যাধুনিক উড়োজাহাজ ক্রয় করে। এজন্য বোয়িংয়ের সঙ্গে ২০০৮ সালে চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী ইতোমধ্যে সব এয়ারক্রাফট বিমানবহরে যুক্ত হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বোয়িংয়ের সঙ্গে চুক্তির পর দীর্ঘ ১৫ বছর আর কোনো নতুন উড়োজাহাজ আনার চুক্তি করা হয়নি। অথচ দিনদিন যাত্রীর সঙ্গে উড়োজাহাজের চাহিদাও বাড়ছে। দীর্ঘদিন বিমান ম্যানেজমেন্ট বেশকিছু আন্তর্জাতিক গন্তব্য বাড়ানোর জন্য চেষ্টা চালালেও উড়োজাহাজ সংকটে সেটা সম্ভব হয়নি।
বর্তমানে বিমানবহরে উড়োজাহাজের সংখ্যা ২১টি। এর মধ্যে চারটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর, চারটি বোয়িং ৭৮৭-৮, দুটি বোয়িং ৭৮৭-৯, ছয়টি বোয়িং ৭৩৭ এবং তিনটি ড্যাশ ৮-৪০০ উড়োজাহাজ। ১০টি নতুন প্লেন যুক্ত হলে সংখ্যা দাঁড়াবে ৩১টি।
বিমান এমডি শফিউল আজীম বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজ হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান বিমান। সরকারের দেওয়া বিমানবাহিনীর একটি ডিসি-৩ এয়ারক্রাফটের মধ্য দিয়ে শুরু হয় এর যাত্রা। ১৯৭২ সালের ৭ মার্চ চট্টগ্রাম ও সিলেটে এবং ৯ মার্চ যশোরে একটি ফ্লাইটের মাধ্যমে আকাশে উড়ে বিমান।
এভাবেই শুরু হয়েছিল বিমানের অভ্যন্তরীণ কার্যক্রম। এরপর থেকে আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি ঐতিহ্যের এ ধারকটিকে। অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের তিন দিন আগে অর্থাৎ ৪ মার্চ ১৭৯ জন যাত্রীকে লন্ডন থেকে ঢাকায় নিয়ে আসার মাধ্যমে বিমানের প্রথম আন্তর্জাতিক ফ্লাইট সম্পন্ন হয়।
আন্তর্জাতিক রুটে যাত্রী এবং মালামাল পরিবহণের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ সেবাও দিয়ে থাকে বিমান। বিশ্বের প্রায় ৪২টি দেশের সঙ্গে এর আকাশসেবার চুক্তি থাকলেও মাত্র ১৬টি দেশে এখন কার্যক্রম বিদ্যমান।
দেশের জাতীয় পতাকাবাহী এই সংস্থাটি প্রধানত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, ঢাকা থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করে। এছাড়াও চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকেও এর কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post