রাজধানীর শ্যামবাজারে বুড়িগঙ্গা নদীতে লঞ্চ ডুবিতে ১৩ ঘণ্টা পর একজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার (২৯ জুন) রাতে তাকে জীবিত উদ্ধার করে ডুবুরিরা। জীবিত উদ্ধারের কথা মিডিয়াকে নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিসের ডেপুটি ডিরেক্টর দেবাশিষ বর্ধন। সোমবার (২৯ জুন) রাতে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা ধারণা করছি উদ্ধার হওয়া এই ব্যক্তি সম্ভবত ইঞ্জিন রুমে ছিলেন। সাধারণত ইঞ্জিন রুম এয়ারটাইট হওয়ার কারণে সেখানে পানি প্রবেশ করে না। ১০টা ১০ মিনিটের দিকে কুশন পদ্ধতি ব্যবহার করে জাহাজ ভাসানোর চেষ্টা করা হলে সম্ভবত ইঞ্জিনরুম খুলে যায়। সে সময় তিনি বের হয়ে আসেন। এবং উদ্ধারকর্মীরা তাকে উদ্ধার করেন।’ তিনি আরও জানান, জরুরি ভিত্তিতে তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, উদ্ধার হওয়া ওই ব্যক্তির নাম সুমন। তার বাড়ি বাড়ি মুন্সিগঞ্জে। তাকে মিটফোর্ড হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এদিকে লঞ্চ ডুবির ১৩ ঘণ্টা পর কিভাবে একজনকে জীবিত উদ্ধার করা হলো এই নিয়ে শুরু হয়েছে প্রশ্ন। তবে এমন মিরাকল বাস্তবে সম্ভব এবং তার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও রয়েছে। লঞ্চের সঙ্গে ডুবে যাওয়া ওই ব্যক্তির প্রাণ বাঁচার অন্যতম কারণ এয়ারপকেট। এয়ারপকেট আসলে কি একটা উদাহরণ দিলেই তা সহজেই বোঝা সম্ভব।
পাঠক বোঝার জন্যে সায়েন্টেফিক্যালি একটি পিপড়া ধরুন।সেটিকে একটি কাচের গ্লাসে নিন।এরপর একটি বালতিতে সোজাসুজিভাবে তা উল্টে দিন।বাতাসের চাপে পানি কিন্তু সোজা হয়ে ডুবানো গ্লাসে প্রবেশ করবেনা।আর হ্যাঁ বাতাসের যেহেতু প্রায় ২১% অক্সিজেন।সুতরাং পিঁপড়াটিও জীবিত থাকবে। সে তুলনায় লঞ্চের আয়তন বিশাল।তার এয়ার পকেট আরও বিশাল।
পৃথিবীর অনেক দেশেই সাগরে জাহাজডুবির পরেও ওই জাহাজে থাকা মানুষের প্রাণ বেঁচে গেছে এই এয়ারপকেটের কারণে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সিএনএন জানায়, ২০১৩ সালে নাইজেরিয়ার একটি কোম্পানি ওয়েস্ট আফ্রিকান ভেঞ্চারস এর একটি লাইটার ভ্যাসেল সমুদ্রে ডুবে যায়। পরে ডুবে যাওয়া ভেসেলে একটি এয়ার পকেট তৈরি হয়। তাতে ওই ভ্যাসেলে থাকা এক ব্যক্তি তিন দিন অবস্থান করছিল। অর্থাৎ ডুবে যাওয়ার তিনদিন পর ভ্যাসেল থেকে ওই ব্যক্তিকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছিল শুধুমাত্র এয়ারপকেট তৈরি হওয়ার কারণেই।
আরও পড়ুনঃ ওমান প্রবাসীদের জন্য আসছে দারুণ সুযোগ!
উল্লেখ্য, সোমবার সকাল ৯টার দিকে সদরঘাট সংলগ্ন বুড়িগঙ্গা নদীতে ময়ূর-২ লঞ্চের সঙ্গে সংঘর্ষে মুন্সীগঞ্জ থেকে আসা ‘মর্নিং বার্ড’ নামে একটি যাত্রীবাহী লঞ্চ ডুবে যায়। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অন্তত ৩২টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, লঞ্চে শতাধিক যাত্রী ছিলেন। উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছেন ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট, নৌবাহিনীর ডুবুরি দলের সদস্য ও স্থানীয়রা। আজ রাতের মধ্যেই ডুবে যাওয়া ‘মর্নিং বার্ড’ লঞ্চটি উদ্ধার করা সম্ভব বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।
আরও দেখুনঃ ওমান প্রবাসীদের জন্য দারুণ সুখবর দিলে রাষ্ট্রদূত
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post