ঢাকা বিমানবন্দরে যাত্রী ও দর্শনার্থীদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে জাবেদ নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্যরা।
মঙ্গলবার মধ্যরাতে বিমানবন্দর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, জাবেদ দীর্ঘদিন ধরে বিমানবন্দর এলাকায় যাত্রীদের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের প্রতারণা করে আসছিলেন। কখনো ডলার করে দেওয়ার কথা বলে যাত্রীর টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যাওয়া, সুকৌশলে যাত্রীর পাসপোর্ট ও ট্রাভেল ডকুমেন্টস নিয়ে পালিয়ে যাওয়া, আবার ফ্লাইটে যেতে পারবেন না বলে ভয়ভীতি দেখিয়ে বিকাশের মাধ্যমে যাত্রীর আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে অর্থ আদায়সহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত এই জাবেদ।
এপিবিএনের এই কর্মকর্তা আরও জানান, এর আগেও বিভিন্ন অভিযোগে জাবেদকে অন্তত চার বার গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছিল। কিন্তু জেল থেকে জামিনে বের হয়ে তিনি একই ধরনের প্রতারণার সঙ্গে আবার যুক্ত হন।
নিজের নামে বিমানবন্দর কেন্দ্রিক একটি চক্রও গড়ে তুলেছেন জাবেদ। তার এই চক্রে ৫-৬ জন সক্রিয় সদস্য রয়েছে, যাদের বিভিন্ন সময় এয়ারপোর্ট এপিবিএন গ্রেপ্তার করেছে।
তিনি জানান, গত ৩ জানুয়ারি সিঙ্গাপুরগামী যাত্রী মো. শফিকুল ইসলাম ফ্লাইট মিস করেছেন মর্মে তার আত্মীয়স্বজনকে ফোন করে জানান জাবেদ। যাত্রীকে নতুন করে টিকিট করে দিতে হবে বলে আত্মীয়-স্বজনের কাছে ফোনে যাত্রীর কণ্ঠ নকল করে কান্নাকাটি করে জাবেদ।
যাত্রীকে সিঙ্গাপুরে পাঠাতে হলে ৬৮ হাজার টাকা দিয়ে নতুন করে সরাসরি ফ্লাইটের টিকিট করতে হবে বলে যাত্রীর আত্মীয়-স্বজনকে বলেন জাবেদ।
কোনও উপায় না দেখে যাত্রীর আত্মীয়-স্বজন বিকাশ ও নগদের মাধ্যমে ৩৭ হাজার ৪৫০, ২৮ হাজার ১০০ টাকাসহ মোট ৬৫ হাজার ৫৫০ টাকা জাবেদকে পাঠান।
অথচ যাত্রী শফিকুল ইসলাম তখন সিঙ্গাপুরগামী ফ্লাইটে ফ্লাই করছেন, যার কারণে তার ফোন তখন বন্ধ ছিল। আর ফোন বন্ধ থাকার কারণে যাত্রীর আত্মীয়স্বজনও কোনও প্রকার সন্দেহ না করে টিকিটের জন্য নকল জাবেদের কথামতো এই টাকা নগদ ও বিকাশ করেন।
জিয়াউল হক আরও জানান, যাত্রীর আত্মীয়-স্বজন টাকা পাঠানোর পরপরই জাবেদ তার ফোন নম্বরটি অফ করে দেয়। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের কাছে অভিযোগ করলে তদন্তের মাধ্যমে প্রতারক জাবেদকে চিহ্নিত করা হয়।
পরে মঙ্গলবার মধ্যরাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকা থেকে তাকে আটক করে বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের গোয়েন্দা দল। আর আগেও জাবেদকে বেশ কয়েকবার গ্রেপ্তার করেছে এপিবিএন।
বিমানবন্দরে কর্মরত ম্যাজিস্ট্রেট জাবেদকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মেয়াদে সাজাও প্রদান করেন। তার বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানাতেও একাধিক মামলা রয়েছে।
সেসব মামলায় জামিন পেয়ে তিনি বের হয়ে আসেন এবং একই ধরনের প্রতারণার কাজে তিনি আবারও যুক্ত হন। জাবেদের বিরুদ্ধে মামলা করে তাকে বিমানবন্দর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান জিয়াউল হক।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post