করোনার পর স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছে ইতালি। তবে কর্মস্থলগুলোতে চলছে জনবল সংকট। এই সংকট নিরসনে ৮২ হাজার ৭০৫ জন শ্রমিক নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইতালি সরকার। বিশ্বের ৩৩টি দেশ থেকে এই বিপুল সংখ্যক শ্রমিক নেবে দেশটি। আজ থেকে আবেদন নেওয়া শুরু হচ্ছে।
কর্মীকে সরাসরি আবেদন করতে হবে না, কর্মী নিতে আবেদন করবেন ইতালির নিয়োগদাতা। বিস্তারিত পদ্ধতি জেনে নিন:
শুধুমাত্র ইতালিতে বসবাসরত নিয়োগকারী বা মালিক ইতালিয় সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কর্ম কেন্দ্র (ANPAL) হতে অনাপত্তি সনদ গ্রহণ করে বিদেশী কর্মী নিয়োগের আবেদন করতে পারবেন। এবারের ফ্লুসিতে ইতালির অভ্যন্তরের কর্মহীন বা উপযুক্ত কর্মীরা নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রথমে সুযোগ পাবেন। এধরনের কর্মীর সংস্থান না হলে কেবল তখনই প্রতিষ্ঠানগুলো ইতালির বাইরে থেকে কর্মী নিয়োগ দেওয়ার আবেদন করতে পারবে।
নিয়োগকারী বা মালিক নির্ধারিত SPID (Public Digital Identity System) ই-মেইল থেকে যাকে তিনি নিয়োগ করতে চান তার নাম, পাসপোর্ট ও অন্যান্য তথ্য উল্লেখ করে ইতালির স্থানীয় Prefettura (স্থানীয় প্রশাসনিক অফিস)-তে ছাড়পত্রের (Nulla Osta) জন্য আবেদন করতে পারবেন।
এ আবেদনের জন্য নিয়োগকারীবা মালিকের খরচ ১৬ (ষোল) ইউরো বা সমপরিমাণ বাংলাদেশি টাকা। তবে আবেদন দাখিলের জন্য ইতালির কোন হেল্প ডেস্ক এর সহায়তা নিলে তার জন্য সার্ভিস চার্জ বাবদ একটি ফি পরিশোধ করতে হতে পারে। যা ক্ষেত্র বিশেষে ৩০০ (তিনশত) ইউরো পর্যন্ত হতে পারে। আবেদনের জন্য এছাড়া আর কোন খরচ নেই। এই প্রক্রিয়ায় ইতালির নিয়োগদাতারা যার আবেদন আগে দাখিল করা হবে, তার আবেদন আগে বিবেচনা করা হবে।
কর্মী নির্বাচিত হলে যেসব কাজ বা নিয়ম অনুসরণ করতে হবে:
নিয়োগকারী বা মালিকের আয় ও অন্যান্য বিষয়াদি পর্যালোচনা করে যোগ্য বিবেচিত হলে যে ব্যক্তির জন্য আবেদন করা হয়েছে Prefettura (স্থানীয় প্রশাসনিক অফিস)- হতে তার নামে Nulla Osta ইস্যু করা হবে। এই Nulla Osta টি বাংলাদেশে ঐ ব্যক্তির নিকট প্রেরণ করা হবে। যার নামে Nulla Osta ইস্যু হয়েছে তিনি এই Nulla Osta নিয়ে ঢাকাস্থ ইতালিয়ান দূতাবাসে ভিনার জন্য আবেদন করবেন। ভিসা নিয়ে ইতালিতে এসে নিয়োগকারী বা মালিকের সাথে যোগাযোগ করে Prefettura-তে গিয়ে কাজের চুক্তি সম্পাদন করবেন এবং Permesso di Soggiorno (ওয়ার্ক পারমিট) – এর জন্য আবেদন করবেন। কাজের চুক্তি না করলে এবং সোজর্ণ্য না পেলে শুরু থেকেই ঐ ব্যক্তি অবৈধ হিসেবে বিবেচিত হবেন।
বাংলাদেশসহ ৩৩ টি দেশে থেকে কর্মী নেয়ার জন্য নিয়োগদাতাদের অনুমোদন দিবে ইতালি সরকার:
সিজনাল ভিসায় ৪৪,০০০ কর্মী নিয়োগের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে যারা বিগত ৫ বছরের মধ্যে ইতালিতে সিজনাল ভিসায় নিয়োগ পেয়েছিলেন এবং প্রক্রিয়া মেনে নিজ দেশে ফিরে গিয়েছেন, তাদের জন্য ১৫০০ জনের কোটা নির্ধারিত থাকবে। সিজনাল ভিসায় কৃষি কাজ করার জন্য কোটা বরাদ্দ আছে ২২,০০০ জনের। এই কৃষি কাজের জন্য বাংলাদেশসহ ৩৩টি দেশ থেকে এই কর্মী নিবে ইতালি।
নন-সিজনাল, স্পনসর বা উদ্যোক্তা ভিসায় ৩৮ হাজার ৭০৫ জন কর্মী নিয়োগের সুযোগ রয়েছে। নন-সিজনাল ভিসায় মালবাহী পরিবহণের জন্য চালক, নির্মাণ শিল্প, পর্যটন ও আবাসন ব্যবস্থাপনা, কারিগরি, টেলিযোগাযোগ, জাহাজ নির্মাণ, খাদ্য সামগ্রী বিক্রিয় ও ব্যবস্থাপনা সেক্টর সমূহে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশসহ ৩৩টি দেশ অন্তর্ভূক্ত আছে। এই ৩৩টি দেশের জন্য ৩০ হাজার ১০৫টি কোটা সংরক্ষিত থাকবে। তবে প্রতিটি দেশের জন্য পৃথক করে কোন কোটা নির্ধারণ করা হয়নি।
ইতালিতে অবস্থানরত সিজনাল ভিসায় এবং শিক্ষা বা প্রশিক্ষণ ভিসায় আগত ৬ হাজার ৬০০ মনের ভিসা পরিবর্তন করে স্থায়ী কর্মী ভিসার (নন সিজনাল ভিসায়) রুপান্তর করারা সুযোগ থাকবে।
বাংলাদেশ দূতাবাসের বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, ফ্লুসি ডিক্রির আওতায় নিয়োগ প্রক্রিয়া ইতালির নিয়োগকারী এবং আগ্রহী কর্মীর মধ্যে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে দূতাবাসের কোন সম্পৃক্ততা নেই।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post