কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে এক প্রবাসীর ৫৯ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। ওই প্রবাসীর দাবি, টাকা ফেরত চাওয়ায় চেয়ারম্যান ও তার অনুসারীরা তাকে হত্যার পর লাশ গুম করার হুমকি দিয়েছেন। এ ঘটনায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে কুমিল্লা নগরীতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন প্রবাসী হারুনুর রশিদ হারুন।
মো. হারুনুর রশিদ হারুন নামের ওই সৌদি আরব প্রবাসী নাঙ্গলকোট উপজেলার বাঙ্গড্ডা ইউনিয়নের বাঙ্গড্ডা গ্রামের হাজী হেদায়েত উল্লাহর ছেলে।
যার বিরুদ্ধে তিনি অভিযোগ করেন তিনি মো. সাইফুল ইসলাম, বাঙ্গড্ডা ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান। সাইফুল ইউনিয়ন যুবলীগের সভাতির পদে ছিলেন। গত নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করায় তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে হারুনুর রশিদ বলেন, এলাকার ছোটভাই হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে সাইফুলের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক ছিল। ২০১৮ ও ২০১৯ সালে সাইফুল কয়েকটি ধাপে তার ৫৯ লাখ টাকার বেশি হাতিয়ে নেন। এরপর থেকে টাকা চাইলে তিনি বিভিন্ন তালবাহানা করতে থাকেন।
“২০১৯ সালে একবার টাকার জন্য চাপ দিলে সাইফুল আমাকে পাশের মুন্সিরহাট বাজারে ডেকে নেয়। সেখানে নিয়ে মাদক সেবনরত অবস্থায় সাইফুল ও তার বাহিনীর সন্ত্রাসীরা আমার উপর অতর্কিত হামলা চালায়। তারা আমাকে ব্যাপক মারধর করে বলে, টাকা চাইলে প্রাণে মেরে ফেলবে।” সে সময় সাইফুল যুবলীগের সভাপতি ছিলেন বলে জানান হারুন।
প্রবাসী হারুন আরও বলেন, ওই ঘটনার পর তিনি বিষয়টি এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের এবং তখনকার চেয়ারম্যান শাহজাহান মজুমদারকে অবহিত করেন। এরপর কয়েক দফা সালিশ-দরবার হলেও টাকা ফেরত দেননি সাইফুল।
“কয়েক বছর আগে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে সাইফুল এখন আমাকে হুমকি দিচ্ছে আমি যাতে টাকার কথা ভুলে যাই; না হলে সে আমাকে প্রাণে মেরে লাশ গুম করে ফেলবে। আমার পরিবারের বিভিন্ন ক্ষতিসাধন করবে।”
এরপর হারুন টাকা ফেরত চাওয়া অব্যাহত রাখলে সাইফুল হয়রানিমূলকভাবে বিভিন্ন মামলায় তাকে আসামি করে আসছেন বলে হারুনের অভিযোগ।
এছাড়া চেয়ারম্যান সাইফুল সংবাদ সংম্মেলন করে হারুনকে ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যায়িত করেছেন বলেও হারুনের অভিযোগ। “বর্তমান চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম ও তার বাহিনীর ভয়ে আমি জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত,” বলেন হারুন।
সংবাদ সম্মেলনে হারুন আরও বলেন, বর্তমানে সাইফুল একজন জনপ্রতিনিধি হয়ে জনবিরোধী কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি এলাকার মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ থেকে সকল প্রকার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে কথা বলতেও মানুষ ভয় পায়। কিছু বললেই মানুষের উপর নির্যাতন শুরু করেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলামের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলে বন্ধ পাওয়া গেছে। পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে তিনি বর্তমানে দেশের বাইরে রয়েছেন। এরপর তার হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে কল করা হলে তিনি দুইবারে কলটি রিসিভ করেন। এরপর সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর না দিয়েই কল কেটে দেন। এরপর বেশ কয়েকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post