বিদেশে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে অতিরিক্ত সময় কাজ করাসহ নানা কারণে বছরে তিন হাজারের বেশি শ্রমিক লাশ হয়ে দেশে ফেরেন। কোনো কোনো বছর এই সংখ্যা চার হাজারও ছাড়িয়ে যায়। শুধু মৃত্যু নয়, অনেকে কর্মক্ষমতা হারিয়ে দেশে ফেরেন। সিঙ্গাপুরে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় পক্ষাঘাতগ্রস্ত হওয়ার চার বছরেরও বেশি সময় পর সাত কোটি ৫৪ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন এক বাংলাদেশি শ্রমিক। তাকে ওয়েস্টগেট টাওয়ারের সাবসিডিয়ারি ম্যানেজমেন্ট কর্পোরেশন বা এমসিএসটি থেকে এই ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম স্ট্রেট টাইমস।
জনেদ নামের ৪৭ বছর বয়সী ওই বাংলাদেশি ২০১৮ সালের ৮ নভেম্বর জুরং ইস্টের অফিস টাওয়ারে যান্ত্রিক ও বৈদ্যুতিক কক্ষে একটি ওভারহেড চিলার পরিদর্শন করতে গিয়েছিলেন। তিন দশমিক সাত মিটার উচ্চতার ওই চিলার থেকে তিনি পড়ে গিয়ে মেরুদণ্ডে আঘাত পান। দুর্ঘটনার পর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে ৯১ দিন এবং আলেকজান্দ্রা হাসপাতালে ১৫২ দিন চিকিৎসা শেষে তাকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়।
পরবর্তীতে তার প্রয়োজনীয় বীমা না থাকা এবং চিকিৎসা বিল পরিশোধে ব্যর্থতার জন্য আদালতের মুখোমুখি হতে হয় নিয়োগকর্তা নিউটেক ইঞ্জিনিয়ারিংকে। অবশেষে আদালতের রায় অনুযায়ী ক্ষতিপূরণের অর্থ থেকে ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালকে এক লাখ ৪৯ হাজার ২৮১ দশমিক ২০ সিঙ্গাপুরিয়ান ডলার এবং আলেকজান্দ্রা হাসপাতালকে ৫৮ হাজার ৮১ ডলার বিল হিসেবে দেওয়া হবে।
অভিবাসন বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রবাসে মারা যাওয়া শ্রমিকদের বড় একটি অংশেরই মৃত্যু হয় স্ট্রোকে। এরপর রয়েছে হৃদরোগ ও কিডনির সমস্যা। তা ছাড়া আছে কর্মক্ষেত্রে মৃত্যু ও সড়ক দুর্ঘটনা, অসুস্থতা, আগুনে পুড়ে মৃত্যু, আত্মহত্যা বা খুন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্রবাসীদের মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখা হয় না। মেডিকেল রিপোর্টে মৃত্যুর যে কারণ উল্লেখ করা হয়, সেটাই মেনে নিতে হয়। এমনকি শরীরে জখম বা নির্যাতনের চিহ্ন থাকলেও তা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ থাকে না। দূতাবাসগুলোও সেই অভিযোগ নিয়ে সক্রিয় হয় না। এ ক্ষেত্রে দূতাবাসগুলোকে আরো সক্রিয় হতে হবে এমন মত অভিবাসন বিশেষজ্ঞদের।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post