বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে যেন শনির নজর পড়েছে। একের পর এক বড় ধরণের দুর্ঘটনার মুখোমুখি হচ্ছে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এই প্রতিষ্ঠান। অদক্ষ পাইলট দিয়ে বিমান চালানো, চলন্ত ফ্লাইটে পাইলটের ঘুম সহ সাম্প্রতিক সময়ে নানা অনিয়ম নিয়ে খবরের শিরোনামে রয়েছে বিমান। এরই মধ্যে আজ কলকাতা থেকে ঢাকাগামী বিমানের একটি যাত্রীবাহী ফ্লাইট ঢাকায় জরুরি অবতরণ করেছে। মাঝ আকাশে ফ্লাইটের একটি চাকার টায়ার ফেটে গেলে এটি জরুরি অবতরণ করার সিদ্ধান্ত নেয়। সোমবার (৬ মার্চ) সকালে বিজি-৩৯২ ফ্লাইটটিতে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, বিমানের পেছনের ডান পাশের টায়ার ফেটে গেলে এটি জরুরি অবতরণ করে। যাত্রীরা সবাই নিরাপদে আছেন। ফ্লাইটে মোট ৭২ জন যাত্রী ছিলেন। বিমানবন্দর সূত্র জানায়, ফ্লাইটটি কানাডা থেকে আমদানি করা ড্যাশ ৮-৪০০ মডেলের এয়ারক্রাফট দ্বারা পরিচালিত হচ্ছিল। এটি ভারতের স্থানীয় সময় ৮টা ৪৯ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়। সকাল পৌনে ১০টার দিকে জরুরি অবতরণের সিদ্ধান্ত নিলে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্রস্তুতি সম্পন্ন করে। পরে সকাল ১০টায় এটি নিরাপদে অবতরণ করে। এদিকে অবতরণের সময় যেকোনো বড় দুর্ঘটনা এড়াতে বিমানবন্দরে ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ইউনিট উপস্থিত ছিল। তবে তাদের কাজ করতে হয়নি। এর আগেরদিন অর্থাৎ রোববার মাঝ আকাশে ফ্লাইটের নোজ হুইল টায়ার বার্স্ট (চাকা ফেটে যাওয়া) হওয়ায় বরিশাল থেকে ঢাকাগামী একটি ক্যালিব্রেশন ফ্লাইট ঢাকায় জরুরি অবতরণ করে।
এছাড়াও গত ১৬ জানুয়ারি সকালে বিমানের ঢাকা-জেদ্দা রুটের বিজি ৩৩৬ ফ্লাইটটি ফিরছিল ঢাকায়। বিমানটি যখন ভারতের আকাশে, তখন হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক করে বসেন জেদ্দা থেকে আসা কবীর আহমেদ নামে এক প্রবাসী। প্রয়োজন পড়ে কাছাকাছি কোন বিমানবন্দরে দ্রুত অবতরণের। কিন্তু সিদ্ধান্ত নেবে কে?
বিমানের পাইলট ঘুমাচ্ছেন বাঙ্কে। আর ককপিটে লাইসেন্সহীন বৈমানিক পরিদর্শক। এমন অবস্থায় জরুরি অবতরণের সঠিক সিদ্ধান্ত না নিতে পারায় অসুস্থ হয়ে এক প্রবাসীর মৃত্যু হয়। জানা যায়, চলন্ত বিমানে একজন পরিদর্শক থাকেন যিনি ককপিটের পেছনে থেকে সবকিছু দেখভাল করেন যাত্রীদের। কিন্তু ১৬ জানুয়ারি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে ঘটে অন্যরকম। নিয়ম অনুযায়ী, জরুরি অবতরণের সিদ্ধান্ত মূল পাইলটের দেয়া কথা। কিন্তু সে সময় পাইলট দিলদার আহমেদ তোফায়েল ছিলেন বাঙ্কে বিশ্রামে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post