বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে আলোচিত ইস্যু হচ্ছে তুরস্ক। ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে চারিদিকে মৃত্যুমিছিল, শুধুই হাহাকার। অথচ এর চেয়েও ভয়াবহ ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ। আর এটি বাংলাদেশে হলে মারা যাবেন কোটি মানুষ। মূলত পৃথিবীর ভূ-পৃষ্ট অনেকগুলো টেকটোনিক প্লেটের মাধ্যমে বিভক্ত, যা নিচের নরম পদার্থের ওপরে ভাসছে। সারা পৃথিবীতে এরকম বড় সাতটি প্লেট এবং অসংখ্য ছোট ছোট সাব-প্লেট রয়েছে। আর এসব প্লেটের নড়াচড়ার ফলে যেসব দেশ বা এলাকা সেই প্লেটগুলোর ওপরে অবস্থিত থাকে সেখানে ভূমিকম্প দেখা যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, যেসব স্থানে একটি প্লেট এসে আরেকটি প্লেটের কাছাকাছি মিশেছে বা ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে সেটাকে বলা হয় ফল্ট লাইন। আর এই ফল্টলাইনের আশেপাশের দেশগুলোই থাকে ভূমিকম্পের সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে।
বাংলাদেশের ভূতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উত্তরে তিব্বত সাব-প্লেট, ইন্ডিয়ান প্লেট এবং দক্ষিণে বার্মা সাব-প্লেটের সংযোগস্থলে বাংলাদেশের অবস্থান। বাংলাদেশের সিলেট থেকে চট্টগ্রাম অঞ্চলে এই প্লেটগুলো থাকার কারণে এসব এলাকা ভূমিকম্পের বড় ঝুঁকিতে রয়েছে। ইন্ডিয়া প্লেট ও বার্মা প্লেটের সংযোগস্থলে দীর্ঘসময় ধরে কোন ভূমিকম্পের শক্তি বের না হওয়ায় সেখানে ৪০০ থেকে হাজার বছর ধরে শক্তি জমা রয়েছে। ইন্ডিয়া প্লেট পূর্ব দিকে বার্মা প্লেটের নীচে তলিয়ে যাচ্ছে, আর বার্মা প্লেট ক্রমেই পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ফলে সেখানে যে পরিমাণ শক্তি জমা হচ্ছে, তাতে আট মাত্রার অধিক ভূমিকম্প হতে পারে।
বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন, সুনামগঞ্জ, জাফলং অংশে ডাউকি ফল্টের পূর্বপ্রান্তেও ভূমিকম্পের ঝুঁকি রয়েছে। তবে এই ভূমিকম্প একবারে হতে পারে, আবার কয়েকবারেও হতে পারে। তবে যে কোনো সময় বড় ধরনের ভূমিকম্প হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু কবে বা কখন হবে, তা নিয়ে বিজ্ঞানীদের এখনো কোন ধারণা নেই। সবশেষ, ১৮৮৫ সালে ঢাকার কাছে মানিকগঞ্জে ৭.৫ মাত্রার একটি ভূমিকম্পের ইতিহাস রয়েছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post