স্মৃতিশক্তি হারিয়ে সৌদি আরব থেকে ফেরত আসা প্রবাসী বৃদ্ধ আবুল কাশেম তার পরিবার খুঁজে পেয়েছেন। চট্টগ্রামের হালিশহর এলাকায় তার পরিবারের বাস। গতকাল বুধবার ঢাকায় পৌঁছান পরিবারের সদস্যরা। ২৫ বছর পর বাবার সঙ্গে দেখা হয় সন্তানদের। বিকালে বাবাকে বুঝে নিয়ে চট্টগ্রামে উদ্দেশে রওনা দেন আবুল কাশেমের সন্তানরা।
গত শুক্রবার দিবাগত রাতে সৌদি আরব থেকে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন বৃদ্ধ আবুল কাশেম। পাসপোর্ট ছাড়াই একটি ট্রাভেল পাস নিয়ে ঢাকায় পৌঁছান তিনি। বলতে পারছিলেন না নিজের ঠিকানাও। পরে তাকে বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার সেন্টারে পাঠায় বিমানবন্দর
আবুল কাশেমকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর উপলক্ষে রাজধানীর উত্তরার ব্র্যাক সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানিয়ে ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের প্রধান শরিফুল হাসান বলেন, আবুল কাশেম সম্ভবত ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রংশ রোগে আক্রান্ত। স্ত্রী ও তিন ছেলের নাম বলতে পারলেও ঠিকানা মনে করতে পারছিলেন না। বলেছিলেন, ঈদগাহ মাঠের বউ বাজার এলাকায় তার ছেলের তরকারির দোকান আছে।
তিনি জানান, আঞ্চলিক ভাষা শুনে বুঝতে পেরেছিলাম তার বাড়ি চট্টগ্রাম অঞ্চলে। ব্র্যাক তার ছবিসহ শত শত পোস্টার চট্টগ্রামে বিলি করে। তা দেখে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ২৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুস সবুর লিটন আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তার সহযোগিতায় আবুল কাশেমের ছেলে সবজি ব্যবসায়ী নূর হাসানের খোঁজ মেলে। পরে আবুল কাশেমের অন্য সন্তান ও তার স্ত্রীর সন্ধান পাওয়া যায়।
আবুল কাশেমের বড় ছেলে নূর হাসান বাবাকে ফিরে পেয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ব্র্যাকসহ সবার কাছে কৃতজ্ঞতা। অনেকদিন ধরে বাবার সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ ছিল না। জানতাম না তিনি সৌদির কোথায় আছেন। তিনি যে দেশে এসেছেন, তাও জানতাম না।
বাবাকে নিতে বুধবার সকালে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় আসেন আবুল কাশেমের স্ত্রী-সন্তানরা। তার মেয়ে পারভীন আক্তার বলেন, বাবা ২৫ বছর আগে সৌদি আরব যায়। তখন আমার ছোট বোন রুমা মায়ের পেটে। বাবার সঙ্গে আমাদের স্মৃতি খুব কম। বাবাকে ফেরত পাওয়ার অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন।
হস্তান্তরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বিকেলে আবুল কাশেমকে নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা তার সন্তানরা। এসময় এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিয়াউল হক, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থাপক স্কোয়াড্রন লিডার মোঃ রাসেল তালুকদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post