এশিয়ার টপ টেন এয়ারলাইন্সের তালিকায় বিমান বাংলাদেশকে নিয়ে যেতে চান প্রতিষ্ঠানটির নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শফিউল আজিম। তিনি বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে ডিজিটাল থেকে ‘স্মার্ট বাংলাদেশে’ রূপান্তরের কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর স্মার্ট বাংলাদেশে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে স্মার্ট এয়ারলাইন করতে চান তিনি। মঙ্গলবার বিমানের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে কারও স্বার্থসিদ্ধির জায়গা হতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও সফিউল আজিম। একই সঙ্গে চলতি বছরে বিমানকে এশিয়ার সেরা ১০ এয়ারলাইন্সের মধ্যে জায়গা করে নেওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।
সফিউল আজিম বলেন, এবার সেরা ১০ এ জায়গা পেলে পরবর্তী বছরে বিমান সেরা তিনে নিয়ে যেতে সক্ষম হবো। সেই পরিকল্পনা নিয়ে আমরা কাজ করছি। সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে আমরা দিকনির্দেশনা নিচ্ছি। কোনো কাজে যদি কোনো ব্যত্যয় ঘটে, তা সংশোধন করছি।
মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের হ্যাঙ্গার পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন সফিউল আজিম। আগামীকাল বুধবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ৫১ বছর পূর্তি উপলক্ষে সাংবাদিকদের নিয়ে এই হ্যাঙ্গার পরিদর্শন করেন তিনি।
বিমানের আধুনিকায়ন প্রসঙ্গে শফিউল আজিম বলেন, ‘আমরা পুরোপুরি ওয়েব পেজ টিকেটিং সিস্টেমে যাবো এবং মার্কেটিং আরও উন্নত করা হবে। জাতির পিতার হাত ধরে বিমানের যাত্রা শুরু হয়েছিল। বিমানের ৫১ বছরপূর্তি হলো। প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে আমরা বিমানের নবযাত্রা শুরু করেছি। ১৮টি নিজস্ব নতুন উড়োজাহাজ দিয়ে কার্যক্রম চালাচ্ছি। আমাদের ড্রিমলাইনার, ৭৭৭, ৭৩৭ উড়োজাহাজ আছে। উড়োজাহাজগুলার বয়সও কম। বাংলাদেশের পাইলটদের সুনাম সারা বিশ্বে।’
তিনি বলেন, ‘গত কয়েক বছরে প্রধানমন্ত্রী নিজেই বিমানের সব বিষয়ে দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। তার (প্রধানমন্ত্রীর) দিক নির্দেশনার প্রতিফলনের জন্য দরকার বিমানের আধুনিকায়ন। একইসঙ্গে বিমান যারা পরিচালনা করবেন, তাদের মধ্যে সুসাশন নিশ্চিত করা। বিমানে আমরা যারাই কাজ করি, তাদের জবাবদিহি নিশ্চিত করা। ভালো কাজের জন্য পুরস্কৃত করা, কোনো ধরনের ব্যত্যয় হলে বিচার করা।’
সাধারণ মানুষের আস্থা ফেরানোর বিষয়ে বিমানের প্রধান নির্বাহী বলেন, ‘এটা পারস্পরিক দায়িত্ববোধের বিষয়। বিমানের ক্ষতিকে নিজের ও রাষ্ট্রের ক্ষতি ভাবতে হবে। লাভ মানে আমার লাভ। এটাতে বিমান কোনোভাবেই পিছিয়ে থাকবে না। বিমান শতভাগ অঙ্গীকার পূরন করবে। যাত্রীদের সর্বোচ্চ সুবিধা দেওয়া হবে।’
যাত্রীসেবা প্রসঙ্গে বিমানের এমডি বলেন, ‘কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে গাফিলতি করলে তা সংশোধনের চেষ্টা করছি। গত বছর আমাদের যাত্রী পরিবহণের টার্গেট ছিল ৭১ শতাংশ, সেখানে আমরা ৩ শতাংশ বেশি অর্থাৎ ৭৪ শতাংশ যাত্রী পরিবহণ করেছি। চাইলেই ১০০ সিটে ১০০ জনকে নেওয়া যায় না। আন্তর্জাতিক কিছু বাধ্যবাধকতা রয়েছে, কিছু সায়েন্টিফিক বিষয় রয়েছে।’
পাইলট নিয়োগ প্রসঙ্গে শফিউল আজিম বলেন, ‘গত সপ্তাহে পাইলট নিয়োগের প্রক্রিয়া শেষ করেছি। কেউ অসুস্থ বা অন্য কারণে ফ্লাই করতে না পারলেও সমস্যা হবে না। আমাদের এখন পর্যাপ্ত পাইলট থাকবে। চলতি বছরে নতুনভাবে বিমানকে দেখা যাবে।’
নতুন রুট চালুর বিষয়ে বিমানের এমডি বলেন, ‘জাপানের নারিতায় ফ্লাইট শিগগিরই শুরু হবে। প্রায় সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জিএসও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, হজ মৌসুমের পরপরই নারিতায় ফ্লাইট পরিচালনা করা যাবে। নিয়ইউয়র্ক ফ্লাইট চালানোর কাজ শুরু করেছি, টরেন্টোতে ফ্রিকোয়েন্সি বাড়ানোর কাজ চলছে।’
অভ্যন্তরীণ রুটে ডায়নামিক রিশিডিউল করা হচ্ছে বলে জানান বিমানের এমডি। তিনি বলেন, ‘আমাদের ক্যাপাবিলিটি বাড়ানোর জন্য বিমানবহরে উড়োজাহাজের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি কেবিন ক্রু, পাইলট থেকে শুরু করে গ্রাউন্ড সার্ভিস আমরা বাড়াচ্ছি। উড়োজাহাজের আন্ডার ইউটিলাইজ থাকার সুযোগ নেই।’
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post