প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রবাসী নাজমাকে বিয়ে করে সৌদি রিয়ালসহ প্রায় ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে আরেক সৌদি প্রবাসী যুবক। পরে তিনি সর্বস্বান্ত হয়ে পড়লে ওই বিয়ে অস্বীকার করেছেন শরণখোলা উপজেলার ধানসাগর ইউনিয়নের বিধানসাগর গ্রামের বাসিন্দা নুরুজ্জামান খন্দকারের ছেলে মো. বেল্লাল খন্দকার। লিখিত অভিযোগে পিরোজপুর জেলার জিয়ানগর উপজেলার কালাইয়া গ্রামের আ. ছালাম হাওলাদারের মেয়ে সৌদি প্রবাসী নাজমা আক্তার জানান, ‘গত ২০০৬ সাল থেকে সৌদি আরবের মক্কা নগরীর আব্দুল্লাহ মেডিকেল হাসপাতালে নার্সিং-এর কাজ করেন।
২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে বেল্লাল খন্দকারের সঙ্গে প্রথম পরিচয় হয়। আমি যে হাসপাতালে চাকরি করি সেই হাসপাতালের চাকরিজীবীদের বহনকারী গাড়ির ড্রাইভার হলেন বেল্লাল। গাড়িতে আনা-নেয়ার পথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক সময় তার সম্মতিতে গ্রামের বাড়িতে থাকা স্বামীকে তালাক দেয় এবং ২০২১ সালে বেল্লাল খন্দকারের সঙ্গে ইসলামী শরিয়া মতে বিয়ে হয়। বেল্লালের অন্য ৩টি ভাই সৌদি আরব থাকেন। তারা এ বিয়ের বিষয়টি অবগত আছেন। বিয়ের পর আমরা একই বাসায় স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করি। আমার বেতনের ৩৫০০ রিয়ালের অর্ধেকের বেশিটা সে নিয়ে নিতো।
তার আরও এক স্ত্রী ও দুইটি সন্তান রয়েছে। তাদের খরচ মিটানোর জন্য প্রায়ই আমার কাছ থেকে টাকা নিতো। বেল্লাল বাড়িতে বিল্ডিং নির্মাণ করবে ও জমিজমা ক্রয় করবে- এমন কথা বলে গত ২ বছরে সৌদি রিয়ালসহ প্রায় ২৫ লাখ টাকা আমার কাছ থেকে নিয়ে নেয়। এমনকি তার স্ত্রী, সন্তান ও মা-বাবার সঙ্গে মোবাইল ফোনে পরিচয় করিয়ে দেয়ার পর তার স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে প্রায় ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা বাংলাদেশে পাঠাই এবং তার বাবাকে পঞ্চাশ হাজার টাকা দেই। বেল্লাল আমাকে বাংলাদেশে যেতে বললে তার কথামতো আমি গত আগস্ট মাসে বাংলাদেশে চলে আসি।
নিজ এলাকা জিয়ানগরে এসে পরের দিন ধানসাগর এলাকায় বেল্লালের বাড়িতে চলে আসি। তার মা-বাবার কাছে বিষয়টি খুলে বলি। বেল্লাল সৌদি থেকে বাড়িতে আসার দিন তারিখ চূড়ান্ত হলে আগের দিন তার মা-বাবা ও স্ত্রী মিলে গত ২৩শে ডিসেম্বর আমাকে তারা বাড়ি থেকে বের করে দেয় এবং বেল্লাল আমাকে বিয়ে করেনি বলে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। মাঝে মধ্যে মেসেঞ্জারে হায়-হ্যালো করে। আমি তার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি আমাকে ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ জীবননাশের হুমকি দেন।
আমি স্ত্রীর অধিকার চাই এবং প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু বিচার দাবি করি। তবে এলাকাবাসী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বেল্লাল খন্দকার এলাকায় একটি চালাক-চতুর ও ঠকবাজ প্রকৃতির বলে মন্তব্য করেন। বিষয়টি সরজমিন জানতে ধানসাগরের বেল্লালের বাড়িতে গেলে বেল্লালকে পাওয়া যায়নি। তবে তার মা বিয়ের বিষয়টি শুনেছেন বলে জানান। বেল্লাল মোবাইল ফোনে বিয়ের বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন আমি নাজমা নামে কাউকে বিয়ে করিনি। কোনো টাকা-পয়সা নেইনি বলেই মোবাইল ফোন কেটে দেন।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post