দিন যতই যাচ্ছে দেশে ডলার সংকট ততই বাড়ছে। আর এই ডলার সংকটে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমছে। এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) আমদানি বিল ১ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করে মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) তা সমন্বয় করা হয়। ফলে রিজার্ভ কমে দাঁড়িয়েছে ৩৪ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলার। যা গত ৪ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। ডলার আহরণের পরিমাণ না বাড়লে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও কমার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। আর তা বৈধ পথে আসা প্রবাসী আয় দিয়েই সম্ভব বলে মনে করেন তারা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৩২ দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলার। এরপর থেকে তা ধারাবাহিকভাবে বাড়ে। ২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৯ বিলিয়ন ডলারের ঘরে পৌঁছায়। ওই বছরের ৮ অক্টোবর ৪০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে। গত বছরের আগস্টে প্রথমবারের মতো ৪৮ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে নতুন মাইলফলক সৃষ্টি করে। এরপর থেকে রিজার্ভ কমতে শুরু করে। আজ তা প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৪ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলার।
ডলার সংকটের মধ্যেই নেতিবাচক ধারায় রেমিট্যান্স প্রবাহ। ধারাবাহিকভাবে কমছে প্রবাসী আয়। চলমান এ পরিস্থিতিতে বৈধ পথে রেমিট্যান্স বাড়াতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। শিথিল করা হয়েছে নানা শর্ত। তবুও বাড়ছেনা রেমিট্যান্স। সরকারের পক্ষথেকে নানা সুযোগ সুবিধা দেওয়া হলেও হুন্ডিতে ঝুঁকছেন প্রবাসীদের একটা অংশ। এক্ষেত্রে তাদের দাবী, দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রবাসীদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা। এ নিয়ে ক্ষোভ আছে প্রবাসীদের মধ্যে। দেশে ফিরে আসলে বিমানবন্দর থেকে শুরু হয় দুর্ভোগের পাহাড়।
পদে পদে হয়রানি, দুর্ব্যবহার সব মিলিয়ে প্রবাসীদের এই ক্ষোভ। আর তা ঘিরে অনেকেই বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে নিরুৎসাহিত হন। মধ্যপ্রাচ্য থেকে কর্মীরা বিপুল অর্থ পাঠিয়ে অর্থনীতিকে গতিশীল রেখেছেন। অতিরিক্ত অর্থ খরচ করে বিদেশে গিয়েও আয়ের বেশিরভাগই চলে যায় ঋণ শোধ করতে। আবার আবার এই কর্মীরা বিদেশে দূতাবাসগুলোতে তাদের প্রয়োজনীয় কাজে গেলে যথাযথ সাহায্য পান না এমন অভিযোগ প্রবাসীদের। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তাদের অবমাননা ও তাচ্ছিল্যের শিকার হতে হয়।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমানে যে রিজার্ভ আছে, তা নিয়ে এই মুহূর্তে কোনো শঙ্কা নেই। তবে তা আরও কমে গেলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের শঙ্কার কারণ হতে পারে। তাই রিজার্ভ ধরে রাখতে প্রয়োজনে ঋণের সুদের হার বাড়াতে হবে। বৈধ চ্যানেলে প্রবাসী আয় বাড়াতে হুন্ডিতে অর্থ প্রেরণ নিরুৎসাহিত করতে হবে। সেই সঙ্গে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি বৃদ্ধিতে সরকারের নজর দেওয়া উচিত। অন্যদিকে প্রবাসীরা বলছেন, দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রবাসীদের মর্যাদা দেওয়া হলে হুন্ডি ছেঁড়ে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাবেন প্রবাসীরা। এ ব্যাপারে সরকারের পক্ষথেকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবী প্রবাসীদের।
আরো পড়ুন:
সৌদি থেকে বাংলাদেশে এলো প্রবাসী হারুনের ‘লাশের টুকরো’
প্রায় ২০ লাখ পিস ইয়াবাসহ সৌদিতে বাংলাদেশিসহ গ্রেফতার ৯
১৪ লাখ কর্মী নিবে কানাডা, মিলবে স্থায়ীভাবে থাকার সুযোগ
ইত্যাদি পার্টি, মুসকিল লীগ, গরীব পার্টি ইসির নিবন্ধন চায়
প্রবাসে মারা গেলে সরকারিভাবে মরদেহ আনবেন যেভাবে
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post