ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্যে যাচ্ছেন বিশ্ব নেতারা। বাদ যায়নি ওমানও। দেশটির সুলতান হাইথাম বিন তারেক ইতিমধ্যেই লন্ডন পৌঁছেছেন। দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বলছে, রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ ও রাজা তৃতীয় চার্লসকে অভিনন্দন জানাতে শুক্রবার (১৬-সেপ্টেম্বর) যুক্তরাজ্যে পৌঁছান সুলতান। তার সফর সঙ্গী হিসেবে আরো আছেন রয়্যাল কোর্টের দেওয়ান মন্ত্রী সাইয়্যেদ খালিদ বিন হিলাল আল বুসাইদি এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রী সাইয়্যেদ বদর বিন হামাদ আল বুসাইদি।
এদিকে, বাংলাদেশ থেকেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় সফরে বর্তমানে অবস্থান করছেন যুক্তরাজ্যে। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সিংহাসনে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে আসীন ও বিশ্বের প্রবীণতম রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে বিশ্বের বহু দেশের সরকারপ্রধানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তবে তিনটি দেশের সরকারপ্রধানকে এই তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। আমন্ত্রণ না পাওয়া ওই তিনটি দেশের মধ্যে রয়েছে রাশিয়াও।
এদিকে, ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্যে বিশ্ব নেতাদের আগমন ঘিরে স্মরণকালের সবচেয়ে কঠোর নিরাপত্তার আয়োজন করছে লন্ডন পুলিশ। বিবিসি লিখেছে, রানির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার অনুষ্ঠান টেলিভিশনে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ দেখবে, যা আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে হামলার উসকানি যোগাতে পারে। এ কারণে অভূতপূর্ব নিরাপত্তার প্রয়োজন পড়ছে।
রানির কফিন এখন রাখা হয়েছে ওয়েস্টমিনস্টার হলে। রাস্তায় লাইন ধরে সেখানে রানির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে যাচ্ছে হাজারো মানুষ। শেষ বিদায়ের ক্ষণ যত ঘনিয়ে আসছে, মানুষের ভিড়ও তত বাড়ছে। কফিন একনজর দেখতে প্রায় ৮ কিলোমিটার পর্যন্ত লম্বা লাইন দেখা গেছে। অনেকেই ৯ থেকে ১০ ঘণ্টা অপেক্ষার পর দেখতে পান রানিকে বহনকারী কফিন। শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় স্মরণ করেন দ্বিতীয় এলিজাবেথকে। ব্রিটেনের বিভিন্ন জায়গা এমনকি সারা বিশ্ব থেকে দলে দলে লোক এ জন্য লন্ডনে আসছেন।
সোমবার শেষকৃত্যের সেই আয়োজনে যোগ দিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, জাপানের রাজা-রানি, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট, কাতার, ওমান, ইসরায়েল, ভুটানসহ বিভিন্ন দেশের নেতারা লন্ডনে যাচ্ছেন। ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবিতে রানিকে শ্রদ্ধা ও বিদায় জানাতে যাবেন বিশ্ব নেতারা; কিন্তু সেখানে উন্মুক্ত শেষকৃত্যানুষ্ঠান ঘিরে স্থায়ী কোনো নিরাপত্তা বেষ্টনী না থাকায় বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে।
রানিকে যেখানে চিরনিদ্রায় শায়িত রাখা হবে, সেই ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবির বিশাল এলাকায় নিরাপত্তা জোরদারে সবকিছু খতিয়ে দেখবে পুলিশ। প্রতিটি ম্যানহোলের ঢাকনা খুলে পরীক্ষা করে দেখার পর আবার বন্ধ করে দেওয়া হবে, ল্যাম্পপোস্টগুলো খুলে পরীক্ষা করা হবে। কোথাও কোনো বিস্ফোরক ডিভাইস রাখা হয়েছে কিনা তাতে নজর দেওয়া হবে। ডগ স্কোয়াড দিয়ে পুরো এলাকায় তল্লাশি চালানো হবে।
মঙ্গলবার রাত থেকে গুর্খা ও প্যারাট্রুপার ইউনিট, রয়্যাল নেভি পুলিশ, রয়্যাল মিলিটারি পুলিশ এবং রয়্যাল এয়ারফোর্সের দেড় হাজার কর্মকর্তা মোতায়েন করা হয়েছে। একটি সামরিক হেলিকপ্টার ওয়েস্টমিনস্টারের ওপর দিয়ে গোটা এলাকা পর্যবেক্ষণ করেছে। জিসিএইচকিউ সব ধরনের টেলিযোগাযোগ পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখবে। ওয়েস্টমিনস্টারের ছাদে ইতোমধ্যে দূরবীন নিয়ে সতর্ক অবস্থান নিয়েছেন সশস্ত্র পুলিশ অফিসাররা। বিভিন্ন স্থানে বসানো সিসি ক্যামেরা, মোবাইল সিটিভি ক্যামেরাসহ অতিরিক্ত ক্যামেরা লাগানো হয়েছে বিভিন্ন স্পর্শকাতর জায়গায়। বিস্ফোরক দ্রব্য খুঁজে বের করতে ডগ স্কোয়াডের কুকুরগুলোকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
দ্বিতীয় এলিজাবেথের মা রানিমাতা এলিজাবেথ ও প্রিন্সেস ডায়ানার শেষকৃত্যানুষ্ঠানের সঙ্গেও এটি তুলনা করা যায়। তবে গোটা বিশ্ব থেকে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের আগমনের কারণে এবারের অনুষ্ঠানটি একেবারেই ব্যতিক্রমী, ফলে নিরাপত্তার আয়োজনও তুলনামূলক বেশ জটিল।
আরো পড়ুন:
ওমানে গাড়ি ভাংচুর ও চুরির অপরাধে একাধিক ব্যক্তি গ্রেফতার
ঢাকা বিমানবন্দরে প্রবাসীদের পদে পদে ভোগান্তি
বিমানবন্দরে ফ্রি টেলিফোন সুবিধা, সুফল পাবেন প্রবাসীরা
প্রবাসী বাবাকে বাঁচাতে ৭ বছরের মেয়ের আকুতি
সম্মানই যদি না পান, রেমিট্যান্স কেন পাঠাবেন প্রবাসীরা
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post