মাঝেমধ্যে আমাদের সামনে এমন কিছু অলৌকিক ঘটনা আসে, যা দেখে বিস্মিত হন অনেকেই। মহান সৃষ্টিকর্তা যে একজন আছেন, এটা শুধুমাত্র মুসলিম কিছু নাস্তিক ব্যতীত সকল ধর্মের মানুষই বিশ্বাস করেন। সৃষ্টিকর্তা মাঝেমধ্যে তার কিছু নিদর্শন প্রদর্শন করেন, যাতে অবিশ্বাসীদের মাঝে বিশ্বাস স্থাপন হয়। আমরা অনেকেই জানি টিয়া পাখি, ময়না পাখি, তোতা পাখি মানুষের কণ্ঠে কথা বলতে পারে, মানুষের নাম ধরে ডাকে। কিন্তু কখনো কি শুনেছি মোরগের কণ্ঠে মানুষের মত ডাক?
এমন ঘটনা অবিশ্বাস্য মনে হলেও সত্যি। তবে মানুষের নাম ধরে না ডেকে মোরগটি ডাকছে আমাদের মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর নাম ধরে। সম্প্রতি পাবনার ঈশ্বরদীতে একটি মোরগের কণ্ঠে আল্লাহর নাম শুনা গেছে, এতে বিস্মিত গোটা এলাকাবাসী। মোরগের কণ্ঠে এ ডাক শুনতে প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে হাজারো মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন উপজেলার দাশুড়িয়া ইউনিয়নে। মোরগটির মালিক এটিকে জবাই করতে গেলেই করুণ কণ্ঠে আল্লাহ আল্লাহ ডাক শুরু করে মোরগ। তাৎক্ষনিক মোরগ জবাই না করে ছেঁড়ে দেন।
এরপর থেকে এটিকে কিনে নিতে ভিড় করছেন অনেকেই। তবে, মালিক জানিয়েছেন মোরগ বিক্রি বা জবাই কিছুই তিনি করবেন না। উপজেলার দাশুড়িয়া ইউনিয়নের মানিককৌড় (ডিগ্রিপাড়া) এ ঘটনা ঘটেছে। মানিককৌড় গ্রামের সাইদার হোসেন মোল্লার বাড়িতে প্রায় এক মাস ধরে মোরগের এ ডাক শুনছেন এলাকাবাসী।
সাইদার মোল্লা জানান, সংসারের বাড়তি উপার্জনের জন্য মোরগ-মুরগী পালন করি। তিনটি মোরগ বড় হওয়ার পর দুইটি পাশের বাড়ি বিক্রি করি এবং একটি নিজেরা জবাই করি খাই। পাশের বাড়ি দুইটির মধ্যে একটি জবাই করে খাওয়ার পরের দিন এই মোরগ জবাই করতে গেলে আল্লাহ আল্লাহ বলে ডাকতে শুরু করে। তখন তারা জবাই না করে মোরগটি ফেরত দেয়। এরপর থেকেই মোরগ ধরলেই আল্লাহ আল্লাহ বলে ডাক শুরু করে দেয়। এজন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছি এ মোরগ বিক্রি বা জবাই করবো না। যে কয়দিন বাঁচে এভাবেই থাকবে।
এলাকার এক যুবক জানান, মোরগটি আমি জবাই করতে গিয়েছিলাম। যখন চাকু হাতে নিয়েছি তখনই আল্লাহ আল্লাহ বলে ডাকছিলো। এই ডাক শুনে আর জবাই করিনি। এরপর থেকে মোরগটির কণ্ঠে আল্লাহ আল্লাহ ডাক শুনতে পাচ্ছি। এমনকি আশপাশে ঘুরাঘুরি করার সময়ও মাঝে মধ্যেই আল্লাহ আল্লাহ বলে ডাক শুনতে পাই। এলাকাবাসী জানায়, ১৬ আগষ্ট সাইদার মোল্লার নিকট থেকে তানিয়া খাতুন দুইটি মোরগ কিনেছিলাম। এরমধ্যে একটি জবাই করেন। এই মোরগটি জবাই করার সময় আল্লাহ আল্লাহ বলে ডাক দেয়।
তিনি জানান, তখন জবাই না করে মোরগটির এ রকম অলৌকিক ডাক শুনতে আমরা তানিয়ার বাসায় ছুটে আসি। এসে দেখি মোরগ আল্লাহ আল্লাহ বলে উচ্চারণ করছে। তারপরই তানিয়া খাতুন মোরগ টি সাইদার মোল্লার কাছে হস্তান্তর করেন। এদিকে মোরগের এমন ডাক শুনতে প্রতিদিনই দুর-দুরান্ত থেকে মানুষজন বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছে।
সাইদার মোল্লার পাসের বাড়ি এক প্রতিবেশী জানান, মোরগের মুখে আল্লাহ ডাক শুনা যাচ্ছে এটি জানার পর দেখতে এসেছিলাম। মোরগের কণ্ঠে আল্লাহ ডাক শুনে আমি অনেকটা অবাক হয়েছি। জীবনের প্রথম এমন ডাক শুনতে পেলাম নিজের চোখেও দেখলাম। এমন সুস্পষ্ট আল্লাহ ডাক শুনতে অনেকেই দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা নাজমুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ঘটনাটি অনেকটা অবাক করার মতো। হরমোনের কারণে অনেক সময় এমনটা হয়। আমি এ বিষয়টি উপরস্থ বিশেষজ্ঞর সঙ্গে কথা বলেছি। এ মূহুর্তে কোন ব্যাখ্যা দিতে পারছিনা। এর আগে গত ২২ আগস্ট রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার পানিহার গ্রামের মো. মোর্ত্তজার বাড়িতে একই ধরণের ঘটনা ঘটে।
ইসলাম ধর্ম মতে মোরগকে আল্লাহ বিশেষ বৈশিষ্ট্য দান করেছেন। আল্লাহ এ প্রাণীকে দিন-রাতের সময় বিশেষত রাতের সময় জ্ঞান দান করেছেন। এ হিসেবে মোরগ আজানের জন্য মানুষকে ডাকে। দিনরাত ছোট-বড় হলেও মোরগ ঠিকই বুঝতে পারে এবং ফজরের পূর্বে ও পরে আজানের জন্য ডাকতে থাকে। খুব সুবিন্যস্ত আকারে ডাকে। ইসলামের প্রথম যুগে সাহাবা রা. সফরের সময় সাথে মোরগ নিয়ে যেতেন যাতে আজানের সময় জানতে পারেন। এজন্যই হাদীসে মোরগের আওয়াজ শুনলে তাকে গালমন্দ করতে নিষেধ করা হয়েছে।
তাছাড়া মোরগের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো, মোরগ ফেরেশতা দেখলে চিৎকার করে। এজন্য হাদীসে তার আওয়াজের কারণে কল্যাণ প্রার্থনা করতে বলেছেন। সহিহ বুখারী ও মুসলিমে বর্ণিত আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “তোমরা যখন মোরগের ডাক শুনো তখন আল্লাহর নিকট অনুগ্রহ প্রার্থনা কর। কারণ সে ফেরেশতা দেখে।”
সূত্র: ডিবিসি নিউজ
আরো পড়ুন:
ছুটিতে দেশে এসে সৌদি প্রবাসীর মৃত্যু
বেড়েছে প্রবাসী আয়, রিজার্ভ ৩৭ বিলিয়ন ডলার
হুন্ডিতে টাকা নিলে বিপদে পড়বেন প্রবাসীর স্বজন
মৃত্যুকূপ পাড়ি দিয়ে ইতালিতে পৌঁছেছে ৩৮ বাংলাদেশি
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post