সন্তানের মুখে হাঁসি ফুটাতে জীবনের শেষ সম্বল টুকু বিক্রি করে ছেলেকে বিদেশ পাঠিয়েছিলেন এক দুঃখিনী মা, অবশেষে সেই ছেলেই ঘরছাড়া করলো মাকে! এমনই হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে কক্সবাজারে।
স্নেহময়ী মায়ের হাসি, মন উজাড় করা ভালোবাসা, আদর-স্নেহে সন্তানের মনে বয়ে যায় অনাবিল আনন্দের ঝরনাধারা। সব দু:খ-কষ্ট আর বেদনা মা শব্দের মাঝে বিলীন হয়ে যায়। যুগে যুগে মাকে নিয়ে রচিত হয়েছে অনেক গল্প, গান, ছড়া, কবিতা। আজ আপনাদের শোনাবো এক হতভাগা মায়ের গল্প। যিনি সন্তানের সুন্দর ভবিষ্যতের আশায় নিজের সর্বস্ব বিক্রি করে ছেলেকে পাঠিয়েছেন বিদেশে। বর্তমানে ছেলের জীবনে আলো ফিরলেও অন্ধকার নেমে এসেছে জনম দুঃখিনী মায়ের জীবনে।
জানাগেছে, নয় বছর আগে স্বামী আবুল খায়ের মারা যাবার পর সন্তানদের নিয়ে অসহায় ও মানবেতর জীবন পার করছিলেন কক্সবাজার সদরের ঝিলংজা খরুলিয়া কোনারপাড়ার বৃদ্ধা নুর আয়েশা। কাজ করেছেন গৃহ কর্মী আর দিনমজুর হিসেবে। সংসারের সচ্ছলতা আশায় নিজের জমানো টাকা আর অলংকার বিক্রি করে ছেলে সাবেরকে পাঠিয়েছিলেন বিদেশে। এখন ছেলে সচ্ছল হয়ে খোঁজ নিচ্ছেননা বয়সের ভারে অচল ও শারীরিকভাবে অসুস্থ হওয়া সেই মায়ের।
জানাগেছে, বৃদ্ধা নুর আয়েশার স্বামী মারা যাওয়ার আগে মোহরানা বাবদ ২০ শতাংশ জমি দিয়েছিলেন তাকে। কিন্তু সেই জমি লিখে দেন প্রবাস ফেরত তার সন্তান সাবেরকে। স্বপ্ন দেখতেন ছেলে ওই জমিতে বাড়ি করে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে থাকবেন। আর তাঁদের সঙ্গে হেসেখেলে বাকি জীবনটা কাটিয়ে দেবেন বৃদ্ধা আয়েশা। অবশেষে সেই জমিতে দালান বাড়ি উঠলেও ঠায় হয়নি দুঃখিনী মায়ের! ছেলে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সুখে–শান্তিতে বসবাস করছেন সেখানে।
অনেকটা নির্বাক নুর আয়েশা অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে বলেন, জমি-জমা ছেলের নামে রেজিস্ট্রি করে দেওয়ার দু-মাস না যেতেই ছেলে ও তার বউ ভিন্ন আচরণ শুরু করে। সবকিছু মিলিয়ে মাকে যেখানে আগলে রাখার কথা ছিলো, তার পরিবর্তে মারধর করে ঘর থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন ছেলে ও তার স্ত্রী। এদিকে এক সন্তানকে সবকিছু লিখে দেওয়ায় খবর নিচ্ছেন না অন্য সন্তানরাও। ফলে, জীবনের এই শেষ সময়ে কখনো রাস্তায় আবার কখনো অন্যের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন বৃদ্ধা নুর আয়েশা।
আরো পড়ুন:
ওমানে ভূমিধ্বসে ২ শ্রমিকের মৃত্যু
বিশ্বের সবচেয়ে দামি প্রাসাদে সৌদি যুবরাজ
পাসপোর্ট পেতে প্রতি ধাপেই দীর্ঘ অপেক্ষা ও ভোগান্তি
ঝুঁকির মধ্যে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post