ভারতের ইতিহাসের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি একজন মুসলিম। তিনি পিছনে ফেলেছেন, আম্বানি কিংবা আদানিকেও। এমনকি সর্বকালের সবচেয়ে ধনীদের তালিকায় তার নাম রয়েছে সবার উপরে। মুসলিম এই ধনী ব্যক্তির নাম মীর ওসমান আলি খান। তার ধন সম্পদ এবং বিলাসিতার গল্প হার মানাবে বর্তমান বিশ্বের সেরা ধনকুবেরদেরও।
শৌখিন ধনীরা নামীদামী পেপার ওয়েট ব্যবহার করেন নিজেদের টেবিলে। তবে ভারতীয় এই ব্যক্তির টেবিলে পেপার ওয়েট হিসেবে ব্যবহার করা হয় পৃথিবীর পঞ্চম বৃহত্তম হীরা। ১৮৫ ক্যারেটের এই জ্যাকব ডায়মন্ডের বর্তমান বাজারমূল্য হাজার কোটি টাকারও বেশি। বিলাসবহুল গাড়ি পছন্দ করতেন মীর ওসমান আলী খান। তার গ্যারেজে শোভা পেত রোলস রয়েস সহ পৃথিবীর নামীদামী ব্র্যান্ডের ৫০টির বেশি গাড়ি। তার কাছে এত বেশি মণিমুক্তা ছিল যে তা দিয়ে ভরে যেত তার সুইমিংপুল।
তখনকার বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী দেশ ছিল ইংল্যান্ড। দেশটির রানী এলিজাবেথের বিয়েতে কয়েক কোটি টাকা দামের হীরার নেকলেস উপহার দিয়েছিলেন এই ধনী। রানীর ব্যক্তিগত সংগ্রহশালায় এটি প্রদর্শন করা হয় নিজাম নেকলেস নামে। ভারতীয় হয়েও ব্রিটেনদের কাছ থেকে স্যার উপাধি পেয়েছিলেন তিনি। ২০০৮ সালে ফোর্বস ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে বিশ্বের সর্বকালের সেরা ধনীদের তালিকায় পঞ্চম স্থানে রাখা হয় এই মুসলিম ধনীর নাম। সেই সময় তার মোট সম্পদের মূল্য ছিল ২৩৬ বিলিয়ন ডলার। বিখ্যাত টাইম ম্যাগাজিন ১৯৩৭ সালে তাকে চিহ্নিত করেছে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি হিসেবে।
সর্বকালের অন্যতম সেরা ধনী মীর ওসমান আলী খান ছিলেন ভারতের হায়দ্রাবাদ রাজ্যের। ১৯৯১ সালে পিতার মৃত্যুর পরে এই দায়িত্ব পেয়েছিলেন তিনি। তার আসন ছিল ব্রিটিশ ভারতের অন্যতম বড় রাজ্য, যার আয়তন প্রায় ৮৭ হাজার বর্গমাইল। হীরার খনি ছিল নিজাম পরিবারের সম্পদের সবথেকে বড় উৎস। বিশ্বের সেরা ধনী হলেও সাধারণ জীবন যাপন করতেন এই হায়দ্রাবাদের নিজাম। অপরদিকে দেশের উন্নয়ন এবং দানশীলতার জন্য বিখ্যাত ছিলেন মীর ওসমান আলী খান। ৩৭ বছরের শাসনামলে হায়দ্রাবাদের চালু হয়েছিল বিদ্যুৎ, রেলওয়ে এবং আধুনিক সড়ক ব্যবস্থা। এছাড়া রাজ্যের বিমানবন্দর এবং এর উন্নয়নও করেছিলেন তিনি।
অসামান্য অবদানের জন্য আধুনিক হায়দ্রাবাদের স্থপতি হিসেবে খ্যাতি পান এই মুসলিম শাসক। ওসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, ওসমানিয়া জেনারেল হাসপাতালসহ অসংখ্য সেবামূলক প্রতিষ্ঠান তিনি তৈরি করেছিলেন। ১৯৫১ সালে নিজাম অর্থোপেডিক হাসপাতালের নির্মাণ শুরু করেছিলেন, যা বর্তমানে নিজামস ইন্সটিটিউট অব মেডিকেল সাইন্স নামে পরিচিত।
এছাড়া মাত্র এক টাকা ভাড়ায় ভারত সরকারকে হিজাড়া দিয়েছিলেন নিজের ব্যক্তিগত ১৪ হাজার একর জমি। ভারতের ইতিহাসের সেরা এই ধনী ১৯৬৭ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন। বিখ্যাত জুদি মসজিদে সমাহিত করা হয় তাকে। মীর ওসমান আলী খানের মৃত্যু উপলক্ষে রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছিলো ভারত সরকার। অঢেল ধনসম্পত্তি ছাড়াও ১৪৯ জন সন্তানের পিতা ছিলেন তিনি।
আরো পড়ুন:
৩০ যাত্রী নিয়ে উল্টে গেল বিমান
বিমানবন্দরে প্রবাসীদের লাগেজ থেকে মালামাল গায়েব
বিয়ের ৮ বছর পর একসঙ্গে ৪ সন্তানের জন্ম দিলেন প্রবাসীর স্ত্রী
প্রবাসে ভিন্নধর্মী উদ্যোগ, পর্তুগালে শিশুদের জন্য মক্তব উদ্বোধন
লাইট অফ হচ্ছিল বারবার, বিমানের ভেতরে সবার আধমরা অবস্থা!
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post