ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে এসে আজ প্রবাসীরা বড়ই অসহায়! পৃথিবীতে করোনা আঘাত হানার পর থেকে বড় কঠিন ও অসহায় জীবন-জীবিকা ধারণ করছে বিভিন্ন দেশে থাকা প্রবাসীরা। যা কেউ কখনো কল্পনাও করেনি করোনার কারণে এমন পরিস্থিতির শিকার হবে।
যদি প্রবাসীরা জানতো এমন অবস্থা হবে তবে তারা আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রাখতো! সরকার কিংবা অন্যকোন পক্ষের অনুদান বা ত্রাণের আশায় বসে থাকতে হতো না! গত রমজানে এক ওমান প্রবাসী ভাই আমাকে অনেক অনুরোধ করেছে তাকে একটু খাদ্য সহযোগিতা করার জন্যে! কিন্তু আমার কিছুই করার ছিল না। কারণ আমি নিজেও অসহায়, কেননা গত তিন মাস ধরে আমি নিজেও কর্মহীন।
এক কথায় বলা যায় প্রবাসীরা কতটা অসহায় ও কষ্টে আছে তা নিজের চোখে দেখা ছাড়া কেউ কখনোই উপলব্ধি করতে পারবে না। বর্তমান করোনা পরিস্থিতির কারণে অনেক কোম্পানি কাজের অভাবে শ্রমিক ছাটাই করা শুরু করেছে ইতিমধ্যে! সুতরাং ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হতে পারে!!!
করোনা পরবর্তী সময়ে হয়তো কাজ না থাকার কারণে এই শ্রমিক ছাটাই আরো বেড়ে যেতে পারে! ফলে অনেকেই কর্মহীন হয়ে দেশে চলে যেতে পারে! যা আমাদের রেমিট্যান্সে অনেক প্রভাব পড়বে! দেশে বেকারত্বের সংখ্যাও বাড়বে! দীর্ঘদিন যাবত প্রবাসে থাকার পর কর্মহীন হয়ে শূন্যহাতে একজন প্রবাসী যখন দেশে যাবে, তখন সমাজ ও পরিবার পরিজনদের কাছে মাথা নিচু করে থাকতে হবে। যা কোনো প্রবাসীর কাম্য নয়!!!
আমার ব্যক্তিগত মতামত, যে সব প্রবাসী কর্মহীন ও বাধ্য হয়ে দেশে ফেরত যাবে তাদের কর্মসংস্থান করতে সরকারের কাছে বিশেষ ভাবে অনুরোধ করছি! এ সব প্রবাসী কেউ চায় না দেশের কিংবা পরিবারের বোঝা হতে! তারা চায় নিজের দক্ষতা ও যোগ্যতাকে কাজে লাগাতে এবং সরকার চাইলে তাদের এই দক্ষতা যোগ্যতা ও মনোবলকে কাজে লাগিয়ে তাদের কর্মস্থান সৃষ্টি করতে পারে যা দেশের অর্থনীতিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
কিন্তু তাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে মূলধন না থাকার কারণে কোন প্রকার ব্যবসা বা কর্মস্থান করতে পারবে না তাই তাদের দরকার সরকারী প্রণোদনা ও সহযোগিতা। সুতরাং আসছে আগামী ২০২০-২০২১ সালের অর্থ বছরের নতুন বাজেটে প্রবাস ফেরত কর্মহীনদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ উল্লেখযোগ্য বাজেট নির্ধারণ করা জরুরী। অতএব আশা করছি এই বাজেটে মাননীয় অর্থমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরে যাওয়া প্রবাসীদের জন্যে বড় অংকের প্রণোদনা প্যাকেজ অথবা ঋণ বরাদ্দের ব্যবস্থা করবেন।
আরও পড়ুনঃ দেশে ফিরতে ইচ্ছুক প্রবাসীদের তালিকা তৈরির নির্দেশ
যাতে করে তারা সরকারী প্রণোদনা বা ঋণ পেয়ে নিজের কর্মস্থান নিজেই করতে পারে। এবং প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকে ঋণ আরো সহজ করে দিতে হবে যাতে করে বিদেশ ফেরত প্রবাসীরা সহজে ঋণ পেতে পারে। গত বাজেট গুলোতে প্রবাসীদের জন্য উল্লেখ যোগ্য কোন বাজেট ছিলো না! আশা করছি এই বাজেটে প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী দেশে ফিরে যাওয়া প্রবাসীদের দিকে সু দৃষ্টি দেবেন। তাহলেই উপকৃত হবে প্রবাস ফেরত হাজারও প্রবাসী।
লেখকঃ মোহাম্মাদ হান্নান, ওমান প্রবাসী।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post