তুরস্কের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের দার্দানেলেস প্রণালিতে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ঝুলন্ত সেতু উদ্বোধন করা হয়েছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান সেতুটির উদ্বোধন করেন। গত (১৮ মার্চ) শুক্রবার এরদোয়ানের উদ্বোধন বিশ্বের সর্ববৃহৎ ঝুলন্ত সেতুর মধ্য দিয়ে কার্যত সংযুক্ত হলো ইউরোপ ও এশিয়া।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, দুই দশক ধরে তুরস্কের ক্ষমতায় থাকা এরদোয়ান বড় বড় অবকাঠামো নির্মাণের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। দেশটিতে সর্বশেষ বড় যেসব অবকাঠামো নির্মিত হয়েছে, এর মধ্যে এই ঝুলন্ত সেতু অন্যতম। আর ইউরোপ-এশিয়াকে যুক্ত করা ‘চানাক্কালে’ নামের বিশ্বের সর্ববৃহৎ ঝুলন্ত সেতুটিও তারই অংশ।
তুরস্কের ইউরোপীয় অংশের সঙ্গে এশিয়ার উপকূলের সংযোগ স্থাপনে ১৯১৫ সালে নির্মিত চানাক্কালে নামে এই সেতুর পুনর্নির্মাণে ২৮০ কোটি ডলার খরচ হয়েছে। তুরস্ক ও দক্ষিণ কোরিয়ার কোম্পানি যৌথভাবে সেতুটি নির্মাণকাজ করেছে। রয়টার্স জানায়, চানাক্কালে তুরস্কের ইউরোপীয় এবং এশীয় উপকূলকে সংযুক্ত করা চতুর্থ সেতু। এ ধরনের আরও ৩টি সেতু রয়েছে ইস্তাম্বুলে। ২০১৭ সালের মার্চে সেতুটি পুনর্নির্মাণের কাজ শুরু হয়।
২০০২ সালে এরদোয়ানের ‘একে পার্টি’ প্রথমবার তুরস্কের ক্ষমতায় আসার পর থেকে এরদোয়ানের সাফল্যের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে এ ধরনের বিভিন্ন মেগা প্রকল্প। যার মধ্যে ইস্তাম্বুলের নতুন বিমানবন্দর, ইস্তাম্বুলের বসফরাস প্রণালির নিচ দিয়ে যাওয়া রেল ও সুড়ঙ্গ সড়ক এবং এর উপরে তৈরি একটি সেতু উল্লেখযোগ্য।
১৯১৫ সালে দার্দানেলিস প্রণালিতে ফ্রান্স ও ব্রিটিশ বাহিনীর বিরুদ্ধে অটোমান সাম্রাজ্যের নৌসেনার বিজয়ের বার্ষিকী ছিল গত (১৮ মার্চ) শুক্রবার। এদিন সেতুটি উদ্বোধন করে এরদোয়ান বলেন, ‘এই সেতুর মাধ্যমে বছরের পর বছর তুরস্ক লাভবান হবে এবং এটি দেশকে আরও এগিয়ে নেবে।’ এতে আরও, বিনিয়োগ, কর্মী বাহিনী, রপ্তানিতে এটি দেশকে আরও এগিয়ে নেবে।
তুরস্কের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২০২৩ সালে। নির্বাচনের সময় যত ঘনিয়ে আসছে, ততই প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান ও তাঁর দল একে পার্টির জনপ্রিয়তা কমছে বলে বিভিন্ন জনমত জরিপের দেখা যাচ্ছে। ফলে ক্ষমতা ধরে রাখতে চানাক্কালে সেতুর মতো নানা প্রকল্প বাস্তবায়ন করে জনপ্রিয়তা বাড়ানোর চেষ্টা করছেন এরদোগান।
এদিকে সেতুটি তৈরির জন্য সম্ভাব্য ব্যয় নিয়ে আগে থেকেই অনেক সমালোচনা করে আসছে তুরস্কের প্রধান বিরোধী দল সিএইচপি। গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন বলা হয়েছে, চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ওই সেতুতে কার্যক্রম পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান প্রতিবছর ৩৮ কোটি ইউরো পাবে। আর চুক্তির পূর্ণ মেয়াদে মোট ৬০০ কোটি ইউরো পাবে তারা।
তুরস্কে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ঝুলন্ত সেতু উদ্বোধনসেতু উদ্বোধনের দিনই তুর্কি প্রেসিডেন্ট জানান, ৪ দশমিক ৬ কিলোমিটারের এই ঝুলন্ত সেতু ব্যবহার করা যাত্রীবাহী প্রতিটি বাহনকে প্রতিবার দিতে হবে সাড়ে ১৩ ডলার। টানা পাঁচ বছর ধরে পাঁচ হাজারের বেশি শ্রমিক এই সেতু নির্মাণে কাজ করেছেন।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post