বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় প্রবাসী বান্ধব দেশের মধ্যে অন্যতম একটি দেশ ওমান। প্রবাসীদের নানান সুযোগ সুবিধা এবং মর্যাদা মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশের তুলনায় একটু বেশিই দিয়ে থাকেন দেশটির সরকার ও জনগণ। ইতিমধ্যেই প্রবাসীদের কথা মাথায় রেখে এবার প্রবাসীদের ভিসা ফি ৮৫ শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওমান সরকার। নতুন এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন দেশটির মহামান্য সুলতান হাইথাম বিন তারিক। রবিবার (১৩-মার্চ) ওমান শ্রম মন্ত্রণালয় প্রবাসীদের ভিসা ফি ৮৫ শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, “সুলতান হাইথাম বিন তারিকের সরকারী পরিষেবা নির্দেশিকার সাথে সামঞ্জস্য রেখে প্রবাসী কর্মী নিয়োগের জন্য লাইসেন্স প্রদান ও নবায়ন ফি ৮৫ শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী পহেলা জুন থেকে নতুন সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়ন করা হবে। নতুন এই সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে রয়েছে:
আরো পড়ুনঃ ওমানের ৭৪ টি পেশার ভিসা ফি ২০০১ রিয়াল নির্ধারণ
১. দেশটির সকল প্রতিষ্ঠানে প্রবাসী কর্মীদের ভিসা ফি ৮৫ শতাংশ কমানো হবে।
২. বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে প্রবাসী জনবল নিয়োগের লাইসেন্স প্রদান ও নবায়নের ফি কমানো হয়েছে। যার মধ্যে:
ক. প্রথম শ্রেণী কর্মীদের ক্ষেত্রে ভিসা ফি দুই বছরের জন্য ২০০১ রিয়াল থেকে কমিয়ে ৩০১ ওমানি রিয়াল করা হয়েছে।
খ. দ্বিতীয় শ্রেণী কর্মী, অর্থাৎ পূর্বে যাদের ভিসা ফি ছিলো ৬০১ থেকে ১০০১ ওমানি রিয়াল, তাদের ভিসা ফি কমিয়ে যথাক্রমে ১৭৬ রিয়াল থেকে ২৫১ রিয়াল রিয়াল করা হয়েছে।
গ. তৃতীয় শ্রেণী কর্মী, অর্থাৎ পূর্বে যাদের ভিসা ফি ছিলো ৩০১ রিয়াল থেকে ৩৬১ রিয়ালের মধ্যে, তাদের জন্য নতুন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে যথাক্রমে ১৪১ রিয়াল থেকে ২০১ রিয়াল।
ওমান সরকারের এমন আইনকে সাধুবাদ জানিয়েছে দেশটিতে বসবাসরত প্রবাসীরা। তারা জানিয়েছেন নতুন আইনের ফলে উপকৃত হবেন বাংলাদেশী প্রবাসীরাও।
তবে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সকল প্রতিষ্ঠানকে প্রবাসী কর্মী নিয়োগে অবশ্যই ওমানিকরণ নীতি মেনে চলতে হবে। তা না হলে সেই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে আল ওস্তা প্রদেশের দুকুম এলাকার ওমানি ব্যবসায়ী আহমেদ আল জুনাইবি বলেন, “আমরা প্রবাসী কর্মীদের জন্য ফি কমানোর বিষয়ে নতুন নির্দেশনাকে স্বাগত জানাই। এটি ব্যবসায়ীদের বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) মালিকদের অনেকদিনের দাবি ছিল। যাতে ব্যবসায়ীরা প্রবাসী শ্রমিকদের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করা যায়। আমরা আশা করি নতুন এই সিদ্ধান্তে ওমানের সকল প্রতিষ্ঠান উপকৃত হবে।”
উত্তর আল বাতিনাহ প্রদেশের আরেকজন ব্যবসায়ী বলেন, “ফি কমানোর সিদ্ধান্ত সঠিক সময়ে এসেছে; আমরা দীর্ঘকাল ধরে এটির জন্য অপেক্ষা করছিলাম। বিশেষ করে ওমানে করোনা পরবর্তী অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সামলে উঠতে এটি একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। ফলে করোনায় দেশটির যে সকল কোম্পানি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, তারা আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। দেশের অনেক প্রতিষ্ঠান ও কোম্পানির আর্থিক অবস্থার উন্নতি হবে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post