উদ্বোধনের সাড়ে ৬ মাস অতিবাহিত হলেও এখনো আলোর মুখ দেখেনি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ই-গেট। গত বছরের ৩০ ই-গেট উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। উদ্বোধনের প্রায় ছয় মাসেও বিমানবন্দরে ই-পাসপোর্টের জন্য চালু করা এই ই-গেট এখনও ব্যবহার হচ্ছে না। ফলে ই-পাসপোর্টধারী যাত্রীরা কোনও সুফল পাচ্ছেন না এমনই তথ্য প্রকাশ করেছে বাংলা ট্রিবিউন।
শুক্রবার দেশের এই গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে জানাগেছে, দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশেরই প্রথম ই-পাসপোর্টের জন্য ই-গেট চালু করার কথা। কিন্তু এখন পর্যন্ত এটি ব্যবহার উপযোগী করতে সক্ষম হয়নি ইমিগ্রেশন এবং পাসপোর্ট অধিদফতর (ডিআইপি)। জানা গেছে, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগমনী ও বহির্গমন ইমিগ্রেশনে ই-গেট স্থাপন করেছে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতর (ডিআইপি)। তবে ই-গেট থাকলেও ই-পাসপোর্টধারীদের ইমিগ্রেশন হচ্ছে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে।
দেশের বন্দরগুলোতে ইমিগ্রেশনের দায়িত্ব পালন করছে পুলিশের বিশেষ শাখা-এসবি। ই-গেটের সঙ্গে পাসপোর্ট সার্ভারের সংযোগ না থাকায় ইমিগ্রেশন পুলিশ ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে আগের মতো ইমিগ্রেশন করছে; যদিও ই-গেট চালু থাকলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পাসপোর্টধারীকে শনাক্ত করা যেত।
ই-পাসপোর্টে মাইক্রোপ্রসেসর চিপ এবং অ্যান্টেনা বসানো রয়েছে। একজন ব্যক্তির যাবতীয় তথ্য পাসপোর্টের মুদ্রিত ও চিপে সংরক্ষিত থাকে। ই-গেটে পাসপোর্ট স্ক্যান করার পর গেটের সঙ্গে সংযুক্ত ক্যামেরা যাত্রীকে শনাক্ত করবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের বিশেষ শাখার উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক (ইমিগ্রেশন) মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘কারিগরি কিছু জটিলতা এখনও দূর হয়নি, এ কারণে ই-গেট ব্যবহার করে ইমিগ্রেশন করা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে পাসপোর্ট অধিদফতরকে জানানো হয়েছে। তারা সমাধান করলেই ই-গেট ব্যবহার সম্ভব হবে।’
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২০ সালের ২২ জানুয়ারি ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা উদ্বোধন করেন। প্রতিদিন ২০ হাজার ই-পাসপোর্ট প্রিন্ট করার সক্ষমতা থাকলেও করোনার কারণে প্রায় ১০ হাজার পাসপোর্ট প্রিন্ট হচ্ছে। করোনা মহামারির ও সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য জটিলতার কারণে সে সময়েই ই-গেট স্থাপন করা হয়, কিন্তু এখনও চালু করা সম্ভব হয়নি।
জানা গেছে, ২০১৬ সালে ২৪ এপ্রিল পাসপোর্ট সেবা সপ্তাহ উদ্বোধনের সময় ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম চালুর বিষয়ে কথা হয়। এক বছর পর ২০১৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি জি-টু-জি প্রক্রিয়ায় জার্মানির ভেরিডোস জিএমবিএইচ সঙ্গে একটি সমঝোতা চুক্তিও সই হয়। এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগের একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি একই বছর আগস্টে ৬টি দেশের ৫টি কোম্পানি পরিদর্শন করে।
পরিদর্শন শেষে ১০ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। নানা আনুষ্ঠানিকতা শেষে ২০১৮ সালের ২১ জুন ই-পাসপোর্ট প্রবর্তন ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার প্রকল্প অনুমোদন পায়। সেই বছরই ১৯ জুলাই জার্মানির ভেরিডোস জিএমবিএইচ-এর সঙ্গে প্রকল্প বাস্তবায়নের চুক্তি হয়। এই সংস্থাটির মাধ্যমেই ই-পাসপোর্ট ও ই-গেট স্থাপন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হয় ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতর (ডিআইপি) এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে। তবে তাদের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post