ওমান সফর শেষে কাতার সফরে গেলেন ইরানের পরাষ্ট্রমন্ত্রী আমির আব্দুল্লাহিয়ান। বর্তমাতে সেখানে তিনি কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানিসহ দেশটির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাক্ষাৎ করেছেন। আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, কাতারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিয়েনায় অনুষ্ঠিত হওয়া পরামাণু চুক্তি-২০১৫ এর পুনর্জীবনীর অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অফ অ্যাকশন (জেসিপিওএ) নামে একটি চুক্তি করেন। কিন্তু সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নেন। বর্তমান বাইডেন এসে ইরানকে এই চুক্তিতে ফেরাতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।
পশ্চিমা দেশগুলোর অভিযোগ, ইরান পরমাণু অস্ত্র বানানোর পথে অগ্রসর হচ্ছে। কিন্তু ইরান বলছে, তারা উন্নয়নমূলক কাজে পরমাণু ব্যবহার করতে চান। অস্ত্র তৈরির কোনো অভিপ্রায় তাদের নেই। ইরানকে ফের পরমাণু চুক্তি-২০১৫ তে ফেরাতে চীন, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় ইরানের সঙ্গে আটদফা বৈঠক করেছে। সংলাপে সম্পৃক্ত উভয়পক্ষ বলছে, আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু চূড়ান্ত চুক্তি অর্জনে আরও কাজ করতে হবে।
খবর অনুসারে, কাতারের আমিরের সঙ্গে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির আব্দুল্লাহিয়ান মঙ্গলবার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতির উপায় নিয়ে আলোচনা করেন। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ইরান ‘দ্বিপাক্ষিক বা বহুপাক্ষিক ফর্ম্যাটে’ অঞ্চলজুড়ে সম্পর্ক জোরদার করতে প্রস্তুত।
এর আগে আমির আব্দুল্লাহিয়ান সোমবার ওমানের মাস্কাটে ছিলেন। সেখানেও তিনি দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক ইস্যুতে সুলতানের দীর্ঘকালীন ডেপুটি ফাহাদ বিন মাহমুদ আল-সাইদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাতে আমিরআব্দুল্লাহিয়ান বলেন, আঞ্চলিক প্রতিবেশীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির পররাষ্ট্রনীতিতে ‘ওমান প্রধান অগ্রাধিকার’। মাস্কাটের সঙ্গে ইরান রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক জোরদার করতে চায়।
বৈঠকে তারা ইয়েমেন নিয়েও আলোচনা করেছেন। ইয়েমেনে বিগত সাত বছর যাবত গৃহযুদ্ধ চলছে এবং ইরান ও সৌদি আরব বিরোধী পক্ষকে সমর্থন করছে। সম্প্রতি ইয়েমেনে অসুস্থ হয়েপড়া ইরানের শীর্ষদূতকে ওমান স্থানান্তরের সুবিধা দেয়। হাসান ইরলু নামে এই রাষ্ট্রদূত পরের দিন তেহরানে মারা যান। ঘটনার জন্য ইরান স্থানান্তরে বিলম্বের জন্য সৌদি আরবকে দায়ী করে।
ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়্যিদ বদর আল-বুসাইদির সঙ্গে সাক্ষাতের পাশাপাশি, আমিরআব্দুল্লাহিয়ান মাসকাতে ইয়েমেনি হুথিদের শীর্ষ আলোচক মোহাম্মদ আবদুলসালামের সঙ্গেও বৈঠক করেন। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাকে বলেন, ইরান ইয়েমেন যুদ্ধের অবসান চায় এবং বিশ্বাস করে যে, শুধুমাত্র বিভিন্ন স্থানীয় উপদলের মধ্যে আলোচনার ফলে একটি স্থিতিশীল রাজনৈতিক ভবিষ্যত হতে পারে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post